ভোটের ফল প্রকাশের আগেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন বিনামূল্যে রাজ্যের মানুষকে করোনা টিকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ওই প্রতিশ্রুতি মতো গোটা রাজ্যের করোনা টিকাকরণের দায়িত্ব এ বার নিজের কাঁধেই তুলে নিয়েছে রাজ্য সরকার।
এখন থেকে করোনা টিকার সমস্ত ডোজ রাজ্যের মানুষকে বিনামূল্যে দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। নতুন ঘোষণা অনুযায়ী, বেসরকারি হাসপাতালে যাঁরা করোনা টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন, তাঁদেরও এ বার নিখরচায় টিকা দেওয়া হবে সরকারি হাসপাতাল থেকেই।
বেসরকারি ভাবে এ রাজ্যে আর করোনা টিকার কোনও ডোজই নেওয়া যাবে না। রাজ্য সরকার জানিয়েছে, কলকাতা পুরসভা, নিউটাউন কলকাতা ডেভলপমেন্ট অথরিটি এবং বিধাননগর মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের বাসিন্দারা, যাঁরা করোনা টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছেন, তাঁদের টিকার দ্বিতীয় ডোজ দ্রুত দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
মূলত, করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার উপরেই আপাতত জোর দেওয়া হচ্ছে। কারণ, কেভিশিল্ড বা কোভ্যাক্সিনের প্রথম ডোজ নেওয়ার পর প্রায় দেড় মাস পেরিয়ে গিয়েছে এমন মানুষের সংখ্যা এ রাজ্যে নেহাত কম নয়।
মূলত, কেন্দ্র থেকে এ রাজ্যে যে পরিমাণ করোনা টিকার প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ এসে পৌঁছচ্ছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নয়। টিকার জোগানের অভাবে অ্যাপ থেকে রেজিস্ট্রেশনের ডেট পাচ্ছেন না অনেকেই। প্রথম ডোজ নেওয়ার পর এক মাস পেরিয়ে গেলেও টিকার দ্বিতীয় ডোজ কবে নেওয়া যাবে, সে বিষয়ে চরম অনিশ্চয়তায় দিন কাটছে লক্ষাধিক রাজ্যবাসীর।
সূত্রের খবর, এ রাজ্যে জোগানের সমস্যা দেখা দিয়েছে প্রধানত কেভিশিল্ডের ক্ষেত্রে। জোগানের ব্যাপক ঘাটতির ফলে কেভিশিল্ডে প্রথম ডোজ নেওয়ার পর প্রায় দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার ডেট পাচ্ছেন না অনেকেই।
করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজের অপেক্ষায় থাকা মানুষের সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে। রাজ্যের করোনার গণটিকাকরণ কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত কর্তাদের আশঙ্কা, এ ভাবে চলতে থাকলে মাসের শেষে অন্তত ৯-১০ লক্ষ রাজ্যবাসীকে টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া যাবে না।
টিকার শুধুমাত্র একটি ডোজ নিলে কি ভাইরাসের বিরুদ্ধে সুরক্ষা মিলবে না? এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা কেভিশিল্ডের কার্যকারিতা বিশ্লেষণ করে দেখেছেন, এই টিকার প্রথম ডোজ ৪০-৬০ শতাংশ পর্যন্ত ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে সক্ষম। দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পর মিলতে পারে ৭০-৮০ শতাংশ পর্যন্ত সুরক্ষা। টিকার শুধুমাত্র একটি ডোজে সংক্রমণ থেকে অনেকটা সুরক্ষা মিললেও তাতে হার্ড ইমিউনিটির লক্ষ্যমাত্র পূরণ হবে না।
কেভিশিল্ডের প্রথম ডোজ নিয়েছেন প্রায় ৫৬ দিন হতে চলল, এমন ব্যক্তিদের টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। একই ভাবে, কোভ্যাক্সিনের প্রথম ডোজ নেওয়ার পর প্রায় ৪২ দিন হতে চলল, এমন ব্যক্তিদের টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।