২০২১ সালের অগাস্টে আবিষ্কৃত একটি গ্রহাণু পৃথিবীর সঙ্গে সংঘর্ষের পথে রয়েছে বলে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী টেলিস্কোপগুলির মধ্যে একটি শেষ পর্যন্ত সেই আশঙ্কা তখনকার মতো বাতিল করে দেয়।
তবে সেই থেকেই 2021 QM1 নামের গ্রহাণুটি জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের বেশ মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে। ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি (ESA) এর মতে, 2021 QM1 গ্রহটিকে আঘাত করার সম্ভাবনা নিয়ে পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে।
বিজ্ঞানীদের হিসাব অনুযায়ী, ২০৫২ সালে এই গ্রহাণুটির সঙ্গে পৃথিবীর সংঘর্ষের সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে। এমনকি এর কক্ষপথের বেশ কয়েকটি পর্যবেক্ষণ এবং পুনঃগণনা করার পরেও এমনটাই অনুমান করেছিলেন বিজ্ঞানীরা।
এটি চিলির ইউরোপীয় সাউদার্ন অবজারভেটরির খুব বড় টেলিস্কোপে ধরা পড়েছিল। এই টেলিস্কোপ বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী অপটিক্যাল টেলিস্কোপগুলির মধ্যে একটি। তবে শেষ পর্যন্ত সংঘর্ষের আশঙ্কা কেটে যায়।
টেলিস্কোপটিকে ১৬০-ফুট-প্রশস্ত (৫০-মিটার) মহাকাশের শিলা খণ্ডকে ট্র্যাক করতে হয়েছিল। কারণ, এটি পৃথিবী থেকে এত দূরে সরে গিয়েছিল যে এটি শেষ পর্যন্ত ESA অনুসারে, "এখন পর্যন্ত নজরে পড়া সবচেয়ে দুর্বল গ্রহাণু" হিসাবে বিবেচিত হয়েছে।
অ্যারিজোনার টাকসনে মাউন্ট লেমন অবজারভেটরি দ্বারা এটি আবিষ্কার করার পরপরই বেশ কয়েকটি টেলিস্কোপ 2021 QM1 পর্যবেক্ষণ করেছে। প্রাথমিকভাবে, প্রতিটি নতুন পর্যবেক্ষণের সঙ্গে, এটি আরও বেশি নিশ্চিত বলে মনে হয়েছিল যে গ্রহাণুটি তিন দশকের মধ্যে "বিপজ্জনক ভাবে" পৃথিবীর কাছাকাছি আসতে পারে।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, ১৬০ ফুট চওড়া একটি গ্রহাণু যদি পৃথিবীতে আছড়ে পড়ে, তাহলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষে হিরোশিমায় আমেরিকা যে পারমাণবিক বোমা ফেলায় যে ধ্বংসলীলার সাক্ষী হয়েছিল মানব সভ্যতা, প্রায় তার সমান ক্ষতি হতে পারে।
একাধিক প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে বিজ্ঞানীরা গ্রহাণুর যাত্রা পথের ভবিষ্যত সম্পর্কে অনেক তথ্য পেয়েছেন। ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সির (ESA) বিজ্ঞানী রিচার্ড মোইসেল বলেছেন, ২০৫২ সালে এটি বিপজ্জনকভাবে পৃথিবীর কাছাকাছি চলে আসতে পারে। পৃথিবীর কাছাকাছি যত বেশি গ্রহাণু দেখা যাবে, নীল গ্রহের ঝুঁকি ততই বাড়ে।
সৌরজগত নিয়ে খুঁটিনাটি পর্যবেক্ষণ শুরু হওয়ার পর থেকে ১০ লক্ষেরও বেশি গ্রহাণু আবিষ্কৃত হয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ৩০ হাজার গ্রহাণু পৃথিবীর খুব কাছে দিয়ে বিপজ্জনক ভাবে বেরিয়ে গিয়েছে।