নিজেকে ফিট রাখা পুরুষ এবং মহিলা উভয়েরই পছন্দের। পুরুষরা অনেকে সময় সময় বের করে চলে যান জিমে। কিন্তু যদি ঘরের মহিলাদের কথা বলি তাহলে তারা বিভিন্ন রকম কাজে কর্মে ব্যস্ত থেকে শেষমেষ খুব কম সংখ্যায় শরীরচর্চা সময় পান। কেউ কেউ বড় শহরে শরীরচর্চার দিকে নজর দিলেও বিশেষ করে গ্রামে-গঞ্জে অথবা রক্ষণশীল বাড়ির মহিলারা খুব একটা জিম, এ্যারোবিক্স ধরণের শরীরচর্চা দিকে খুব একটা ঝুঁকতে দেখা যায় না। কিন্তু কিছু না এমন মহিলা রয়েছেন, যাঁরা নিজেদের ঘরের কাজকর্ম সমস্ত সেরে তারপর নিজেদের আলাদা পরিচয় তৈরি করতে পেরেছেন।
আজ আমরা এমন একজনের কথা জানাব, যিনি রীতিমতো ঘরোয়া মহিলা। তিনি পরিবার-পরিজন দায়িত্ব সমস্ত সামলে নিজেকে এমন ফিট বানিয়েছেন, ৪৭ বছর বয়সে তাঁর এই চেহারা দেখে চমকে গিয়েছেন গোটা দুনিয়া। শরীর চর্চাকে এমন জায়গায় নিয়ে গিয়েছেন, তার মাসলের টাসল দেখে ঘাবড়ে গিয়েছেন অনেকেই। অন্যান্য শরীরচর্চাকারী অনেক পুরুষেরই চোখ টাটাচ্ছে তাঁর পেটের পেশি। তিনি নিজের ফিটনেস স্টোরি এবং ফিটনেস টিপস শেয়ার করেছেন। সকলের সঙ্গে আসুন আমরা জেনে নিই কীভাবে তিনি হয়ে উঠলেন এমন মোহময়ী।
৪৭ বছর বয়সে নিজের শরীর মেন্টেন রাখা মহিলার নাম কিরণ ডেম্বলা। তার নামের মধ্যে থাকা স্পার্কই হোক কিংবা অন্য কিছু, হায়দ্রাবাদের এই মহিলা কিরণ আটপৌরে গৃহবধূ ছিলেন। কিন্তু তিনি কিছু সময় আগে ফিটনেস সার্টিফিকেশন করেন এবং এখন তিনি সার্টিফাইড ফিটনেস কোচ হয়ে গিয়েছেন। তিনি অনলাইন এবং অফলাইন গাইডেন্স দেন। মিউজিকের শৌখিন কিরণ ৪২ বছর বয়সে প্রফেশনাল কোর্স করেন এবং এখন তিনি একটি ক্লাবে প্রফেশনাল ডিজে হিসেবে নিজের পরিচিতি তৈরি করেছেন।
কিরণ aajtak.in কে জানিয়েছেন যে চার বছর বয়সে তিনি সংগীতের প্রোগ্রাম শুরু করেন। তার ১৯৯৯ সালে বিয়ে হয়। পরিবার এবং অন্যান্য দায়িত্বের মধ্যে চাপা পড়ে সংসার এবং গার্হস্থ্য জীবন যাপন শুরু করেন। ২০০৩ সালে মেয়ে এবং তারপর ছেলে হয়। কিছু সময় পরে তাঁর মস্তিষ্কে রক্ত জমে যায়। যার কারণে তিনি অনেক দিন মেডিকেশনে ছিলেন। এরপর বাচ্চাদের দেখভাল পারিবারিক দায়িত্ব এবং মেডিকেশনের কারণে তার ওজন ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে এবং ৭৪ কিলো হয়ে যায়। এরপর তিনি যেভাবে তার বাচ্চাদের বড় করতে থাকেন। আস্তে আস্তে রোজকার ঝুট-ঝামেলা কমতে থাকে।
তখন তিনি ঠিক করেন একটু ওজন কম করা যায় কি না, এরপর তিনি ঘরের কাছে একটি জিম জয়েন করেন। এবং গিয়ে হালকা এক্সেরসাইজ করতে থাকেন। এরপরে অনেকের সঙ্গে দেখা হয়, যার মধ্যে তিনি ফিটনেসের বিষয়ে আরও কথাবার্তা শুরু করেন। যা তার মস্তিষ্কে গভীরভাবে প্রভাব ফেলে। এরপর তিনি নিজের ওজন কমানোর জন্য পরিশ্রম বাড়িয়ে দেন এবং ধীরে ধীরে কমতে থাকে। এরপর যিনি ফাংশন সহ অন্য জায়গায় গেলে তাঁকে স্লিম লাগছে বলে অনেকে প্রশংসা শুরু করেন। এরপর তিনি আরও মোটিভেশন পেয়ে যান। এরপর তিনি ভাবেন যে কিছু আলাদা করা যায়। এরপর তিনি মাসল বানানোর কথা চিন্তা করেন এবং অল্প সময়ের মধ্যে সিক্স প্যাক আবস বানিয়ে ফেলেন। এরপর লোকাল ফিটনেস ব্র্যান্ড হয়ে যান। তিনি প্রায় এক বছরের ২৪ কিলো ওজন কমিয়ে দেন। আরও জানা গিয়েছে যে তিনি জানান যে, নিজেকে ট্রানসফর্ম করার আগে ফিটনেস কোর্স করে নেন।
আজকের দিনে হায়দ্রাবাদের ৩টি বড় জিমের মালিক এবং যেখানে বহু সেলিব্রিটি তাঁর কাছে ট্রেনিং নেন। যার মধ্যে বাহুবলী মুভি ডিরেক্টর রাজামৌলি এবং নম্রতা ভাটিয়া শামিল রয়েছেন ওয়ার্কআউটে।
তাঁর ওয়ার্কআউট ডায়েট কী?
কিরণ জানান তিনি জানতেন যে, মহিলাদের মাসল বানানোর জন্য প্রোটিন ফুড খাওয়া জরুরি। এ কারণে তিনি পাঁচবার খাবার খেতেন এবং খাওয়ার মধ্যে প্রোটিন ফুড সেবন করতেন। চিকেন, ডিম, মাছ, ডাল, ছিল। এছাড়া ফাইবার এর জন্য সবুজ সবজি, সেদ্ধ সবজি ডায়েটে শামিল করেন। সময়ে সময়ে তার চেহারা বদলাতে থাকে। এরপর তিনি অ্যাবস বানানোর কথা ঠিক করে নেন। ওজন বেশি তুলতে শুরু করেন। তিনি এখন রোজ ১২ ঘন্টা এক্সেরসাইজ করেন এবং ঘরের সমস্ত কাজ যেমন বাসন মাজা ঝাড়ু দেওয়া ঘর মোছা নিজেই করেন। যাতে তিনি দিনভর একটিভ থাকেন।