বিগত বেশ কয়েক বছর ধরেই মাসের পয়লা তারিখের মধ্যে বেতন পাচ্ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। ব্যতিক্রমী কয়েকটি ঘটনা ছাড়া স্বাভাবিক নিয়মেই মিলছিল তাঁদের বেতন। কিন্তু ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণের জেরে এপ্রিল মাসে সমস্যায় পড়তে হল রাজ্যের কয়েক হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকাকে।
ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণের জেরে এপ্রিল থেকেই বেশ কয়েকটি ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টের নম্বর, উইজার আইডি, আইএফএসসি কোড। আর এই সমস্ত তথ্য আপডেট না হওয়ায় ট্রেজারি থেকে যায়নি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন।
ওরিয়েন্টাল ব্যাঙ্ক অব কমার্স এবং ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া জুড়েছে পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের সঙ্গে। সিন্ডিকেট ব্যাঙ্ক জুড়েছে কানাড়া ব্যাঙ্কের সঙ্গে। ইউনিয়ন ব্যাঙ্কের সঙ্গে জুড়েছে অন্ধ্র ব্যাঙ্ক এবং এলাহাবাদ ব্যাঙ্ক সংযুক্ত হয়েছে ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্কের সঙ্গে।
এতগুলি ব্যাঙ্কের সংযুক্তির জেরেই এই সমস্ত ব্যাঙ্কে স্যালারি অ্যাকাউন্ট থাকা রাজ্যের শিক্ষক-শিক্ষিকারা মার্চের বেতন পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়েছেন। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মার্চের বেতন পাওয়া নিয়েও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
নতুন অ্যাকাউন্টের তথ্য আইওএসএমএস পোর্টালে আগেভাগে তোলা হয়নি। তার জেরেই এই সমস্যা বলে অভিযোগ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশের। এই পোর্টালের মাধ্যমেই রাজ্যের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন হয়ে থাকে।
এই আইওএসএমএস পোর্টালে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সারা মাসের ছুটি-ছাটা, কাজের দিন যথা সময়ে আপডেট হওয়ার পর সরাসরি বেতনের টাকা ঢুকে যায় তাঁদের অ্যাকাউন্টে। এ কারণেই মাসের পয়লা তারিখেই নির্বিঘ্নে বেতন পান তাঁরা।
শিক্ষক সংগঠন এসটিইএ-এর দাবি, মাস খানেক আগেই এই আশঙ্কা থেকেই স্কুলশিক্ষা কমিশনার এবং ডিআই অফিসে চিঠি পাঠানো হয়েছিল। চিঠিতে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত নতুন তথ্য সংগ্রহের জন্য ক্যাম্প করার পরামর্শও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় নির্দেশ না মেলায় এমনটা করা সম্ভব হয়নি।
জানা গিয়েছে, মার্চের বেতন এখনও পর্যন্ত না পাওয়া রাজ্যের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে ইউনাইটেড ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট হোল্ডারদেরই সংখ্যা বেশি। রাজ্যের একাধিক জেলায় এমন দু’-তিন হাজার শিক্ষক রয়েছেন। এছাড়াও অন্যান্য আরও কয়েকটি ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট হোল্ডারও রয়েছেন এই তালিকায়।