চরম আর্থিক সঙ্কটে ভারতীয় ফুটবল (Indian Football)। পরের মরসুমে আইএসএল-এর (ISL) পাশাপাশি বাকি টুর্নামেন্টগুলো কী ভাবে হবে। এর উত্তর খুঁজছেন অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশনের (ALL India Football Federation) কর্তারা। অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মূল কারণ, বাণিজ্যিক পার্টনার এফএসডিএলের (FSDL) সঙ্গে চুক্তি নবীকরণ পিছিয়ে যাওয়া।
৭ এপ্রিল এআইএফএফের তরফে ৮ সদস্যের টাস্ক ফোর্স গড়া হয়েছিল, দ্রুত এফএসডিএলের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে আলোচনা করার কথা থাকলেও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ এই টাস্ক ফোর্স এখন গুরুত্বহীন। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, তাঁদের রায় দানের পরেই এআইএফএফকে নতুন কমিটি গঠন করতে হবে। আর সেই কমিটিই পারবে এফএসডিএলের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে। সুপ্রিম কোর্ট নতুন সংবিধান নিয়ে রায় দেবে ১৪ জুলাইয়ের পরে। তার পরে নয়া সংবিধান মেনে নির্বাচন করতে হলে খুব কমপক্ষে তিন মাস লাগবে। অর্থাৎ অক্টোবরের আগে নতুন কমিটি আসা সম্ভব নয়। অথচ ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ১৭ সেপ্টেম্বর আইএসএল শুরু হওয়ার কথা। নতুন চুক্তি না হলে এফএসডিএল কোন শর্তে আইএসএল চালু করবে।
এই জায়গাতেই এআইএফএফ নিজের পায়ে কুড়ল মেরেছে বলে মনে করছে ফেডারেশনেরই একটা মহল। তাদের দাবি, সুপ্রিম কোর্টে এআইএফএফের বক্তব্য তুলে ধরা আইনজীবী শুনানিতে বিচারপতিদের বলেননি যে, ফেডারেশনকে বাণিজ্যিক স্বত্ব বিক্রির জন্য টেন্ডার ফ্লোট করার অনুমতি দেওয়া হোক। কিংবা এফএসডিএল সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হোক। এর বদলে প্রতি শুনানিতে ১১ লক্ষ টাকা পারিশ্রমিক নেওয়া আইনজীবী বিচারকদের কাছে আর্জি চালিয়ে গিয়েছেন, কল্যাণ চৌবের কমিটির চার বছর মেয়াদ পূর্ণ করতে দেওয়ার জন্য। আইনি বিশেষজ্ঞদের মতে, এআইএফএফের কর্তারা যদি তাদের গদি বাঁচানোর চেষ্টা না করে আর্থিক সঙ্কটের ব্যাপারটা বিচারকদের বোঝাতে পারতেন, তাহলে মাস্টার রাইটস এগ্রিমেন্ট নিয়ে এ ভাবে জট তৈরি হত না।
এফএসডিএলের সঙ্গে এআইএফএফের ১৫ বছরের চুক্তি শেষ চলতি বছরের ডিসেম্বরে। এত বছর ধরে বাণিজ্যিক স্বত্বের জন্য এফএসডিএস বছরে ৫০ কোটি টাকা করে দিয়েছে এআইএফএফকে। এই টাকা ফেডারেশন বছরে পায় চারটি ইনস্টলমেন্টে। এই টাকাতেই ফেডারেশন কর্তারা সারা বছর ধরে তাদের ১৮ টুর্নামেন্টের প্রায় ২১০০ ম্যাচ করেন। পাশাপাশি ফেডারেশন কর্মীদের বেতন সহ যাবতীয় কাজকর্ম চলে।
এখন যা পরিস্থিতি তাতে যদি আইএসএল সঠিক সময়ে শুরু না হয়, তাহলে চুক্তি রিনিউয়ে আগ্রহ দেখাবে না এফএসডিএল। ফেডারেশন টেন্ডার ফ্লোটও করতে পারবে না নতুন বাণিজ্যিক পার্টনার নেওয়ার জন্য। অক্টোবর-নভেম্বরে নতুন কমিটি এলেও প্রবল চাপে পড়বে এফএসডিএদের টাকা বন্ধ হয়ে গেলে। ফেডারেশন কর্তারা এই মুহূর্তে চাইছেন, এফএসডিএলের সঙ্গে বর্তমান চুক্তিই চার মাস বাড়িয়ে নিতে। যাতে ২০২৬ সালের এপ্রিলের মধ্যে ২০২৫-২৬ মরসুমের আইএসএল শেষ করা যায়। কিন্তু এই চুক্তি বৃদ্ধির মৌখিক প্রস্তাবে কোনও আগ্রহ দেখায়নি রিলায়েন্স। তার থেকেও বড় কথা, এই চুক্তি বৃদ্ধিও আদৌ এই কমিটি করতে পারে কিনা, তার কোনও সুস্পষ্ট ইঙ্গিত সুপ্রিম কোর্ট দেয়নি। ফলে চ্যাম সম্বটে ভারতীয় ফুটবল।