Authentic Malda Mango At Doorstep Delivery: দার্জিলিংয়ের চা, মজঃফরপুরের লিচু, বারুইপুরেরর পেয়ারার মতোই মালদার আম জগদ্বিখ্যাত। ফজলি, হিমসাগড়, ল্যাংড়া, লক্ষ্মণভোগ কত আম। জানার চেয়ে নাম না জানা আমের সংখ্যা আরও বেশি। দেখলেই জিভে জল। কিন্তু এ রাজ্যের ফল হলেও বেশিরভাগই আমরা এই স্বাদ থেকে বঞ্চিত থাকি। বেশিরভাগই বাইরে রফতানি হয়ে যায়, যেটুকু থাকে দাম আকাশছোঁয়া।
তবে এবার আমপ্রেমীদের সেই আক্ষেপ হয়তো ঘুচতে চলেছে। তাদের জন্য সুখবর। ভারতবর্ষের যে কোনও প্রান্তে ঘরে বসেই পাবেন এ রাজ্যের মালদার সুস্বাদু রসালো আম। যেদিন অর্ডার করবেন তার ৫ থেকে ৬ দিনের মধ্যে আম পৌঁছে যাবে আপনার দোরগোড়ায়।
জেলা উদ্যানপালন ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের সহযোগিতায় অনলাইনে মালদার আম পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন এক দম্পতি। যাতে দেশের যে কোনও জায়গায় বসেই অথেনটিক মালদার আমের স্বাদ নেওয়া যায়।
অনলাইনে আম বিক্রির জন্য ইতিমধ্যে দফতরের তরফে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে। দম্পতির সাফল্যের দিকে তাকিয়ে রয়েছে প্রশাসন, তাকিয়ে আমচাষিরাও। সফল হলে সার্বিকভাবে মালদার আমকে আরও ভালভাবে ব্র্য়ান্ডিং করা যাবে বলে আশাবাদী দফতরও।
মালদহ শহরের বালুচর এলাকার বাসিন্দা প্রসূন চিতলাঙ্গিয়া ও তাঁর স্ত্রী প্রীতা চিতলাঙ্গিয়া। মালদার কয়েকটি আম গত বছর জিআই ট্যাগ পেয়েছে। তখন থেকেই আমকে কীভাবে দেশে একটা ব্র্যান্ড হিসাবে তুলে ধরা যায়, তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই চিন্তাভাবনা করছিলেন তাঁরা। বিভিন্ন ফল থেকে নানান খাদ্যসামগ্রী অনলাইনে বিক্রি হচ্ছে। সেই ভাবনা থেকেই মালদহের আম অনলাইনে বিক্রির চিন্তা ভাবনা আসে তাঁদের।
গ্রাহকদের জন্য তাঁর একটি ওয়েবসাইট তৈরি করেছেন। সেটি হল- www.maldaamritfal.com। ওই ওয়েবসাইটের মধ্যেই আমের অর্ডার থেকে শুরু করে পেমেন্ট গেটওয়ে রয়েছে। কেউ চাইলে হোয়াটসঅ্যাপেও অর্ডার করতে পারবেন। সেই নম্বরও দেওয়া রয়েছে সাইটেই।
জানা গিয়েছে, চলতি মরশুমে মালদহের হিমসাগর, লক্ষ্মণভোগ ও ল্যাংড়া, এই তিন প্রজাতির আমের অর্ডার নিচ্ছেন শুধু। আমের দামও ওয়েবসাইটে দেওয়া রয়েছে। তার মধ্যেই ক্যুরিয়র চার্জ ধরা রয়েছে। দেশের যে কোনও জায়গায় আমরা পাঁচ থেকে ছ’দিনের মধ্যে আম পৌঁছে দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে তাঁরা বিভিন্ন সোশ্যাল মাধ্যমে প্রচার শুরু করেছেন।
মালদার আম পুরোপুরি পরিপক্ক না হওয়ায় এখনও আম সরবরাহ শুরু করিনি। তবে চলতি মাসের শেষ থেকে আম সরবরাহ শুরু করবেন তাঁরা৷ প্রতিটি প্যাকেটে ৪ কেজি করে থাকবে। তবে কিছু আম পচে যেতে পারে বলে মনে করে প্রতিটি প্যাকেটে আমরা অতিরিক্ত ৫০০ গ্রাম আম দেওয়া হচ্ছে। তবে দাম ৪ কেজিরই দিতে হবে।
জেলা উদ্যানপালন দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর সামন্ত লায়েক সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, মালদার আমকে অনলাইনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ওই ব্যক্তি যোগাযোগ করেছিলেন। গত বছর তিনি পরীক্ষামূলকভাবে এই পরিষেবা শুরু করেছিলেন। এই পরিষেবা থেকে মালদার আমের যেমন প্রসার ঘটবে, তেমনই জেলার অর্থনীতি আরও দৃঢ় হবে৷
দফতরের তরফে ওনাকে প্যাকেজিং, লেভেলিং, বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে কীভাবে আম গ্রাহকদের ঘরে পৌঁছে দেওয়া যায় সেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। সারা বিশ্ব জুড়ে এভাবে মালদার আমকে ছড়িয়ে দেওয়া আমাদের লক্ষ্য। সফল হলে সরকারিভাবেও আম পৌঁছে দেওয়া যেতে পারে।