শুক্রবার রাজ্য বাজেট পেশ করলেন অর্থ দফতরের প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। আগামী অর্থবর্ষে ১ কোটি ২০ লক্ষ কর্মস্থানের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এই বাজেটকে জয় বাংলা বাজেট আখ্যা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ দিন চন্দ্রিমার বাজেটের মাঝে স্লোগান দিয়ে বিধানসভাকক্ষ থেকে ওয়াকআউট করেন বিজেপি বিধায়করা। সংবাদমাধ্যমে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, 'সমস্ত কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলির নাম বদল করে দেওয়া হয়েছে। তার প্রতিবাদ করেছি।'
বাজেটে কর্মসংস্থান ও রাজস্ব আদায়ের দিশা রয়েছে বলে দাবি করেন রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর উপদেষ্টা অমিত মিত্র। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,'এক কথায় বলতে পারি, এটা জয় বাংলা বাজেট। সাধারণ মানুষের বাজেট, কৃষকের বাজেট, শ্রমিকের বাজেট, সবুজ সৃষ্টি ও দৃষ্টির বাজেট সর্বোপরি সামাজিক সুরক্ষার বাজেট। বিনা পয়সায় পড়াশুনো, লক্ষ্মীর ভান্ডার, স্বাস্থ্যসাথীর মতো এমন সুবিধা আর কোথাও নেই।'
কী রয়েছে বাজেটে?
- ফ্ল্যাট-বাড়ি কেনাবেচায় স্ট্যাম্প ডিউটিতে ২ শতাংশ ছাড় দেওয়া হয়েছে। ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই সুবিধা উপলব্ধ। ১০ শতাংশ ছাড় ছাড় সার্কেল রেটে। ফলে ফ্ল্যাট ক্রয় অনেক সস্তা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
- বৈদ্যুতিন ও সিএনজি চালিত গাড়ির রেজিস্ট্রেশন ফি মকুব। ২ বছর পর্যন্ত সড়ক করে (রোড ট্যাক্স) ছাড়। এতে ই-যান যাঁরা কিনবেন তাঁদের অতিরিক্ত খরচ অনেকটাই কমে গেল। এতে নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে বলে জানান অমিত মিত্র।
- লক্ষ্মীর ভান্ডারে ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ। ১ কোটি ৫৩ লক্ষ মহিলা পাচ্ছেন এই সুবিধা।
- শিক্ষা সেস মকুবের প্রস্তাব।
-স্বাস্থ্যসাথীর সুবিধা পাচ্ছেন সাড়ে ৯ কোটি মানুষ।
- খাদ্যসাথী প্রকল্পে ১০ কোটি মানুষকে বিনামূল্যে খাদ্যসামগ্রী।
- কৃষকবন্ধু প্রকল্পে ৭০ লক্ষ কৃষককে সহায়তা।
- ৪৮ লক্ষ গ্রামীণ আবাস নির্মাণ করা হয়েছে। আরও ৫ লক্ষ তপশিলি ও আদিবাসীদের জন্য নির্মাণের লক্ষ্য।
- নগরের উন্নতিতে ১৩ হাজার কোটি বরাদ্দ।
- স্কুল শিক্ষায় বরাদ্দ ৩৫ হাজার কোটি টাকা।
- পর্যটনের উন্নয়নে ৪৬৭ কোটি ৯৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দের
- ৩৪,১৩০ কোটি বরাদ্দ কৃষিতে।
- পরিকাঠামো ক্ষেত্রে ৬ গুণ বাড়ানো হয়েছে বরাদ্দ। ১০ হাজার ৪২২ কোটি টাকার প্রস্তাব।
- মাটি সৃষ্টি প্রকল্পে অনুর্বর জমিকে কাজে লাগানো হচ্ছে।
- স্কুলের পোশাক তৈরি হবে বাংলাতেই। সৃষ্টি হবে কর্মসংস্থান।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, মহামারির মধ্যেও বাংলার রাজস্ব আদায় বেড়েছে ৩.৭৬ গুণ। ৭৩ হাজার ৪৪১ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে সামাজিক প্রকল্পগুলিতে। সেই সঙ্গে বিজেপি বিধায়কদের বিক্ষোভ প্রসঙ্গে মমতার কটাক্ষ, ৯০ হাজার কোটি টাকা কেন্দ্রের কাছে বকেয়া। ওই টাকা মিটিয়ে আন্দোলন করা উচিত ছিল।
আরও পড়ুন- 'অবাস্তব কথা', মোদীর ২৪-এ প্রত্যাবর্তনের দাবি ওড়ালেন মমতা