অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যেতে পারে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। জরুরি ভিত্তিতে কর্মসমিতির বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানেই এই সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে বিশ্বভারতী সূত্রে খবর।
মঙ্গলবার বিকালে ভার্চুয়াল বৈঠকে বিশ্বভারতীর বর্তমান পরিস্থিতি,ছাত্র আন্দোলন নিতে বিস্তারিত আলোচনা হয়। কর্তৃপক্ষ অধ্যাপকদের পাঠালেও ছাত্রছাত্রীরা কোন আলোচনা চাই না বলে বৈঠকে অনেকে অভিযোগ করেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক ছাত্রদের সঙ্গে আলোচনার পক্ষে। তারা বিশ্বভারতীকে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় অফিসের সামনের রাস্তার দুটি গেটে তালা দিয়ে দেওয়ার জন্য কোনও কর্মী কেন্দ্রীয় অফিসে যেতে পেরেনি তাই অগাস্ট মাসের শেষ দিনে কর্মীদের বেতন এবং পেনশনারদের পেনশন হল না। এর ফলে সমস্যায় পড়লেন কয়েক হাজার কর্মী। এরই মধ্যে এদিন সকালে উপাচার্যের বাড়িতে দুধ-কলা দিয়ে আসে আন্দোলনরত পড়ুয়ারা।
আরও পড়ুন : দলত্যাগী ২ বিধায়ককে নিয়ে এবার মুখ খুললেন দিলীপ
ছাত্রদের অভিযোগ, আন্দোলন দেখে উপাচার্য ভয় পেয়ে গিয়েছেন। আর তালা মারা হয়েছে ভিতর থেকে। আসলে ছাত্রছাত্রীদের উপর চাপ বাড়তে উপাচার্য এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।
মঙ্গলবার জরুরি ভিত্তিতে ভার্চুয়াল বৈঠকে বসে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। চারটে থেকে এই বৈঠক শুরু হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন ভবনের অধ্যক্ষ, বিভাগের প্রধানরা এবং ডাইরেক্টরেরা। প্রায় রাত পর্যন্ত এই বৈঠক চলে। বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন মূলত ছাত্র আন্দোলন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়, উপাচার্য অভিযোগ করেন ছাত্ররা কেন্দ্রীয় অফিসের দুটি গেটে তালা দিয়ে দিয়েছে। তাই কোনও কর্মী কেন্দ্রীয় অফিসে ঢুকতে পারছে না, তাই অগাস্ট মাসের বেতন ও পেনশন দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। একই ভাবে প্রতিদিন যে ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থির অবনতি হচ্ছে তাতে ভর্তি প্রক্রিয়া, পরীক্ষার ফল প্রকাশ সম্ভব নয়। এর মধ্যে বেশ কয়েক জন অভিযোগ করেন ছাত্রছাত্রীরা আলোচনা চাইছে না। সোমবার অধ্যাপকেরা গেলেও তারা কথা বলতে রাজি হয়নি। এর পরে সিদ্ধান্ত হয় কর্মসমিতির বিশেষ বৈঠক ডাক হবে । সেখানেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্বভারতী বন্ধের।
বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ অনুসারে প্রতি মাসের শেষ কাজের দিনে কর্মী,শিক্ষক, অস্থায়ি এবং পেনসনারদের বেতন হয়ে থাকে। বর্তমানে প্রায় ৫০০কর্মী, ৬০০ অধ্যাপক,২০০ জন নিরাপত্তা কর্মী এবং ৩০০ জন অস্থায়ী কর্মী পাশাপাশি ১৮০০ জন পেনশনারদের প্রতি মাসে বেতন ও পেনশন দিতে খরচ হয় প্রায় ২৪ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন : সকালেই রাজ্যে বৃষ্টির পূর্বাভাস, কোন কোন জেলায় হবে?
সূত্রের খবর, বিশ্বভারতীর ভূমিকা নিয়ে অসন্তুষ্ট কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক। বিশ্বভারতীর বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে মন্ত্রকে রিপোর্ট পাঠিয়েছে। তারপর মন্ত্রক থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ছাত্রদের সঙ্গে আলোচনা করুক কর্তৃপক্ষ। কিন্তু উপাচার্য এই বিষয়ে এখনও রাজি হয়নি।
এদিকে বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় অফিস যাওয়ার দুটি গেটে কারা তালা মেরেছে তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এদিন গিয়ে দেখা যায় কেউ বা কারা গেটের ভির দিক থেকে চেন দিয়ে তালা মেরে দিয়েছে। ছাত্রদের দাবী, কর্তৃপক্ষ এই তালা দিয়েছে। নিরাপত্তারক্ষীরা তা স্বীকার করেছে।
এদিকে কর্তৃপক্ষের দাবি তালা দিয়েছে ছাত্র-ছাত্রীরা। এই বিষয়ে বিশ্বভারতীর মুখপাত্র অনির্বাণ সরকার কিছু বলতে অস্বীকার করেছেন।