রেলের টিকিটের অগ্রিম বুকিং সংক্রান্ত একটি নতুন নিয়ম আজ থেকে অর্থাৎ ১ নভেম্বর ২০২৪ থেকে কার্যকর হয়েছে। এখন আপনি ৬০ দিন আগে পর্যন্ত ট্রেনের টিকিট বুক করতে পারবেন। অগ্রিম টিকিট বুকিংয়ের নিয়ম বদল করেছে ভারতীয় রেল। এখন আপনি শুধুমাত্র ৬০ দিন (২ মাস) আগে রিজার্ভেশন করতে পারবেন। আগে ১২০ দিন আগে পর্যন্ত রিজার্ভেশন করার সুবিধা পাওয়া যেত, কিন্তু এখন তা কমিয়ে ৬০ দিন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে বুক করা টিকিটের ক্ষেত্রে নতুন নিয়ম প্রযোজ্য হবে না।
৩১ অক্টোবর পর্যন্ত অগ্রিম সংরক্ষণের মেয়াদের অধীনে বুক করা টিকিটগুলি বৈধ থাকবে। নতুন রিজার্ভেশন সময়ের অধীনে ৬০ দিনের বেশি বুকিংয়ে বাতিল করার সুবিধাও পাওয়া যাবে। তাজ এক্সপ্রেস এবং গোমতী এক্সপ্রেসের মতো কিছু এক্সপ্রেস ট্রেনগুলির জন্য নিয়মের কোনও পরিবর্তন করা হয়নি, যেগুলির সংক্ষিপ্ত রিজার্ভেশন সময়সীমা ইতিমধ্যেই রয়েছে৷ বিদেশি পর্যটকদের জন্য ৩৬৫ দিনের সীমার কোনও পরিবর্তন হয়নি।
রেল মন্ত্রকের মতে, নতুন নিয়ম ইতিমধ্যে বুক করা টিকিটের ওপর কোনও প্রভাব ফেলবে না। ট্রেনের টিকিট বুকিং IRCTC ওয়েবসাইট, অ্যাপ এবং বুকিং কাউন্টারের মাধ্যমে করা হয়। রেলের তরফে বলা হয়েছে, বেশি পরিমাণে বাতিল হওয়া এবং আসনের অপচয়ের পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রেল জানিয়েছে, ১২০ দিনের অগ্রিম রিজার্ভেশনের সময়কাল খুব দীর্ঘ ছিল। এই সময়ের মধ্যে বুক করা টিকিটগুলির প্রায় ২১ শতাংশ বাতিল করা হত। যেখানে ৪ থেকে ৫ শতাংশ মানুষ একেবারেই যাতায়াত করেন না। অনেক ক্ষেত্রে যাত্রীরা তাঁদের টিকিট বাতিলও করেননি, যার কারণে জালিয়াতির সম্ভাবনা রয়েছে এবং যাদের সত্যিই টিকিট প্রয়োজন তাঁদের টিকিটের জন্য ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে। রেলের মতে, মাত্র ১৩ শতাংশ মানুষ চার মাস আগে ট্রেনের টিকিট বুক করতেন। যেখানে বেশিরভাগ টিকিট যাত্রার ৪৫ দিনের মধ্যে বুক করা হত।
নতুন নিয়মে কে লাভবান ও ক্ষতিগ্রস্থ?
দীপাবলির উৎসবে ট্রেনে ভিড় দেখা গেছে। অনেক যাত্রীর অভিযোগ, তাঁরা রিজার্ভেশন পাননি, যার কারণে তাঁদের দীর্ঘ সময় সাধারণ ক্লাসে যাতায়াত করতে হয়েছে। এখন ছট পুজো ঘনিয়ে এসেছে। এমন সময়ে শহরের চাকুরীজীবীরা গ্রামের বাড়িতে ফেরেন। তাই ট্রেনেও ভিড় বেশি। ট্রেন ও বিমানের টিকিট সহজে পাওয়া যায় না এবং সাধারণ মানুষকে সমস্যায় পড়তে দেখা যায়। কালোবাজারি বাড়ে। এতে রেলও লোকসানের মুখে পড়ে এবং অবৈধ আদায়ের অভিযোগ আসতে থাকে। রেলের তরফে বলা হয়েছে, উৎসবের সময় ট্রেনে যাত্রীদের বেশি ভিড়ের পরিপ্রেক্ষিতে নিয়ম সংশোধন করা হয়েছে। এতে কালোবাজারি ও দুর্নীতিও অনেকাংশে রোধ হবে। রিজার্ভেশনের সময়সীমা কমানোর কারণে রেল বিশেষ ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা করতে সুবিধা পাবে। কারণ কম বাতিল এবং যাত্রীদের ভিড় দেখে সঠিক পরিস্থিতি অনুমান করা যেতে পারে। এতে যাত্রী ও রেল উভয়ের সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ কমবে।
এখন টিকিট বুকিং এর নিয়ম কী?
ট্রেনে অগ্রিম টিকিট বুকিংয়ের সময় সময়ে সময়ে পরিবর্তন করা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত নিয়ম অনুযায়ী, যাত্রার চার মাস আগে ট্রেনের টিকিট বুক করা যেত। ২০১৫ সালের ২৫ মার্চ রেল মন্ত্রক বুকিংয়ের সময়কাল ৬০ দিন থেকে বাড়িয়ে ১২০ দিন করেছিল। সেই সময় রেলের যুক্তি ছিল যে মেয়াদ বাড়ানো হলে দালালরা হতাশ হবেন এবং তাঁদের টিকিট বাতিল করার জন্য বেশি চার্জও দিতে হবে। এখন আবার ট্রেনের টিকিট বুকিংয়ের সময়সীমা বাড়িয়ে ৬০ দিন করা হয়েছে। আগে সংরক্ষণের সময়কাল ছিল ৪৫ দিন এবং ৯০ দিন। বিশ্লেষণের পরে, রেল সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে যাত্রীদের সুবিধার জন্য সর্বোচ্চ ৬০ দিনের রিজার্ভেশন সময় সেরা হতে পারে।
কবে পর্যন্ত আমি আমার টিকিট বাতিল করতে পারি?
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, টিকিট বাতিলের সময়ও হবে ৬০ দিন। অর্থাৎ, আপনি যদি আপনার টিকিট বাতিল করতে চান, তবে এই সময়ের মধ্যে প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে হবে।