পরমাণু বোমাকেই অনেকে সবচেয়ে শক্তিশালী ভাবেন। কিন্তু এর চেয়েও হাইড্রোজেন বোমার শক্তি ঢের বেশি। এই প্রতিবেদনে সেই হাইড্রোজেন বোমার বিষয়েই জানতে পারবেন। তার আগে সহজ ভাষায়, পরমাণু বোমা ও হাইড্রোজেন বোমা কীভাবে কাজ করে জেনে নেওয়া যাক।
পরমাণু বোমা কী?
পরমাণু বোমা তৈরি হয় পরমাণু বিভাজনের (nuclear fission) মাধ্যমে। এতে ইউরেনিয়াম বা প্লুটোনিয়ামের নিউক্লিয়াস ভেঙে যায় এবং প্রচুর শক্তি উৎপন্ন হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে ফেলা হয়েছিল এই ধরনের বোমা। হিরোশিমায় ‘লিটল বয়’ এবং নাগাসাকিতে ‘ফ্যাট ম্যান’ নামের দু'টি পরমাণু বোমা কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করেছিল।
হাইড্রোজেন বোমা কী?
হাইড্রোজেন বোমাকে থারমোনিউক্লিয়ার বোমাও বলা হয়। এটি তৈরি হয় নিউক্লিয়ার ফিউশন (nuclear fusion) প্রক্রিয়ায়। এক্ষেত্রে হাইড্রোজেনের আইসোটোপ একত্রিত হয়ে হিলিয়াম গঠন করে এবং বিপুল শক্তি উৎপন্ন করে। এই বোমা ফাটানোর জন্য প্রথমে একটি পরমাণু বোমা ব্যবহার করা হয়। এটি উচ্চ তাপমাত্রা সৃষ্টি করে এবং ফিউশন প্রক্রিয়া শুরু হয়।
কত বেশি শক্তিশালী?
হাইড্রোজেন বোমা পরমাণু বোমার তুলনায় অনেক গুণ বেশি শক্তিশালী। বিজ্ঞানীরা বলছেন, একটি সাধারণ হাইড্রোজেন বোমার বিস্ফোরণ শক্তি একটি পরমাণু বোমার চেয়ে ১ হাজার গুণ বেশি হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৬১ সালে রাশিয়া যে ‘Tsar Bomba’ পরীক্ষা করেছিল, সেটিই এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে শক্তিশালী হাইড্রোজেন বোমা। এর বিস্ফোরণ শক্তি ছিল প্রায় ৫০ মেগাটন— হিরোশিমার বোমার চেয়ে ৩,৩০০ গুণ বেশি শক্তিশালী।
পরমাণু বোমা ভয়ংকর, কিন্তু হাইড্রোজেন বোমা তার চেয়েও বেশি ভয়ংকর এবং ধ্বংসাত্মক। এই অস্ত্রগুলি নিঃসন্দেহে মানবসভ্যতার বড় অংশকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে। ফলে শান্তি বজায় রাখার ক্ষেত্রে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও সহযোগিতার পরিবেশ গড়ে তোলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।