করোনা সংক্রামিত হয়ে বাবা,মা দুজনের ঠাঁই হয়েছে সেফ হোমে। করোনা আক্রান্ত দম্পতির কোলের শিশু সন্তানটি দিনভর মা,বাবাকে খুঁজেই চলেছে। গত কয়েকদিন ধরেই বাবা, মা কারুর দেখা নেই। মা বাবার দেখা না পেয়ে পরিবারের চার শিশু এক রকম অনাথের জীবন যাপন করছে।
চার শিশুর পাশে দাঁড়িয়েছে ব্লক প্রশাসন, স্থানীয় চা বাগানের শ্রমিক মহল্লা, তৃনমুল নেতৃত্ব। কোলের শিশুটিকে সামল দিতে হিমশিম অবস্থা ব্লক প্রশাসনের। বাগানের আদিবাসী পরিবারের মহিলারাই শিশুটিকে বুকের দুধ খাওয়ানো থেকে ঘুম পাড়ানো, স্নান করিয়ে দেওয়া থেকে শুরু করে যাবতীয় দ্বায়িত্ব পালন করছে।
পরিবারের বড় ছেলের বয়স মাত্র ১২ বছর। পরের দুজনের বয়স যথাক্রমে ১০ এবং ৬ বছর। সবচেয়ে ছোটটির বয়স মাত্র ২ বছর। এক সাথে চার আদিবাসী শিশুকে সামলে রাখাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে কুমারগ্রাম ব্লক প্রশাসন থেকে শুরু করে স্থানীয় আদিবাসী মহল্লার কাছে।
চার শিশুর তিন বেলার খাওয়ার ব্যবস্থা, নিরাপদে রাতের ঘুম, চার শিশুকে দিনভর চোখে চোখে দেখে রাখার দ্বায়িত্ব সমস্ত কিছুই এখন ব্লক প্রশাসন ও স্থানীয় বাসিন্দাদের উপর নির্ভর করছে। ভারত-ভুটান এবং অসম-বাংলা সীমান্তের শেষ প্রান্তে অবস্থিত কুমারগ্রাম চা বাগানের আদিবাসী পরিবারের চার শিশুকে নিয়েই ব্যস্ত গোটা চা বলয়।
বর্তমানে করোনা আক্রান্ত এই দম্পতিকে কুমারগ্রামের বারবিশার একটি সেফ হোমে রাখা হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরেই তাদের ঠিকানা বারবিশার সেফ হোম। তবে বাবা,মা করোনায় আক্রান্ত হলেও চার শিশুর করোনা টেষ্টের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। এই পরিস্থিতিতে করোনা আক্রান্ত বাবা,মাকে সেফ হোমে নিয়ে যাওয়া হলেও চার শিশুকে বাড়িতেই রাখা হয়েছে।
তৃণমূল কংগ্রেসের এসটি সেলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক লুইস কুজুর বলেন, আমি এই বাগানেই থাকি। আমি তিনদিন ধরেই এই শিশুদের দেখাশোনা করছি। বাগানের মহিলারা চার শিশুকে নজরে রাখছেন। এই চার শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ খাবার দেওয়া হচ্ছে।
কুমারগ্রামের বিডিও মিহির কর্মকার জানান আমি ওই চা বাগানে গিয়েছিলাম। ওই চার শিশুর পরিস্থিতি খুবই করুন।তবে ওই চার শিশুর পাশে দাঁড়িয়েছে গোটা আদিবাসী মহল্লা।
তাঁরাই ওই শিশুর দেখভাল করছে। সময় মতো খাবার দেওয়া স্নান করিয়ে দেওয়া। সমস্ত কিছু বাগানের মহিলারাই করছে। আমি প্রশাসনের তরফ থেকে ওই চার শিশুর জন্য দুধ,বিস্কুট, ডিম, রুটি, চাল, ডাল সমস্ত কিছু দিয়ে এসেছি।
আমি এলাকার মহিলাদের ধন্যবাদ জানাই। নিজেদের পরিবার বাদ দিয়েও ওই চার শিশুর জন্য তারা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে।