Ghosts- Fact Or Fiction: ভূত কি সত্যিই আছে? গবেষণায় কী কী জেনেছেন বিজ্ঞানীরা?

Ghosts- Fact Or Fiction: ভূত নিয়ে মানুষের কৌতুহলের শেষ নেই। কেউ বলেন ভূত দেখেছেন, চোখে না দেখলেও অনেকেই নিজেদের নানা ভৌতিক অভিজ্ঞতার কথা বলেন। কিন্তু, ভূত কি সত্যিই আছে? তার কি কোনও প্রমাণ বিজ্ঞানীরা পেয়েছেন? এ নিয়ে গবেষণা করা অধ্যাপক-গবেষক-বিজ্ঞানীদের মতামত জেনে নেব।

Advertisement
ভূত কি সত্যিই আছে? গবেষণায় কী কী জেনেছেন বিজ্ঞানীরা?ভূত কি সত্যিই আছে? গবেষণায় কী কী জেনেছেন বিজ্ঞানীরা?
হাইলাইটস
  • ভূত নিয়ে মানুষের কৌতুহলের শেষ নেই।
  • অনেকেই নিজেদের নানা ভৌতিক অভিজ্ঞতার কথা বলেন।

Ghosts- Fact Or Fiction: ভূত নিয়ে মানুষের কৌতুহলের শেষ নেই। কেউ বলেন ভূত দেখেছেন, চোখে না দেখলেও অনেকেই নিজেদের নানা ভৌতিক অভিজ্ঞতার কথা বলেন। ভূত নিয়ে আলোচনা-গল্প শুরু হলে অনায়াসেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাবার হয়ে যেতে পারে! মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, মানুষ ভয় পেতে ভালবাসে। তাই ‘ভূত’ বা যে কোনও ‘ভৌতিক’ নিয়ে মানুষের আকাশছোঁয়া কৌতুহল!

কিন্তু, ভূত কি সত্যিই আছে? তার কি কোনও প্রমাণ বিজ্ঞানীরা পেয়েছেন? কারণ, এই বিষয়ে বিশ্বজুড়ে বিস্তর গবেষণা হয়েছে, এখনও চলছে। এই প্রবন্ধে ভূত আদৌ আছে কিনা, এ নিয়ে গবেষণা করা অধ্যাপক-গবেষক-বিজ্ঞানীদের মতামত জেনে নেব।

ভূত কি সত্যিই আছে?
২০২১ সালের একটি গবেষণায়, আমেরিকার ১০০০ জন প্রাপ্তবয়স্কদের ৪১% বলেন যে তারা ভূত বিশ্বাস করেন, ২০% বলেন তারা ব্যক্তিগত ভৌতিক অভিজ্ঞতার কথা বলেন। এই গবেষণা অনুযায়ী, শুধুমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই ৫ কোটিরও বেশি ভৌতিক ঘটনার উল্লেখ মিলেছে। বিভিন্ন দোকান-লাইব্রেরি-অফিসের সিসিটিভিতে একাধিক বিচিত্র ঘটনার ফুটেজ ধরা পড়েছে যেগুলির সঠিক ব্যাখ্যা দিতে পারেননি অনেকেই। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, কখনও ডেস্ক থেকে একটি বই নিজে থেকেই ছিটকে মাটিতে পড়ছে, কখনও বা অফিসের চেয়ার-টেবিল নিজে থেকেই এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় সরে যাচ্ছে।

Ghost

ভূত প্রসঙ্গে বিজ্ঞানীরা ঠিক কী বলছেন?
সাউদার্ন ইলিনয় ইউনিভার্সিটি এডওয়ার্ডসভিলের ক্লিনিকাল সাইকোলজিস্ট অধ্যাপক স্টিফেন হুপ, একটি প্রশ্নের জবাবে লাইভ সায়েন্সকে বলেন, “এটির একটি সাধারণ কারণ প্যারিডোলিয়া হতে পারে। এটি আমাদের মস্তিষ্কের অস্পষ্ট উদ্দীপনার মধ্যে অস্পষ্ট প্যাটার্ন, মানুষের মুখ-শরীরের অবয়ব খুঁজে পাওয়ার প্রবণতা। এটি অপোফেনিয়ার প্রভাব বলা যেতে পারে। অপোফেনিয়া হল সম্পর্কহীন জিনিসের মধ্যে অর্থপূর্ণ সংযোগ উপলব্ধি করার প্রবণতা। কাল্পনিক অবয়ব গড়ে তোলার প্রবণতা।”

