চা বাগানে কর্মরত শ্রমিকদের সাথে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ তুলে চা শ্রমিকদের অধিকার বুঝিয়ে দিতে প্রতি ব্লকে চা শ্রমিকদের নিয়ে ক্লাস শুরু করলো তৃণমূল কংগ্রেস। আইএনটিটিইউসি প্রভাবিত চা শ্রমিক সংগঠনের ব্যানারে শনিবার থেকে শুরু হয়েছে কুমারগ্রাম ব্লকের ১২ টি চা বাগান ১৩ টি ইউনিট নিয়ে দুদিনের কর্মশালা।
রাজাভাতখাওয়াতে উপস্থিত হয়েছেন ব্লকের ১৩ টি চা বাগান ইউনিট থেকে ৬০ জন নেতা কর্মী। জেলা সভাপতি প্রকাশ চিকবরাইক, জেলা সভাধিপতি শিলা দাসসরকার সহ চা বাগানে দলের ট্রেড ইউনিয়নের অভিজ্ঞ নেতারাও রয়েছেন। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত এই ক্লাস চলছে। নতুন টি প্ল্যানটেশন এক্টে ,কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
চা শ্রমিকদের অধিকার ও কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনা হাতে কলমে বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে চা আইনের টেকনিক্যাল দিকগুলো। প্রতিটি বাগান থেকে ইউনিটের যে নেতারা এসেছেন, তাদের পরিস্কার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, বাগানে ফিরে গিয়ে প্রতিটি চা শ্রমিকদের বিষয়গুলি বুঝিয়ে দেওয়া। উল্লেখ্য, কুমারগ্রাম চা বাগান থেকে শ্রমিক আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে উঠে এসে বর্তমানে তৃণমূলের আলিপুরদুয়ার জেলা সভাপতি প্রকাশচিক বরাইক।ইতিমধ্যেই তিনি জেলার প্রতিটি চা বাগানে যাচ্ছেন।প্রতিটি চা বাগানের মালিকদের সতর্ক করেছেন। রবিবার প্রকাশচিক বলেন, চা বাগান শ্রমিকরা খুব সহজ সরল। তাদের সহজেই ঠকানো যায়। এবার তা বন্ধ হবেই।
কেন্দ্রীয় সরকার ইতিমধ্যেই চা আইনের কয়েকটি ধারা নিষ্ক্রিয় করে চা শিল্পকে আর কিছুটা ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছে। পাশাপাশি পিএফ নিয়ে সংকট রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক সাহায্য পায়নি চা শিল্প।তবে উত্তরবঙ্গের সবকটি চা বাগানের জন্য কাজ করছে রাজ্য সরকার। খুব সহজ ভাষায় প্রতিটি কর্মশালা থেকে বিষয়গুলি তুলে ধরা হবে। চা বাগান থেকে দাবি আদায় না হলে আন্দোলনেও নামবে চা শ্রমিকরা।
পাশাপাশি রাজ্য সরকার চা শ্রমিকদের জন্য কি কাজ করেছে তাও বিস্তারিত ভাবে উঠে আসবে কর্মশালা থেকে।" প্রকাশ চিকবড়াইক বলেন, বিজেপির মত একটি দল রয়েছে। যারা প্রতিটি নির্বাচনের আগে আমাদের কাজকে তাদের কাজ বলে চা বাগানে প্রচার করে। কেন্দ্রের নয়া টি এক্টে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ধারাকে নিষ্ক্রিয় করে দেবার অভিযোগ তুলেছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। যা তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে চা বলয়ে।
পাশাপাশি চা আমদানি রপ্তানি নীতি,চায়ের দাম সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে চা মালিকদের একাংশে। নেপালের দুনম্বরি চা নিয়ে ইতিমধ্যেই উত্তরবঙ্গের চা মহলের একাংশ সরব হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, গত ৭ বছরে কার্যত কেন্দ্রীয় সরকারের কোন আর্থিক সাহায্য মেলেনি চা শিল্পে।চা বিশেষজ্ঞ দের একাংশ ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের টি বোর্ডের কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
আইএনটিটিইউসির রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, প্রতিটি চা বাগানের ইউনিট নেতাদের কাছে আবেদন, তারা শিবিরগুলিতে মনোযোগ দিক। চা শ্রমিকদের অধিকার আন্দোলনে তারাই মূল ভিত্তি। আপাতত দুদিনের শিবির হলেও এরপরই ফের রিভিউ বৈঠক হবে। প্রকাশবাবু বলেন, কর্মীদের কোনরকম ফাঁকিবাজি আমরা বরদাস্ত করবো না। ইতিমধ্যেই ১৫ টি চা বাগান ঘুরে,বাগানের মালিকের সাথেও কথা হয়েছে।জেলার ৬৩ টি চা বাগানের ইউনিট নিয়ে ধাপে ধাপে শিবির চলবে।