লিঙ্গ সমতার বিচারে বিগত এক বছরে যথেষ্ট অবনতি হয়েছে ভারতের! দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে মহিলাদের অংশগ্রহণ কমেছে, পেশাদার ও প্রযুক্তিগত ভূমিকায় অংশীদারিত্ব কমেছে। সব মিলিয়ে এ দেশে পিছিয়ে পড়ছেন মহিলারা।
এ কথা আমরা প্রায় সকলেই জানি যে, সমাজে প্রতিটি ক্ষেত্রে যোগদানের নিরিখে নারী-পুরুষের সমতা থাকা প্রয়োজন। কোনও দেশ ও সমাজের সার্বিক বিকাশে মহিলাদের অংশগ্রহণ অত্যন্ত জরুরি! নারী কল্যানের মাধ্যমেই কোনও দেশের সামগ্রিক উন্নতি সম্ভব।
কিন্তু বিগত এক বছরে লিঙ্গ সমতার বিচারে ভারতের অবস্থানের অবনতি হয়েছে অনেকটাই! গতবছরের চেয়ে ২৮ ধাপ নেমে এ বার ভারত ১৫৬টি দেশের তালিকার ১৪০ নম্বরে পৌঁছেছে। এমনটাই জানাচ্ছে সদ্য প্রকাশিত ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (WEF) রিপোর্ট!
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (WEF) এই রিপোর্ট অনুযায়ী, নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা এবং মায়ানমারের থেকেও পিছিয়ে রয়েছে ভারত। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি ভারতের।
২০০৬ সাল থেকেই এই তথ্য প্রকাশ করছে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (WEF)। বিশ্বের লিঙ্গ সমতা সূচকে নারী ও পুরুষের বৈষম্য দূরীকরণে বিভিন্ন দেশের অগ্রগতি ও অবনতির পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়। স্বাস্থ্য ও গড় আয়ু, শিক্ষার সুযোগ, অর্থনীতিতে অংশগ্রহণ এবং রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন— মূলত এই চারটি ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের অংশগ্রহণের পরিসংখ্যান বিশ্নেষণ করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (WEF) এই রিপোর্ট অনুযায়ী, লিঙ্গ সমতার বিচারে ১৫৬টি দেশের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে আইসল্যান্ড। আইসল্যান্ডের পরেই এই তালিকায় রয়েছে ফিনল্যান্ড, নরওয়ে, নিউজিল্যান্ড ও সুইডেনের নাম। তালিকার একেবারে শেষে রয়েছে আফগানিস্তানের নাম।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (WEF) এই রিপোর্ট অনুযায়ী, শিক্ষা অর্জনের ক্ষেত্রে দেশের পুরুষ ও মহিলাদের যোগদানের নিরিখে তালিকার ১১৪ নম্বরে রয়েছে ভারতের নাম। পুরুষ ও মহিলাদের স্বাস্থ্য এবং জীবধারনের মানের বিচারে ব্যবধান বেড়েছে অনেকটাই!
দেশের অন্যান্ন ক্ষেত্রের মতো পেশাদার, প্রযুক্তিগত ভূমিকায় মহিলাদের অংশগ্রহণ ও অংশীদারিত্ব কমেছে। পেশাদার, প্রযুক্তিগত ভূমিকায় মহিলাদের অংশগ্রহণ ও অংশীদারিত্ব ২৯.২ শতাংশ কমেছে। বর্তমানে দেশের মাত্র ৮.৯ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদে রয়েছেন মহিলারা।
দেশে রাজনৈতিক ক্ষমতার শীর্ষেও কমেছে মহিলাদের যোগদান। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (WEF) এই রিপোর্ট অনুযায়ী, রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন সূচকে মহিলা মন্ত্রীর সংখ্যাও কমেছে অনেকটাই! ২০১৯ সালে যেখানে দেশের রাজ্য বা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভায় ২৩.১ শতাংশ মন্ত্রী ছিলেন মহিলা, সেখানে ২০২১-এ রাজ্য বা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভায় মাত্র ৯.১ শতাংশ মন্ত্রী মহিলা।
পুরুষ ও মহিলাদের স্বাস্থ্য এবং জীবধারনের মানের বিচারেও ব্যবধান বেড়েছে অনেকটাই! এই সূচকে ভারতের পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ! ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (WEF) এই রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৫৬টি দেশের মধ্যে ভারত রয়েছে ১৫৫ নম্বরে। এই সূচকে ১০৬ নম্বরে রয়েছে নেপাল, ১১৬-এ শ্রীলঙ্কা, ভুটান ১৩০-এ রয়েছে ভুটান আর পাকিস্তান রয়েছে ১৫৩ নম্বরে।