প্রতি বছর এ সময় আম ঢুকে পড়ে বাজারে। আমের দামদরে কান পাতা দায় হয়ে পড়ে। অথচ এবার বাংলা ক্যালেন্ডারে জৈষ্ঠ মাস পড়ে গেলেও আমের দেখা নেই। যেটুকু যা আছে তাকে আম বলা চলে না। কেন এই সমস্যা? তাহলে কী এবার আম মিলবে না বাজারে?
এমনিতেই আমের ফলন এবার কম, বাজারে আমের ঘাটতি দেখা দিয়েছে । সাধারণত এই সময় বাজার দখল করে থাকে মালদার আম। কিন্তু, এখন মালদারর বাজারেই উল্টো নদিয়ার আম বিক্রি হচ্ছে।
আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনার কারণে মালদহে আমের ফলন অর্ধেক হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেই কারণে এ বছর আমের ঘাটতি দেখা দিতে পারে বলেই আশঙ্কা করছে বিশেষজ্ঞমহল। আর এর ফলে স্বাভাবিকভাবেই দাম বাড়তে পারে আমের।
কেন এমন পরিস্থতি? ঘুর্ণিঝড় থেকে শুরু করে তাপপ্রবাহ, শিলাবৃষ্টি এ বছর প্রচুর আম নষ্ট করে দিয়েছে। যার ফলে ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন আম চাষিরা। এই অবস্থায় বাজারে আমের দাম বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আমচাষিরা জানিয়েছেন, আমে এবার প্রচুর মুকুল এসেছিল। গুটিও তৈরি হয়েছিল । কিন্তু আবহাওয়ার খামখেয়ালি কারণে তা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। কাঁচা অবস্থাতেই প্রচুর অপরিপক্ক আম ঝরে গিয়েছে।
ফলে ফলনও অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। চাষিদের তা আশাহত করেছে। এখন এই অবস্থায় আম চাষের খরচ উঠবে কিনা তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন আম চাষিরা।
রাজ্যের মধ্যে ফলনের পরিমাণে মালদা জেলায় সবচেয়ে বেশি পরিমাণে আম উৎপাদন হয়। নিজের রাজ্যের আমের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বাইরেও পাঠানো হয়। কিন্তু এবার আমের ফলনে ঘাটতি দেখা গিয়েছে।
মালদায় ৩০ হেক্টরের বেশি জমিতে আম চাষ হয়। প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ মেট্রিক টন আম শুধুমাত্র মালদার বাগান থেকে আসে প্রতিবছর। কিন্তু এ বছর ফলন ব্যাপক ঘাটতির কারণে কমে তা অর্ধেক হয়ে গিয়েছে বলে উদ্যানপালন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
শুধু যে মালদাতেই আমের ফলন অর্ধেক হয়ে গিয়েছে তা নয়, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাতে যে আম হয়, সেখানেও একই ছবি। সব জায়গাতেই প্রকৃতির মারে আমের ফলন পড়ে গিয়েছে।
সাধারণত বৈশাখ মাসের শেষের দিকেই বাজারে আম আসা শুরু করে দেয়। এবার জৈষ্ঠ মাস পড়ে গিয়েছে। তা হলেও আম ঢোকেনি সেভাবে। কিছু নদিয়া আর কিছু বাইরের রাজ্য বিহার থেকে আম আসছে। যার দাম চড়া।
শুধু দামই নয়, স্বাদেও তা মালদা-মুর্শিদাবাদের আমেদর ধারেকাছে নেই। তবু কেউ কেউ অভ্যাসবশত বাজারে আম দেখে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু শেষমেষ আমের স্বাদ না পেয়ে মুষড়ে পড়ছেন। এই পরিস্থিতি জুুনে কিছুটা বদলাতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।