পেট্রোল, ডিজেল, এলপিজি বা সিএনজি মতো জ্বালানির ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী। তার প্রভাব পড়েছে মূল্যবৃদ্ধিতে। বাজারের শাকসবজি থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়েই চলেছে। কিন্তু আপনি কি জানেন বিশ্বের সবচেয়ে দামি এলপিজি এখন কোথায় পাওয়া যায়? গুগল করার দরকার নেই। গোটা বিশ্বে মহার্ঘ এলপিজি পাওয়া যাচ্ছে এ দেশেই। এক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকেও ছাপিয়ে গিয়েছে ভারত। কীভাবে? তাহলে বুঝতে হবে গণিত।
কীভাবে ভারতে এলপিজি বিশ্বের সবচেয়ে দামি, সেটা বোধগম্য করতে আপনাকে মুদ্রার ক্রয়ক্ষমতার হিসেবনিকেশ বুঝতে হবে আগে। সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক অর্থনীতির সঙ্গে সম্পর্কিত বিবিধ বিষয়। বলে রাখি, মুদ্রার ক্রয়ক্ষমতা অনুযায়ী ভারতে প্রতি লিটার পেট্রোলের দাম বিশ্বে তৃতীয় সর্বোচ্চ। ডিজেলের ক্ষেত্রে বিশ্বের 8 নম্বরে।
ক্রয়ক্ষমতা কী? সহজ ভাষায় ভারতে ১ টাকায় যে জিনিস কেনা যায় সেই টাকায় বেশি পাওয়া যাবে নেপালে। মানে নির্দিষ্ট অর্থে দেশীয় বাজারে কতটা এবং কী কী পণ্য কেনা যায়, সেটাই 'ক্রয় ক্ষমতা'। বিভিন্ন দেশের মুদ্রার ক্রয়ক্ষমতা ভিন্ন। আন্তর্জাতিক বাজারে মুদ্রার ক্রয় ক্ষমতা পরিবর্তিত হয়।
দুনিয়াজুড়ে বিভিন্ন দেশের মুদ্রা আন্তর্জাতিক বাজারে লেনদেন হয়। সেই হিসাবেই কোনও দেশের ক্রয়ক্ষমতা নির্ধারিত হয়। পাশাপাশি প্রতিটি দেশের মানুষের আয়ের পার্থক্য রয়েছে। একজন সাধারণ নাগরিকের ক্ষেত্রে ভারতে ১ লিটার পেট্রোলের দাম তাঁর দৈনিক আয়ের এক চতুর্থাংশ হতে পারে। তখন মার্কিন নাগরিকের ক্ষেত্রে হয়তো সেটা আয়ের সামান্য অংশ।
এভাবে ক্রয়ক্ষমতার সমতা নির্ধারণের সূত্রটি নির্ধারণ করা হয়। এতে বোঝা যায়, একটি দেশের নাগরিকের ক্রয়ক্ষমতা অন্য দেশে গেলে কতটা হতে পারে। উদাহরণ হিসেবে ভারতে ১০০ টাকার বিনিময়ে যে জীবনযাপন করা যায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেজন্য খরচ হতে পারে $4.55 (বিনিময় হার অনুযায়ী প্রায় ৩৪৫ টাকা)। অর্থাৎ, ক্রয়ক্ষমতা সমতার মাপকাঠিতে ১ ডলার ৭৫.৮৪ টাকার পরিবর্তে আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য মাত্র ২২ টাকা।
ক্রয় ক্ষমতা সমতার এই সূত্র অনুযায়ী বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল এলপিজি কিনছে ভারতবাসী। কারণ এর জন্য আন্তর্জাতিক বিনিময়মুদ্রায় ৩.৫ ডলার দিতে হচ্ছে। তুরস্ক এবং ফিজির মতো দেশেও সস্তা এলপিজি। পেট্রোলের জন্য ৫.২ ডলার এবং ডিজেলের জন্য ৪.৬ ডলার খরচ করতে হয় গড়পড়তা ভারতীয়দের।