ভারতীয় দল শনিবারের জয়ের রেশ কাটিয়ে হিংকং ম্যাচ নিয়ে ভারতে ব্যস্ত। কোচ ইগর স্টিম্যাচ বলছেন,“কাজ এখনও শেষ হয়নি।” রবিবার ছিল রিকভারি সেশন, সুইমিং পুলে শরীর চর্চা করলেন আফগানিস্তান ম্যাচের প্রথম একাদশে খেলা ফুটবলাররা। বাকিদের নিয়ে অনুশীলন সারলেন কোচ। সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে এসে ইগর স্টিম্যাচ জানালেন, কাকে ছেড়ে কাকে বাদ দেবেন তা নিয়েই চিন্তায় তিনি। ভারতীয় দলের কোচ বলেন, '' আমি জানি না কী করে প্রথম একাদশ বাছব। কাকে দলে রাখব আর কাকে বাদ দেব। এটা অবশ্যই দলের জন্য খুবই স্বাস্থ্যকর একটা প্রতিযোগিতা।''
আফগানিস্তান ম্যাচের মতোই শুরু থেকেই গোল তুলে নেওয়া লক্ষ্য থাকবে ইগর স্টিম্যাচের। তিনি বলেন, ''শুরু থেকেই গোলের জন্য ঝাঁপাতে হবে। ার আগের ম্যাচে যা করেছি সেটাই আবারও করে দেখাতে হবে।'' কোচের সুরেই সুনীল ছেত্রী বলেন, ''ঠিক যে জায়গায় আমরা গত ম্যাচ শেষ করেছিলাম সেই জায়গা থেকেই মঙ্গলবারের ম্যাচ শুরু করতে চাই।''
মঙ্গলবারের ম্যাচ জিততে পারলেই এএফসি এশিয়ান কাপের ছাড়পত্র পেয়ে যাবে ভারতীয় দল। সুনীল বলেন, ''২০১৯ সালে শেষবার এশিয়া কাপে খেলেছিলাম আমরা। এশিয়ার সেরা ফুটবলারদের বিরুদ্ধে খেলা সত্যি দারুণ ব্যাপার।''
ভারত এবং হংকং দুদলই দুটো করে ম্যাচ জিতেছে। ফলে দুজনের ঝুলিতে ছয় পয়েন্ট। গোল পার্থক্যের দিক থেকে হংকং যেখানে প্লাস চার সেখানে ভারত প্লাস থ্রি।
“এশিয়ান কাপে যোগ্যতা অর্জন বড় পুরস্কার। আমরা শেষ দুটো ম্যাচে দারুন খেলেছি। আমাদের ইতিবাচক থেকে টুর্নামেন্ট শেষ করতে হবে,” কোচের পাশে বলছেন অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী। একই সঙ্গে তিনি যোগ করেছেন,“টুর্নামেন্টের শুরুতেই কোচ আমাদের বলেছিলেন যে টুর্নামেন্ট জয়ের জন্য মাঠে নামব আমরা। হংকংয়ের বিরুদ্ধে জিতলেই ২০২৩ সালের এশিয়ান কাপে অংশ নেওয়ার ছাড়পত্র মিলবে। শেষবার ২০১৯ সালে এই কৃতিত্ব দেখিয়েছিল ভারত। প্রতিপক্ষ হংকংকে প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় ফেভারিট হিসেবে দেখছেন স্টিমাচ। তাই দল নিয়ে আত্মবিশ্বাসী হলেও সমীহর সুর তাঁর গলায়।
আর্ন্তজাতিক ফুটবলে ১৭ বছর কাটিয়ে ফেললেন অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী। দেশের হয়ে করে ফেললেন তিরাশিতম গোল। প্রথম দিনের মতই আজও গোলের জন্য একই রকম ক্ষুধার্ত। ভারতীয় দল আজও গোলের জন্য তাঁর দিকেই তাকিয়ে থাকে। গোলের জন্য ভরসা ছাপিয়ে নির্ভরতার প্রতীক হয়ে উঠেছেন টিম ইন্ডিয়ার নাম্বার ইলেভেন। সুনীল বলছেন, “১৭ বছর আর্ন্তজাতিক ফুটবলে খেলে ফেলা নিঃসন্দেহে দারুন অনুভুতি। এবং সেটা যে এইভাবে উদযাপন করা যাবে তা কখনও ভাবিনি। আফগানিস্তান সমতা ফেরানোর পরে ধরেই নিয়েছিলাম ম্যাচটি ড্র হবে। কিন্তু দলের ছেলেরা যা করতে চেয়েছিল সেটাই করে দেখিয়েছে। তবে একই সঙ্গে ব্যক্তিগত এই মাইলস্টোন আমারষনিজের কাছে বিশেষ অর্থ বহন করে না। দেশের জার্সি এত দীর্ঘ সময় ধরে পড়ে চলার সুযোগ পেয়েছি দেখে নিজেকে গর্বিত মনে হয়।” শনিবার রাতে সাহালের জয় সূচক গোলের পর উদযাপনের জন্য বিরাট স্প্রিন্ট করতে দেখা যায় ভারতীয় দলের অধিনায়ককে।
আরও পড়ুন: সামনেই ইংল্যান্ড সফর, ছুটি পেয়েই মলদ্বীপের সৈকতে বিরুষ্কা
পাশাপাশি তিনি আরও বলেন,“সামনের ম্যাচ হংকংয়ের বিরুদ্ধে। ম্যাচটি কঠিন। কারণ দল হিসেবে হংকং বেশ শক্তিশালী। তবে আমাদের ঘরের মাঠে খেলা। সমর্থকদের সমর্থন আমাদের সঙ্গে থাকবে। ” কোচ ইগর স্টিম্যাচও দলের পারফরম্যান্সে খুশি। বিশেষ করে ফুটবলাররা কঠিন পরিস্থিতিতে যে চারিত্রিক দৃঢ়তা, ইচ্ছাশক্তি দেখিয়েছে তার জন্য কোনও বিশেষনই যথেষ্ট নয় বলে মনে করেন তিনি। সব মিলিয়ে জয়ের হ্যাটট্রিক এবং এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশীপের পরের পর্বের পাসওয়ার্ড মঙ্গলবার হাতে পেতে ঝাপাতে তৈরি ব্লু টাইগাররা।