বিশ্বের ১২টি দেশের ৯২ জনের শরীরে ইতিমধ্যেই মাঙ্কিপক্সের উপস্থিতির প্রমাণ মিলেছে। ব্রিটেন, আমেরিকার পর অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, স্পেন, পর্তুগাল, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস, সুইডেন এবং ইতালিতে মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের সংক্রমণের খবর মিলেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এই ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে গুরুত্ব দেখিয়ে বিশ্বের সমস্ত দেশকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে। WHO আশঙ্কা প্রকাশ করে জানিয়েছে, এই ভাইরাস বিশ্বের সমস্ত দেশেই ছড়িয়ে পড়তে পারে।
তবে কোনও দেশেই এই ভাইরাসের কারণে এখনও পর্যন্ত কোনও মৃত্যু হয়নি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) বলেছে, এসব ঘটনা নিশ্চিত করতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে।
মাঙ্কিপক্স (Monkeypox Virus) একটি বিরল অথচ সম্ভাব্য গুরুতর ভাইরাল অসুখ যা সাধারণত ফ্লু-এর মতো অসুস্থতা যা লিম্ফ নোডের ফুলে যাওয়া দিয়ে শুরু করে মুখ এবং শরীরে ফুসকুড়ি হিসাবে ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ে।
সাধারণত মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের (Monkeypox Virus) সংক্রমণে জ্বর, ফুসকুড়ি এবং লিম্ফ নোড ফুলে যাওয়ার মতো লক্ষণ প্রকাশ পায়। বিজ্ঞানীদের দাবি, জীবিত বা মৃত বন্য প্রাণীর মাংস খেলে এ রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা বহুগুণ বেড়ে যায়।
এখন প্রশ্ন হল, মাঙ্কিপক্স ভাইরাস (Monkeypox Virus) শিশুদের ক্ষেত্রে কতটা বিপজ্জনক? এই প্রশ্নের উত্তরে বিশেষজ্ঞ (মেডিসিন) চিকিৎসক ডাঃ অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, “মাঙ্কিপক্স ভাইরাস শিশুদের ক্ষেত্রে বিপজ্জনক হতে পারে! কারণ, ছোটদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। তবে এই ভাইরাসের সংক্রমণে মর্টালিটি রেট বা মৃত্যু হার ৪-৬ শতাংশ এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রোগী ৩-৪ সপ্তাহের মধ্যে সম্পূর্ণ সেরে ওঠেন।”
মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের (Monkeypox Virus) টিকা আছে, এর চিকিৎসা সম্ভব? ডাঃ বিশ্বাস বলেন, “আপাতত এই ভাইরাসের কোনও টিকা নেই। তবে স্মল পক্সের টিকায় কাজ হতে পারে। তবে সেটাও আপাতত এই ভাইরাসের প্রকৃতি অনুযায়ী অনুমান বা পরীক্ষা-নিরীক্ষার স্তরে রয়েছে।
ডাঃ বিশ্বাস বলেন, “আপাতত যে টুকু জানা গিয়েছে, তাতে এই মাঙ্কিপক্স ভাইরাস (Monkeypox Virus) ছোঁয়াচে এবং এটি ‘মেল টু মেল সেক্সুয়াল ট্রান্সমিটেড ডিজিজ’ বলেই দাবি একদল বিজ্ঞানীর। তবে নিয়ম মাফিক চিকিৎসায় আক্রান্তের সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব।”
রোগের সময়কাল সাধারণত ৬ থেকে ১৩ দিন। তবে মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের লক্ষণগুলি সংক্রমণের ৫ থেকে ২১ দিনের মধ্যেও দেখা দিতে পারে। মাঙ্কিপক্সের লক্ষণগুলি হালকা বা গুরুতর হতে পারে এবং সাধারণত ১৪ থেকে ২১ দিনের মধ্যে নিজে থেকেই চলে যায়। মাঙ্কিপক্সের ফলে ত্বকে সৃষ্টি হওয়া ক্ষতে খুব চুলকানি বা যন্ত্রণা হতে পারে।