আপনি যে ছবিটি দেখছেন তাতে পেনিস মাশরুম দৃশ্যমান। যাকে বৈজ্ঞানিক ভাষায় Phallus rubicundus বলে। পেনিস মাশরুম আসলে ছত্রাকের একটি প্রজাতি, যা স্টিঙ্কহর্ন পরিবারের অন্তর্গত। এটি প্রথম ১৮১১ সালে আবিষ্কৃত হয়েছিল।
এটি সাধারণত গ্রীষ্মমন্ডলীয় দেশগুলিতে বৃদ্ধি পায়। যেমন, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ ও পূর্ব আমেরিকা, চিন, জাপান, কোরিয়া, থাইল্যান্ড, ঘানা, কঙ্গো, কেনিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় পেনিস মাশরুমের দেখা মেলে।
সায়েন্স অ্যালার্ট নামে একটি সাইট তার সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেল থেকে তার ছবি প্রকাশ করেছে। শেয়ার করার মাত্র ১২ ঘন্টার মধ্যে ইনস্টাগ্রামে ৩৯০৯টি লাইক এবং ৭৬টি কমেন্ট জুড়েছে এই পোস্টের সঙ্গে। সংখ্যাটা দ্রুত বেড়ে চলেছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক এই মাশরুমের বিশেষত্ব কী, কেন এই সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় এই মাশরুমের ছবি ও তথ্য শেয়ার করা হল।
পেনিস মাশরুম যেকোন ধরনের ভেজা মাটি, লন, বাগান এবং আপনার বাড়ির পিছনের মাটিতে জন্মাতে পারে। ভারতের মধ্যপ্রদেশের উপজাতীয় গোষ্ঠী এটিকে ঝিরি-পিহিরি বলে। ভারিয়া এবং বাইগা উপজাতি গোষ্ঠীর মধ্যে এটি বেশ জনপ্রিয়। টাইফয়েড অর্থাৎ অন্ত্রের জ্বর সারাতে তারা এই মাশরুম ব্যবহার করে।
শুধু তাই নয়, এই আদিবাসীরা প্রসব বেদনার সময় গর্ভবতী মহিলাদের পেনিস মাশরুম ব্যবহার করে। এটি চিনি দিয়ে গুঁড়ো করে শুকানো হয়। এর পরে, গর্ভবতী মহিলা বা টাইফয়েডে আক্রান্ত রোগীকে দিনে তিনবার এক চা চামচ খাওয়ানো হয়।
এটি শুধুমাত্র ভারতে নয়, অস্ট্রেলিয়ার স্থানীয় আদিবাসীরা এটিকে কামোদ্দীপক হিসাবে কাজে লাগান। অর্থাৎ, পেনিস মাশরুম অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীদের কাছে যৌন শক্তি বাড়ানোর ওষুধ। তবে এর গন্ধ খুবই উৎকট! পেনিস মাশরুমের কটূ গন্ধে বেশিক্ষণ এর সামনে দাঁড়িয়ে থাকা সম্ভব নয়।
এর উচ্চতা সর্বোচ্চ ১৫ থেকে ১৮ সেন্টিমিটার। এর উপরের অংশের ব্যাস প্রায় ১.২ ইঞ্চি। পেনিস মাশরুমের উপরের অংশ বেশ পুরু আর নরম। দেখতে অনেকটা পুরুষাঙ্গের মতো। সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করার কারণ হল, বৃষ্টির পর অনেক দেশেই পেনিস মাশরুম গজাতে শুরু করেছে।
পেনিস মাশরুম প্রথম ১৮১১ সালে ফরাসি উদ্ভিদবিদ লুই অগাস্টিন গুইলাম বোস আবিষ্কার করেছিলেন। তিনি এটি যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ক্যারোলিনায় আবিষ্কার করেন। পরবর্তীতে উদ্ভিদবিদ ইলিয়াস ফ্রাইস এটিকে ফ্যালাস গণে স্থানান্তরিত করেন। তখন থেকেই এর প্রজাতি ও উপ-প্রজাতির নামের সামনে ফ্যালাস শব্দটি ব্যবহৃত হয়ে আসছ। যেমন, এর বৈজ্ঞানিক নাম Phallus Rubicandus।
পেনিস মাশরুমের শুধুমাত্র উপরের অংশ থেকে খারাপ গন্ধ নির্গত হয়। বিজ্ঞানীদের অনুমান, মশা এর দুর্গন্ধেই আকৃষ্ট হয়। তবে এই গন্ধেই কিছুক্ষণের মধ্যে মশা মরেও যায়। তাই কিছু দেশে বিজ্ঞানীরা পেনিস মাশরুমের দুর্গন্ধযুক্ত রাসায়নিককে বায়োকন্ট্রোল এজেন্ট হিসেবে ব্যবহার করতে চান, যাতে মশাবাহিত রোগ থেকে মানুষ বাঁচতে পারে।