এই ছবিতে একটা মানুষের কান দেখা যাচ্ছে। তবে বাস্তবে কোরও কান কাটা পড়েনি। তাহলে গাছের ডালে ঝুলছে যেটা, সেটা কী? উত্তর পেতে ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড ভালো করে দেখুন।
জানলে হয়তো অবাক হবেন, গাছের ডালে ঝুলে থাকা এই মানুষের 'কান' ১৯ এবং ২০ শতকে চিকিৎসার জন্যেও ব্যবহৃত হয়েছিল! আসলে এটি একটি ছত্রাক (Fungus)।
এই ফাঙ্গাস ইউরোপের গাছে জন্মায়। কেউ কেউ একে মানব কানের মাশরুমও বলে। এর বৈজ্ঞানিক নাম Auricularia auricula-judae। তবে সাধারণত একে জেলি ইয়ার (Jelly Ear) নামেই ডাকা হয়। এটি একটি বিশেষ ছত্রাক যা ইউরোপ জুড়ে বৃদ্ধি পায়।
উনিশ শতকে কিছু রোগের চিকিৎসার জন্য জেলি ইয়ার (Jelly Ear) ছত্রাক ব্যবহার করা হয়েছিল। এটি গলা ব্যথা, চোখের ব্যথা এবং জন্ডিসের মতো সমস্যাগুলি উপশম করতে ব্যবহৃত হতো। ইন্দোনেশিয়ায় এর চিকিৎসা শুরু হয় ১৯৩০-এর দশকে। জেলি ইয়ার (Jelly Ear) ছত্রাক ইউরোপে সারা বছর পাওয়া যায়।
সাধারণত চওড়া পাতাযুক্ত গাছ এবং গুল্মগুলির কাঠে এর জন্ম হয়। এটি প্রথম চিন এবং পূর্ব এশিয়ার দেশগুলিতে চাষ করা হয়েছিল। এই ছত্রাক যে কোনো ঋতু অনুযায়ী নিজেকে পরিবর্তন করতে পারে। জেলি ইয়ার (Jelly Ear) ছত্রাক নিজের ডিএনএও (DNA) পরিবর্তন করতে পারে।
উনিশ শতকে ব্রিটেনে বলা হয়েছিল যে, এটি কখনই খাওয়া যাবে না। কিন্তু পোল্যান্ডে মানুষ এটি খেতে শুরু করে। তবে কাঁচা জেলি ইয়ার (Jelly Ear) ছত্রাক মোটেই খাওয়ার যোগ্য নয়। এটিকে ভালো করে রান্না করতে হয়।
শুকানোর পর জেলি ইয়ার (Jelly Ear) ছত্রাক থেকে যথেষ্ট পরিমাণে পুষ্টিকর উপাদান মেলে। ১০০ গ্রাম জেলি ইয়ার (Jelly Ear) ছত্রাকে ৩৭০ ক্যালোরি রয়েছে, যার মধ্যে ১০.৬ গ্রাম প্রোটিন, ০.২ গ্রাম চর্বি, ৬৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট এবং ০.০৩% মিলিগ্রাম ক্যারোটিন রয়েছে। তাজা জেলি ইয়ার (Jelly Ear) ছত্রাকে প্রায় ৯০% আর্দ্রতা থাকে।