পাহাড়ে টয়ট্রেনের টিকিট নেই। কালীপুজো পার করেও পর্যটনের মরশুমে টয় ট্রেনের টিকিট পেতে সমস্য়ায় পড়তে হচ্ছে পর্যটকদের। এর মধ্যে আবার লাইন ধসে যাওয়ায় টয়ট্রেনের যাত্রায় বিঘ্ন ঘটেছে। ফলে সবটা নিয়ে একটা অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আশা করা গিয়েছিল শিলিগুড়ি থেকে আলিপুরদুয়ার বিকল্প ভিস্তাডোম ট্রেনের চাহিদা বাড়বে। কিন্তু আসলে তা হচ্ছে না। টয় ট্রেনের যেখানে হাহাকার, সেখানে ভিস্তাডোম কোচ রোজই খালি যাতায়াত করছে। ফলে এই ট্রেন নিয়ে বিকল্প চিন্তা ভাবনা করার সময় এসেছে বলে মনে করছে রেলকর্তারা।
বিকল্প ভাবনা হিসেবে আলিপুরদুয়ারের বদলে এটি নিউ কোচবিহার পর্যন্ত রুট বাড়ানো যায় কি না, সে বিষয়ে চিন্তা ভাবনা করা শুরু হয়েছে রেলের তরফ থেকে। পাশাপাশি ট্রেনের সংখ্যাও বাড়ানোর বিষয়ে তারা চিন্তা-ভাবনা করছেন।
আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের ডিআরএম দিলীপকুমার সিং সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ভিস্তাডোম নিয়ে দীর্ঘকালীন চিন্তাভাবনা রয়েছে। পুজোর সময় সম্ভবত চাহিদা বাড়বে। তাহলে কোচের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হবে এবং রুট বাড়িয়ে নিউ কোচবিহার পর্যন্ত চালানোর বিষয় চিন্তা ভাবনা চলছে।
বছরখানেক আগে বহু ঢাকঢোল পিটিয়ে রমরমিয়ে শুরু হয়েছিল শিলিগুড়ি-আলিপুরদুয়ার পর্যটন স্পেশাল ভিস্তাডোম কোচের চলাচল। ২০২১ সালের ২৮ অগাস্ট এনজেপি থেকে মঙ্গলবার, শনিবার ও রবিবার চালানো শুরু হয়। ট্রেনটি। দ্বিতীয় ধাপে যাতায়াতের দিন সংখ্যা বাড়িয়ে দ্বিগুণ করা হয়। সে সময়ে বৃহস্পতিবার ছাড়া সপ্তাহে ছয় দিনই ট্রেনটি চলত।
গত বছর পুজোর অনুষ্ঠানে ৭ দিনে ভিস্তাডোম চলেছে। প্রথম দিকে ভালই চাহিদা ছিল। ফলে বাড়ানো হয়েছিল যাতায়াতের দিন। এরপর বক্সা- জয়ন্তীর মত ডুয়ার্সের ফরেস্টকেন্দ্রগুলিতে রাত্রিবাস বন্ধ হওয়ায়, এই রুটে চাহিদা কমেছে বলে রেলের ধারণা।
শুধু ট্রেন নয় ডুয়ার্সের দিকেই এখন আকর্ষণ অনেক কম। পাহাড়ে যে রকম ভিড় থাকে, ডুয়ার্সে তেমন চাহিদা এখন নেই। তাই যে কেউ যে কোনও সময়ের বুকিং চাইলেই পেতে পারেন। পুজোর মরশুম দোরগোরায়, এখনও ডুয়ার্সে হাউসফুল বোর্ড ঝোলানোর সময় আসেনি।
তবে রুট বাড়িয়ে যদি নিউ কোচবিহার পর্যন্ত করা হয়, তাহলে ফের ভিস্তাডোম ট্রেনটি স্বমহিমায় ফিরবে বলে আশা করছেন রেলকর্তার। এই লক্ষ্য়ে তাঁরা কাজও শুরু করেছেন। চলছে সমীক্ষা।
পাশাপাশি ভিস্তাডোম ট্রেনের ভাড়া কমানো এবং পর্যটকদের জন্য কিছু সুবিধা দেওয়ার দাবি উঠেছে। হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্রাভেল ডেভলপেন্ট নেটওয়ার্কের তরফে পার্থ গুহ জানান, ভাড়াটা এই মুহূর্তে বেশি। পাশাপাশি অন্য় কোনও বাড়তি সুবিধা পর্যটকদের জন্য দেওয়া হয়নি। ফলে আকর্ষণ কম। ভিস্তাডোমের ভাড়া এসি ৭৭০ টাকা, এবং নন এসি ৩১০ টাকা।
পর্যটন সার্কিটের দাবি, মাদারিহাটে স্টপেজ দিয়ে যদি সেখানে একটু ঘুরিয়ে আনা যায়, কিংবা চা-কফি স্ন্যাকসের ব্যবস্থা করা যায়, তাহলে আকর্ষণ আরও বাড়তে পারে।
সেই সঙ্গে ভিস্তাডোমের সময় যদি পিছিয়ে দার্জিলিং মেল-কাঞ্চনকন্যার মতো ট্রেনগুলি এনজেপিতে ঢোকার পর করা যায়, তাহলে অনেকেই সরাসরি নেমে এই ট্রেনে আলিপুরদুয়ার চলে যেতে পারে। এ নিয়ে তাঁরা দাবিও জানিয়েছেন রেলের কাছে।