উত্তরের পাখিরালয়গুলিতে উদ্বেগজনকভাবে কমছে পরিয়ায়ী পাখির সংখ্যা। বিশেষ করে আলিপুরদুয়ারের নারারথলি এবং কোচবিহারের বিখ্যাত রসিকবিলে পরিযায়ীর সংখ্যা কমেছে চলতি শীতে। যা নিয়ে কপালে ভাঁজ পরিবেশপ্রেমীদের।
সম্প্রতি নতুন বছরের জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে বনবিভাগ ও পশ্চিমবঙ্গ জীববৈচিত্র্য় পর্ষদের সহযোগিতায় উত্তরবঙ্গের দুটি জলাশয়ে পরিযায়ী পাখি নিয়ে সমীক্ষা করা হয়। হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশন (HNAF) এই সমীক্ষা করে।
উত্তরবঙ্গের দুটি জলাশয়ে চলে সমীক্ষা। আলিপুরদুয়ারের নারারথলি ও কোচবিহারের রসিকবিলে। সমীক্ষা শেষে ন্যাফ একটি প্রাথমিক হিসেবও দিয়েছে। তাতেই পাওয়া গিয়েছে এই চাঞ্চল্য়কর তথ্য।
ন্যাফের কো-অর্ডিনেটর অনিমেষ বসু সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, গত বছরের তুলনায় আলিপুরদুয়ারের নারারথলি জলাশয়ে পাখির প্রজাতি বেড়েছে। তবে মোট সংখ্যায় এবার কম সংখ্যায় পরিযায়ী পাখি এসেছে। যে প্রজাতিগুলি নারারথলি ও রসিকবিলে এ বছর প্রথম এসেছে সেই পাখিগুলি অবশ্য় ইতিমধ্যে জেলার অন্য় জলাশয়েও দেখা গিয়েছে বলে সমীক্ষকরা জানিয়েছেন।
জলাশয় ও বিভিন্ন ঝোরায় বিষ বা বিদ্যুতের শক দিয়ে মাছ ধরা, সংরক্ষিত বনাঞ্চলে পিকনিকের দাপট এবং জলাশয়ে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে পরিযায়ী পাখিদের খাবারে টান পড়ছে। ফলে শীতের অতিথিদের আগমন কমছে বিভিন্ন জলাশয়ে।
সমীক্ষায় প্রাথমিকভাবে পাওয়া গিয়েছে, রসিকবিলে এ বছর ৪০টি প্রজাতির ৫০০০ পাখি এসেছে। গতবছর এই বিলে ৪৭টি প্রজাতির ৬০০০ পাখি এসেছিল। সাতটি প্রজাতির পাখি যেমন এবার কম এসেছে তেমনি পাখির সংখ্যা কমেছে প্রায় এক হাজার।
নারারথলির পরিসংখ্যানটিও একইরকম। গতবছর সেখানে ৩৩টি প্রজাতির ১৬০০টি পাখি এসেছিল। এবছর পাখির প্রজাতির সংখ্যা বাড়লেও মোট সংখ্যা কমেছে। নারারথলিতে এবছর ৪০টি প্রজাতির ১২০০টি পাখি এসেছে। সংখ্যা কমলেও এই জলাশয় সাতটি নতুন প্রজাতির পরিযায়ী এসেছে। কোচবিহারের রসিকবিল গোটা রাজ্যে পরিযায়ী পাখিদের অন্য়তম আস্তানা ছিল। গত ১০ বছরের তুলনায় এখন অনেক কম প্রজাতির পাখি আসছে এই বিলে।