ঘোস্টলি এনকোউন্টার্স: দ্য হন্টিংস অফ এভরিডে লাইফ
সমাজবিজ্ঞানী ডেনিস এবং মিশেল ওয়াসকুল তাঁর বই ‘ঘোস্টলি এনকোউন্টার্স: দ্য হন্টিংস অফ এভরিডে লাইফ’-এর জন্য অংশগ্রহণকারীদের ভৌতিক অভিজ্ঞতার সাক্ষাৎকার নেন, তখন অনেক অংশগ্রহণকারীই ভূত দেখেছেন কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত ছিলেন না। অংশগ্রহণকারীদের অনেকেই তাদের সঙ্গে ঠিক কী ঘটেছে, তা-ও স্পষ্ট করে বলতে পারেননি। ডেনিস এবং মিশেল ওয়াসকুল জানান, অংশগ্রহণকারীদের উত্তর অনেকটাই অনুমান ভিত্তিক। তবে তাঁরা প্রায় সকলেই একটা বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছিলেন যে তারা এমন কিছু অপ্রীতিকর অভিজ্ঞতা পেয়েছেন, যা ব্যাখ্যাতীত, রহস্যময় বা ভয়ঙ্কর কিছু।

Advertisement

Ghost

আইনস্টাইন তাপগতিবিদ্যার প্রচলিত ব্যাখ্যা
কেউ কেউ দাবি করেন যে, ভূতের অস্তিত্বের প্রমাণ আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের চেয়ে বিজ্ঞান ভিত্তিক গবেষণায় পাওয়া যায়। এটি প্রবলভাবে দাবি করা হয় যে, আলবার্ট আইনস্টাইন তাপগতিবিদ্যার (Thermodynamics) প্রথম সূত্রের উপর ভিত্তি করে ভূতের বাস্তবতার জন্য একটি বৈজ্ঞানিক ভিত্তির পরামর্শ দিয়েছিলেন। শক্তি তৈরি বা ধ্বংস করা যায় না, তবে শুধুমাত্র এর রূপ পরিবর্তন করা যায়। আমাদের মৃত্যুর পর আমাদের শরীরের শক্তির (আত্মা) কী হবে? সেটা কি কোনও ভাবে ভূত হিসেবে প্রকাশ পেতে পারে?

ঘোস্ট-হান্টিং যন্ত্রের কার্যকারিতা
অধ্যাপক স্টিফেন হুপের মতে, একজন ব্যক্তির মৃত্যুর পর, তার শরীরের শক্তি পরিবেশে মিশে যায়। শক্তি তাপ আকারে নিঃসৃত হয় এবং শরীরটি ধীরে ধীরে প্রকৃতিতে বিলীন হয়ে যায়। এমন কোনও শারীরিক "শক্তি" নেই যা মৃত্যুর পরেও জনপ্রিয় ঘোস্ট-হান্টিং যন্ত্রের মাধ্যমে সনাক্ত করার জন্য টিকে থাকে।

মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, যখন কোনও কারণে মানসিক চাপ-উদ্বেগ অত্যাধিক মাত্রায় বৃদ্ধি পায়, তখন তা নানা ভ্রমের সৃষ্টি করে। প্যারিডোলিয়া বা কাল্পনিক অবয়বকে বাস্তব হিসাবে মেনে নেওয়াটা এ ক্ষেত্রে খুব স্বাভাবিক ঘটনা। মুখে ‘ভূত’ বিশ্বাস করি না বলা ব্যক্তির অবচেতন মনেও ভৌতিক ঘটনার বা কোনও ব্যাখ্যাতীত ঘটনার ভয় তাড়া করতে পারে। শরীর, স্নায়ু দুর্বল থাকলে, মানসিক চাপ-উদ্বেগের ফলে অনেকেই নানা রকম ভ্রমের শিকার হতে পারেন।

পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের মত
মানসিক বিকার বা ভ্রম এক রকম। কিন্তু সিসিটিভি ক্যামেরায় যে সব বিচিত্র ঘটনার ফুটেজ ধরা পড়েছে, সেগুলি কীভাবে সম্ভব? পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের মালদা জেলার সহ সম্পাদক সুনীল কুমার সরকারের মতে, ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড বা তড়িৎচুম্বকীয় ক্ষেত্রে বা চুম্বকীয় ক্ষেত্রে শরীরে বিভিন্ন আকর্ষণ ধাতব জিনিসপত্রের স্থানান্তর সম্ভব। অনেক ক্ষেত্রেই আসল কারণ না জেনে তার পেছনে কোনও ভৌতিক কারণ রয়েছে বলে ব্যাখ্যা করা হয়। আজকাল অনেকেই ঘোস্ট-হান্টিং যন্ত্রের মাধ্যমে এই কায়দায় মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছেন। তবে, এর পেছনে সঠিক বিজ্ঞানভিত্তিক প্রাকৃতিক কারণ খুঁজে বের করতে মানুষকে আরও সচেতন করে তুলতে হবে।

POST A COMMENT
Advertisement