সচিন-সেহওয়াগের দমদার পারফরম্যান্স। গৌতম গম্ভীরের সাহসী প্রদর্শন। তরুণ কোহলির সঙ্গত। মিডল অর্ডারের প্রাণ রায়না এবং যুবরাজ। ধোনির ফিনিশিং এবং জ়াহির-নেহরা-মুনাফের ত্রিফলা আক্রমণের দৌলতে আজকের দিনেই ১০ বছর আগে বিশ্বকাপ জয় করেছিল ভারত। ২০১১ সালের ২ এপ্রিল মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে দীপাবলি উৎসব পালন করা হয়। এই উৎসবে গা ভাসিয়ে দেয় গোটা দেশ। কারণ ২৮ বছর পর ভারত বিশ্বকাপ জিতেছিল। আজ সেই জয়ের ১০ বছর পূরণ হল।
অমর হয়ে গেছে ধোনির সেই ছক্কা
ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অলরাউন্ডার যুবরাজ সিংয়ের চোখের সামনে আজও মহেন্দ্র সিং ধোনির সেই জয়সূচক ছক্কাটা যেন জ্বলজ্বল করছে। এই ছক্কা হাঁকিয়েই ২০১১ সালে শ্রীলঙ্কা বিরুদ্ধে বিশ্বকাপ ফাইনাল জয় করেছিল ভারতীয় ক্রিকেট দল। যুবির কথায়, এই কাজটা আমরা খুব ভালোভাবে সারতে পেরেছি। ম্যাচের ৪৯ ওভারে নুয়ান কুলশেখরার বলে ধোনির সেই আইকনিক ওভার বাউন্ডারিই ভারতের জয়ের রাস্তাটা মসৃণ করে দিয়েছিল। আজও সেই স্মৃতি প্রত্যেক ভারতবাসীর স্মৃতির মণিকোঠায় অক্ষত থাকবে।
ফাইনাল ম্যাচে যুবরাজের আগে ব্যাট করতে নেমেছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। কারণ সেইসময় মুথাইয়া মুরলিধরন বল করছিলেন। মাহির এই সিদ্ধান্তটা ভারতীয় ক্রিকেট দলের যথেষ্ট কাজে লেগেছিল। অন্যদিকে গৌতম গম্ভীর তখন জয়ের ভিতটা অনেকটাই মজবুত করে ফেলেছিলেন। তারপর ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মাঠে নেমে বাকী কাজটুকু করে দেন। এই ম্যাচে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন যুবরাজ সিং। তিনি ২৪ বলে ২১ রান করেন। সবথেকে বড় কথা ধোনির সঙ্গে ৫৪ রানের অপরাজিত একটা পার্টনারশিপ গড়ে তোলেন এবং ভারতকে জয়ের দিকে নিয়ে যান।
জয়ের জন্যই নির্বাচন করা হয়েছিল
গৌতম গম্ভীর মনে করেন, এই টুর্নামেন্টে ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রত্যেক খেলোয়াড়ই নিজেদের সেরা পারফরম্যান্সটা উজাড় করে দিয়েছিল। প্রত্যেকেই তাঁদের পেশাদার দায়িত্ব পালন করেছেন। এই প্রসঙ্গে আপনাদের জানিয়ে রাখি, ২০০৭ সালের টি-২০ ক্রিকেট বিশ্বকাপেও ভারতের হয়ে সবথেকে বেশি রান করেছিলেন গম্ভীর। তিনি বললেন, "২০১১ সালে যখন আমাদের নির্বাচন করা হয়েছিল, তখন শুধুমাত্র টুর্নামেন্ট খেলার জন্য নির্বাচন করা হয়নি। আমরা প্রত্যেকে জয়ের জন্য মাঠে নেমেছিলাম। তবে এটা নিয়ে আর কোনও আবেগ কাজ করে না। আমরা কোনও অসাধারণ কাজ করিনি। হ্যাঁ, আমরা দেশকে গৌরবান্বিত করেছিলাম ঠিকই, সমর্থকেরাও যথেষ্ঠ খুশি ছিল। তবে এখন পরের বিশ্বকাপ নিয়ে ভাবনা চিন্তা করার সময় এসেছে।"
গত বিশ্বকাপ জিতলে ভারত সুপার পাওয়ার হত
গম্ভীর মনে করেন, "যদি আমরা ২০১৫ কিংবা ২০১৯ সালের বিশ্বকাপ জিততে পারতাম, তাহলে ক্রিকেট বিশ্বে আমরা সুপার পাওয়ার হতে পারতাম। গত বিশ্বকাপ জয়ের পর ১০ বছর কেটে গেছে। আমরা আর কোনও বিশ্বকাপ জিততে পারিনি। সেকারণে অতীতের সাফল্য নিয়ে বেশি আবেগে ভেসে লাভ নেই।" ভারতীয় ক্রিকেট দলের এই প্রাক্তন ওপেনার আরও যোগ করেন, "আমি তো এটাই বুঝতে পারি না যে লোকজন পিছন ফিরে ১৯৮৩ কিংবা ২০১১ সালের বিশ্বকাপের সাফল্য কেন তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করে। হ্যাঁ, এই ব্যাপারে কথা বলতে ভালো লাগে, এইটুকুই ঠিক আছে। তবে পিছনে ফিরে তাকিয়ে আনন্দ করার চেয়ে আগামী বিশ্বকাপ কীভাবে জিততে পারব, সেইদিকে নজর রাখাই ভালো।"