দেশের মোট ২৮টি রাজ্যের মতো বাংলাতেও ক্রমশ ভয়াবহ হচ্ছে করোনা পরিস্থিতি। এ রাজ্যেও ক্রমশ বাড়ছে করোনা আক্রান্ত্রের সংখ্যা। পরিস্থতি সামাল দিতে পশ্চিমবঙ্গে লোকাল ট্রেন বন্ধ হয়েছে ৫ মে। ১৬ মে, রবিবার থেকে লকডাউন শুরু হয়েছে এ রাজ্যে।
রাজ্যে ট্রেন বন্ধ হতেই পণ্য পরিবহণে বাড়তি জ্বালানির দাম জুড়ে বাড়তে শুরু করেছিল শাক-সবজি ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রির দাম। কিন্তু তা সত্ত্বেও মুরগির ডিম, মাংসের দাম নিয়ন্ত্রণেই ছিল। কিন্তু ১৬ মে থেকে রাজ্যে লকডাউন শুরু হতেই বাড়তে শুরু করেছে মুরগির ডিম, মাংসের দাম।
কিন্তু কেন বাড়ছে মুরগির ডিম আর মাংসের দাম? স্থানীয় দোকানদার ও মুরগির মাংসের কারবারিদের কথায়, লকডাউনের জেরে মালের জোগানের বড়ই অভাব! অনেক ক্ষেত্রে বাড়তি টাকা খরচ করে ঘুর-পথে মাল আনতে হচ্ছে। ফলে মুরগির ডিম, মাংসের দামে তার প্রভাব পড়ছে।
মুরগির মাংসের দাম গত সপ্তাহেও যেখানে ১৫০-১৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে, রাজ্যে লকডাউনের দু’দিনেই তা ২০০-২২০ টাকা কেজিতে পৌঁছে গিয়েছে। অর্থাৎ, দু’দিনে মুরগির মাংসের দাম কেজিতে প্রায় ৪০ টাকা বেড়ে গিয়েছে।
এ দিকে মাংসের পাশাপাশি মুরগির ডিমের দামও বাড়তে শুরু করেছে জেলায় জেলায়। মুরগির ডিমের দাম গত সপ্তাহেও যেখানে ১০ টাকা জোড়া বিক্রি হয়েছে, লকডাউনের দু’দিনেই সেই দাম কোথাও ১৩ টাকা তো কোথাও ১৪ টাকা জোড়ায় পৌঁছে গিয়েছে!
সব মিলিয়ে রাজ্যে লকডাউন শুরুর দু’দিনের মধ্যেই মুরগির ডিম আর মাংসের দাম এক ধাক্কায় প্রায় ৩০-৪০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে। এর কারণ হিসাবে মূলত জোগানের ঘাটতিকেই দায়ি করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
রাজ্যে মুরগির ডিম আর মাংসের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধির পিছনে যে জোগানের ঘাটতি দেখাচ্ছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা সে প্রসঙ্গে ওয়েস্ট বেঙ্গল পোল্ট্রি ফেডারেশন (WEST BENGAL POULTRY FEDERATION)-এর সাধারণ সম্পাদক মদন মোহন মাইতি জানান, রাজ্যে এখনও পর্যন্ত মুরগির ডিম আর মাংসের জোগানে তেমন ঘাটতি হয়নি। ফলে দামের এতটা ফারাক হওয়ার কথা নয়।
ওয়েস্ট বেঙ্গল পোল্ট্রি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “কয়েকটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া জেলায় জেলায় মোটামুটি নির্বিঘ্নেই পৌঁছাচ্ছে ডিম আর মুরগির গাড়ি। কিছু ক্ষেত্রে পুলিশি অসহযোগিতার অভিযোগও কানে এসেছে। তবে তার সংখ্যা হাতে-গোণা। তাই জোগানের ঘাটতির প্রচার সঠিক নয়।”
মদনমোহনবাবু জানান, মঙ্গলবার রাজ্যে এক জোড়া মুরগির ডিমের দাম ১১টা। জোগানের পরিমাণের হেরফেরে এই দাম জোড়ায় বড়জোড় ১-২ টাকা বাড়তে পারে। অর্থাৎ, ডিমের জোড়া ১২ থেকে ১৩ টাকা হতে পারে। তার বেশি নয়।
তবে ডিম আর মুরগির গাড়ি যাতে নির্বিঘ্নে সর্বোত্র পৌঁছাতে পারে, তার জন্য প্রশাসনিক স্তরে সহযোগিতার আবেদন করেছেন ওয়েস্ট বেঙ্গল পোল্ট্রি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, “সীমিত সময়ের মধ্যে ডিম আর মুরগির মাংসের পর্যাপ্ত বিক্রি হচ্ছে না। তাই অনেক ক্ষেত্রেই মার খাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। রাজ্যের মানুষের সুরক্ষা বজায় রেখে বাজার হাটের সময়টা আর একটা বাড়ানো গেলে হয়তো উপকৃত হবেন সব শ্রেণির মানুষই!”