Success Story: ছোট্ট ঘরে শুরু, মাশরুম চাষের আয় হার মানাবে চাকরিকেও! কীভাবে শুরু করবেন?

বিভিন্ন রাজ্যেই এখন কৃষকরা মাশরুম চাষ করে বেশ ভাল লাভ করছেন। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও মাশরুম চাষের বিষয়টি তুলে ধরেন। আসলে, খুবই কম জায়গায় ও কম সময়ে অল্প বিনিয়োগে মাশরুম চাষ করা যায়। অন্য কৃষির তুলনায়, মাশরুম চাষে খরচের অনুপাতে লাভ বেশি।

Advertisement
ছোট্ট ঘরে শুরু, মাশরুম চাষের আয় হার মানাবে চাকরিকেও! কীভাবে শুরু করবেন?মাশরুম চাষ করবেন কীভাবে জেনে নিন।

বিভিন্ন রাজ্যেই এখন কৃষকরা মাশরুম চাষ করে বেশ ভাল লাভ করছেন। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও মাশরুম চাষের বিষয়টি তুলে ধরেন। আসলে, খুবই কম জায়গায় ও কম সময়ে অল্প বিনিয়োগে মাশরুম চাষ করা যায়। অন্য কৃষির তুলনায়, মাশরুম চাষে খরচের অনুপাতে লাভ বেশি। তাছাড়া অন্য কিছু চাষ করতে গেলে অনেক অভিজ্ঞতা লাগে। মাশরুম তেমনটা নয়। চাষবাসের ব্যাকগ্রাউন্ড নেই, এমন ব্যক্তিও শিখে নিয়ে করতে পারেন।

সাফল্যের কাহিনী

আজ আমরা হরিয়ানার কার্নালের বাসিন্দা মুনীশের বিষয়ে জেনে নেব। ৪ বছর আগে, খুব ছোট্ট একটি ঘরে মাশরুম চাষ শুরু করেছিলেন তিনি। আজ তিনি বড় বড় ৩টি শেড তৈরি করে মাশরুম চাষ করছেন। লক্ষ লক্ষ টাকা লাভ হচ্ছে।

বছর চারেক আগে, সুশীল নামে এক বন্ধু ও আরও ২ মাশরুম চাষির কাছে হাতেকলমে সমস্তটা শিখেছিলেন মুনীশ।

এরপর বাড়ির এক কোণে ১২ বাই ২৪ ফুটের একটি বড় ঘরে মাশরুম চাষ শুরু করেন। প্রথমবারেই মোটামুটি সাফল্য পান। কী কী ঠিক হয়েছে, কোথায় ভুল হয়েছে তা নিজেই বুঝতে পারেন। আর এটাও বোঝেন যে, একটি ঘর নয়, একসঙ্গে একাধিক ঘরে মাশরুম চাষ করলে, তবেই সংসার চালানোর মতো মোটা টাকা আয় করা সম্ভব। 

সেই মতো ২ বছর ধরে পরিশ্রম চালিয়ে যান মুনীশ। ধীরে ধীরে ৩ টি শেড বানিয়ে ফেলেন। তবে প্রথমেই নয়, লাভের মুখ দেখার পর অল্প অল্প করে সেই টাকা বিনিয়োগ করেই চাষের আকার বাড়িয়েছেন তিনি। 

মুনীশ জানান, চাষের জন্য সঠিক তাপমাত্রা আর্দ্রতা প্রয়োজন। শেডটি প্রথমে পলিথিন দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয় এবং তারপরে খড় দিয়ে। শেডের আকারের উপর খরচ নির্ভর করছে। প্রথমবারে শেড বাানানোয় খরচ হওয়ায় সেভাবে লাভ হবে না। কিন্তু দ্বিতীয় বছরে থেকে খরচ কমে যায় ও লাভ বাড়তে শুরু করে। 

মাশরুম চাষ করতে কি কি জিনিস প্রয়োজন?

মাশরুম জন্মাতে প্রথমেই যেটা লাগবে, সেটা হল কম্পোস্ট। তুষ, গমের খড়, ইউরিয়া এবং জিপসাম একত্রে মিশিয়ে কম্পোস্ট তৈরি করা হয়। অনেক ধরনের অণুজীব রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে জৈব পদার্থকে পচিয়ে এই মিশ্রণকে কম্পোস্টে রূপান্তরিত করে।

এটি একেবারেই জৈব পদ্ধতি। তারপর এই কম্পোস্টে বীজ বপন করা হয়। অক্টোবর থেকে মার্চ মাসকে মাশরুম চাষের জন্য উপযুক্ত বলে মনে করা হয়। এই সময়ের মধ্যে মাশরুমের দুইবার ফসল তোলা যেতে পারে।

Advertisement

মাশরুমের দাম ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত

মাশরুম চাষের জন্য সেরা তাপমাত্রা ১৫-২২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড এবং আপেক্ষিক আর্দ্রতা ৮০-৯০ শতাংশ হওয়া উচিত। মুনীশ বলেন, এই চাষে তেমন জল লাগে না। সময়ে সময়ে স্প্রে করা আর্দ্রতা বজায় রাখতে হয়।  আর সঠিক বাজারে আপনাকে মাশরুম পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে হবে। এই চাষে সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। প্যাকেট পিছু ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত দাম পাবেন।

অভিজ্ঞতার গুরুত্ব

মুনীশ বলেন, এই চাষে সময় ও অভিজ্ঞতা গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমবারের মতো চাষ করলে একটু-আধটু ভুল হবেই। তাতে হতাশ হয়ে হাল ছেড়ে দিলে চলবে না।

কম খরচ এবং ভাল লাভ

মুনীশের কথায়, কৃষকরা যদি বিভিন্ন শেডে কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে মাশরুম চাষ করেন তাহলে লাভের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। 

দুই ধরনের মাশরুম চাষ

দুই ধরনের মাশরুম চাষ হয়। একটি হল সিজনলাল মাশরুম, যা বছরের নির্দিষ্ট সময়ে হয়। অন্যটি হল সারা বছররের।

ফলে আপনাদেরও যদি ভিন্ন ধারার কৃষির ইচ্ছা থাকে, সেক্ষেত্রে মাশরুমের কথা ভাবতেই পারেন। তবে সবার আগে বিক্রির বাজারের সোর্স জানুন। তারপরে কোথা থেকে হাতেকলমে শেখা যাবে, সেই খোঁজ শুরু করে দিন। 

POST A COMMENT
Advertisement