নাসার কিউরিসিটি রোভার মঙ্গল গ্রহে শুকনো মাটির ঢিবি এবং ফ্ল্যাকি পাথর দেখেছে। এগুলি প্রাচীনকালে লাল গ্রহে জলবায়ুর বড়সড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। রোভারের পাঠানো ছবিতে দেখা যাচ্ছে উঁচু উঁচু মাটির ঢিবি।
বিজ্ঞানীদের অনুমান, আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে মঙ্গলে জলের (বা জলের মতো কোনও তরল) স্রোত শুকিয়ে মাটির টিলা তৈরি হয়ে গিয়েছে। বিজ্ঞানীদের মতে, এগুলো কোটি কোটি বছর আগে মঙ্গল গ্রহের জলবায়ুতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত বহন করে।
রোভার আরও উপরে উঠতে থাকে এবং এই ঢিবিগুলোর ছবি অনেক উঁচু থেকে তুলেছে। নাসার জেপিএল বিজ্ঞানী অশ্বিন ভাসাভাদা বলেছেন যে, আমরা বছরের পর বছর ধরে লাল গ্রহে হ্রদের, জলের কোনও চিহ্ন দেখতে পাচ্ছি না। বরং, আমরা সেখানে প্রচণ্ড শুষ্ক জলবায়ুর অনেক প্রমাণ পেয়েছি।
নাসার জেপিএল বিজ্ঞানী বলেছেন যে, শুকনো ঢিবি, যার চারপাশে কখনও কখনও স্রোত প্রবাহিত হওয়ার চিহ্ন দেখা যায়। লক্ষ লক্ষ বছর আগে এই হ্রদগুলি কোনও বড়সড় আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে শুকিয়ে খটখটে হয়ে গেছে।
বিজ্ঞানীদের মতে, শিলার পরিবর্তনশীল খনিজের গঠন বিস্ময়কর! তাদের আরও ভালভাবে বোঝার জন্য, রোভার শীঘ্রই লাল গ্রহের পাথরের একটি নমুনা সংগ্রহ করে আনবে। এটিই হবে রোভারের পাঠানো শেষ নমুনা।
নাসার এই রোভারটি এমন শিলাও দেখেছে যেগুলির বেশ কয়েকটি স্তরে রয়েছে। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন যে, প্রাচীন জলের (বা জলের মতো কোনও তরল) স্রোত এখানে হ্রদ বা ছোট ছোট গর্তে আর একাধিক স্তরে ভরা পাথর তৈরি করেছে।
কিউরিওসিটি রোভারটি মঙ্গল গ্রহে ৫ আগস্ট তার ১০ম জন্মদিন উদযাপন করবে। এই রোভারটি এক দশক ধরে লাল গ্রহে রয়েছে। নাসার এই রোভারটি ধীরে ধীরে পুরনো হচ্ছে। যার প্রমাণ হিসেবে এর অ্যালুমিনিয়ামের চাকায় ছিদ্র দেখা গেছে।
২ জুন তোলা একটি ছবিতে এর একটি চাকার একটি ছিদ্র দেখা গেছে। তবে এতে কোনো সমস্যা হবে না বলে জানিয়েছে জেপিএল। এমনকি যদি এর চাকা সম্পূর্ণরূপে জীর্ণ হয়ে যায়, তবুও রোভারটির রিমের উপর ভর দিয়ে এগিয়ে যেতে পারে। নাসার রোভার বর্তমানে সালফেট নামক লবণাক্ত খনিজ দিয়ে ভরা কাদামাটি সমৃদ্ধ অঞ্চল থেকে একটি রূপান্তর অঞ্চলের মধ্য দিয়ে ভ্রমণ করছে।
সৌরজগতে উপস্থিত গ্রহগুলির মধ্যে বৃহস্পতি হল বৃহত্তম গ্রহ। এর আকার এত বড় যে, যদি সমস্ত গ্রহ একত্রিত করা হয়, তবুও এটি তাদের থেকে ২.৫ গুণ বড় হবে। বিজ্ঞানীদের মতে, সম্প্রতি দেখা গেছে যে এটি নিজের ভিতরে অনেক ছোট গ্রহকে গ্রাস করেছে।
'অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রো ফিজিশিয়ান' জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়েছে, গ্র্যাভিটি সায়েন্স মেশিন ব্যবহার করে মহাকাশযান জুনোর মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা বৃহস্পতি গ্রহের গঠনের সঙ্গে জড়িত উপাদান শনাক্ত করেছেন। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন যে বৃহস্পতি গ্রহের গর্ভে ধাতুর মতো উপাদান রয়েছে, যার পরিমাপ পৃথিবীর আকারের ১১ থেকে ৩০ গুণ পর্যন্ত। এই ধাতুগুলি গ্রহের কেন্দ্রের ঠিক কাছে রয়েছে।