চলতি মাসে রানওয়ে মেরামতির কারণে বাগডোগরা বিমানবন্দরে ব্যাহত হতে চলেছে বিমান পরিষেবা। সেই সঙ্গে বাতিল উত্তর থেকে দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে চলাচলকারী তিনটি ট্রেন। এই পরিস্থিতিতে যাত্রীদের ভরসা বলতে বাস। আর ট্রেনের এসি কোচ। আর যাত্রী সামলাতে হিমশিম বাসগুলি।
ইতিমধ্যে অধিকাংশ বেসরকারি লাক্সারি ভলভো বাসের ১৫ দিনের বুকিং আগাম সারা। কিন্তু যাত্রী চাহিদা বাড়তেই বেসরকারি বাস পরিচালনাকারী কোম্পানিগুলিও প্রতিদিন নিজেদের ইচ্ছেমতো ভাড়ায় টিকিট বিক্রি করছে। যদিও বাসের ভাড়া বাড়ানো হয়নি বলে দাবি বাস ওনার্স এবং বুকিং এজেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের।
কোভিড পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে উত্তরবঙ্গের পাহাড়-ডুয়ার্সে ভিড় বেড়েছে পর্যটকদের। তাছাড়া কর্মসূত্রে অনেকেরই বড় অংশ নির্ভর বিমানের ওপর। কিন্তু চলতি মাসে ১৫ দিন বাগডোগরা বিমানবন্দরে বিমান পরিষেবা বন্ধ থাকার ঘোষণা হতেই পর্যটকদের ভিড় বেড়েছিল ট্রেন পরিষেবার ওপর।
কিন্তু আচমকাই ৯ থেকে ১২ এপ্রিল উত্তর থেকে দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে সংযোগকারী তিনটি ট্রেন বাতিল করেছে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে। আর এতেই পর্যটক থেকে শুরু করে স্থানীয় যাত্রীদের বড় অংশের ভরসা উঠে আসছে বাস পরিষেবার ওপর। জানা গিয়েছে ইতিমধ্যেই যে ১৫ দিন বিমান পরিষেবা বন্ধ থাকবে। সেই সময় অধিকাংশ বেসরকারি লাক্সারি ভলভো বাসগুলির বুকিং প্রায় ৯৫ শতাংশ সমাপ্ত। এ ছাড়াও সাধারণ স্লিপার ক্লাস ডিলাক্স বাসগুলিতেও চাহিদা বেড়ে গিয়েছে।
জানা গিয়েছে শিলিগুড়ির জংশনের তেনজিং নোরগে বাস টার্মিনাস থেকে প্রতিদিন বিহার আসাম এবং কলকাতা রোড মিলিয়ে কমবেশি প্রায় একশোর বেশি বাস চলাচল করে। এই বাস গুলির টিকিট প্রত্যেকটি বাস কোম্পানির কাউন্টার থেকে মেলে। তাছাড়াও বেসরকারি অ্যাপ কোম্পানিগুলি এই বাসের টিকিট বিক্রি করছে। এদিকে যাত্রী চাহিদা বেড়ে যেতেই এই অ্যাপ কোম্পানিগুলি প্রতিদিন ভাড়ার তালিকা পাল্টে নতুন নতুন দামে টিকিট বিক্রি করছে। জানা গেছে সাধারণত শিলিগুড়ি থেকে কলকাতা যাওয়ার জন্য বেসরকারি নন এসি স্লিপার কিংবা সিটের বাস ভাড়া ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা । সাধারণ ভলভো বাসের ভাড়া ১১৫০ টাকা , ভলভো মাল্টি এক্সেল বাসের ভাড়া ১৩০০ থেকে ১৫০০ টাকা এবং ভলভো মাল্টি এক্সেল সেমি স্লিপার বাসের ভাড়া ১৫০০ থেকে ১৮০০ টাকা প্রায়। তবে বর্তমানে চাহিদা বাড়তেই মাঝে মধ্যে অনলাইনে দাম বাড়িয়ে টিকিট বিক্রি করছে অ্যাপ কোম্পানিগুলি।
বিষয়টি নিয়ে শিলিগুড়ি বাস ওনার্স এবং বুকিং এজেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সন্তোষ সাহা বলেন, বিমান পরিষেবা বাতিল হতেই ভলভো, সেমি স্লিপার, মাল্টি এক্সেল গাড়িগুলির চাহিদা বেড়েছে। আসলে মানুষ চায় আরাম করে স্বাচ্ছন্দ্যে নিজের গন্তব্যে পৌঁছতে। তাই ইদানীং ভলভো বাসের চাহিদা বেড়েছে। তবে জ্বালানির দাম বাড়লেও যাত্রী পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে ভাড়া বাড়ানো হয়নি। কিন্তু রাজ্য সরকারের কাছে আমাদের আবেদন যাতে বিষয়টি দেখা হয়।
অন্যদিকে বিমান পরিষেবা বন্ধের সময় কালে বেসরকারি লাক্সারি ভলভো গাড়ির চাহিদা বাড়লেও সূত্রের খবর এখনও পর্যন্ত সরকারি বাসের সেই অর্থে যাত্রীদের ভিড় নেই। জানা গিয়েছে, প্রতিদিন শিলিগুড়ি জংশনের তেনজিং নোরগে বাস টার্মিনাস থেকে দুটি বাস কলকাতা যায়। এর মধ্যে একটি সাধারণ রকেট পরিষেবা এবং অন্যটি এসি রকেট পরিষেবা। এছাড়াও কোচবিহার, আলিপুর ও ময়নাগুড়ি থেকে সরাসরি কলকাতার জন্য সরকারি বাস পরিষেবা রয়েছে।