মেটা সিইও মার্ক জুকারবার্গ একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) জন্য টিম তৈরি করতে চলেছেন। ব্যক্তিগতভাবে এআই জগতের সবচেয়ে বুদ্ধিমান ব্যক্তিদের তিনি বোর্ডে আনার চেষ্টা করছেন। WSJ-এর একটি প্রতিবেদন অনুসারে, জুকারবার্গ বিশ্বজুড়ে শীর্ষ গবেষক, ডেভেলপার এবং উদ্যোক্তাদের সরাসরি মেসেজ পাঠাচ্ছেন। তাঁদের ১০০ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত বিশাল বেতনের প্যাকেজ অফার করছেন, যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৮৬০ কোটি টাকা।
আসলে জুকারবার্গ মেটার অধীনে একটি নতুন 'সুপারইন্টেলিজেন্স' ল্যাব তৈরি করার চেষ্টা করছেন। এটিকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য তিনি নিজেও নিয়োগ প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত। প্রকৃতপক্ষে, তিনি ইমেল এবং হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজের মাধ্যমে বিভিন্ন ক্ষেত্রের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন, যা অনেককে অবাক করেছে। তাঁদের মধ্যে আবার জুকারবার্গের মেসেজকে ভুয়ো বলে মনে করেছিলেন। তাৎক্ষণিকভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি। পরে জানতে পারেন যে মেটার সিইও নিজেই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।
এআই জগতে মেটা সম্প্রতি কিছু সমস্যার মধ্যে পডে। তারপরেই সংস্থার তরফে টিম বানানোর চেষ্টা শুরু হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। এই বছরের শুরুতে কোম্পানি তাদের নতুন এআই মডেলগুলির লঞ্চ পিছিয়ে দিয়েছিল। এছাডা়ও মডেলগুলি নিয়ে কিছু অভিযোগও উঠেছিল। আর তাতেই মনে হয়েছিল যে মেটা এআই-র দৌড়ে পিছিয়ে পড়ছে ওপেনএআই এবং গুগলের মতো কোম্পানিগুলির চেয়ে।
পরিস্থিতি পরিবর্তনের জন্য জুকারবার্গ এখন নিজেই প্রধান নিয়োগকারীর ভূমিকা পালন করছেন। তিনি এআই সেক্টরের বেশ কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় ও বহুল পরিচিত মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে ওপেনএআই-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা (জন শুলম্যান এবং বিল পিবলস) এবং শীর্ষস্থানীয় সংস্থাগুলির অন্যান্য বিশেষজ্ঞরা। কেউ কেউ অফার নিচ্ছেন, আবার কেউ কেউ এখনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি বলেই জানা যাচ্ছে। একটি ক্ষেত্রে, মেটা তার টিম তৈরির জন্য একটি স্টার্টআপ সংস্থাকে অধিগ্রহণের প্রস্তাবও দিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এছাড়াও,জুকারবার্গ স্কেল এআই নামক একটি স্টার্টআপের সিইওকে তাঁর টিমে যোগ দেওয়ার জন্য ১৪ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি ব্যয় করেছেন বলে জানা গিয়েছে।
অনেক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে কিছু জনকে ১০০ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৮৬০ কোটি টাকা) ক্ষতিপূরণ প্যাকেজ দেওয়া হয়েছে, যা এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ বেতনের অফার। বিরাট টাকার অফার থাকা সত্ত্বেও সকলেই এতে আশ্বস্ত নন। মেটা যাদের নিয়োগের চেষ্টা করছেন তাঁদের মধ্যে কিছু লোক কোম্পানির বর্তমান এআই-র কাঠামো সম্পর্কে অনিশ্চিত বোধ করছেন। কারণ মেটা একাধিক অভ্যন্তরীণ রদবদলের মধ্য দিয়ে গিয়েছে। যার ফলে কে কোন দিকটার নেতৃত্ব দিচ্ছেন তা নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে।
দ্বিধাগ্রস্ত হওয়ার আরেকটি কারণ হলেন মেটার প্রধান এআই বিজ্ঞানী ইয়ান লেকুন। যিনি এআই কীভাবে এগিয়ে যাওয়া উচিত সে সম্পর্কে ভিন্ন মতামত প্রকাশ করেছেন।
তবুও, জুকারবার্গ অত্যন্ত সক্রিয় রয়েছেন এবং ব্যক্তিগতভাবে এই এআই স্বপ্নের দল তৈরিতে বিনিয়োগ করেছেন। তিনি আরও প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন যে মেটাতে সম্পদের কোনও সমস্যা হবে না।