পাহাড়-তরাই-ডুয়ার্সের একাধিক জেলায় রাতের মধ্যেই ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস ছিল হাওয়া অফিসের তরফে। ঠিক পূর্বাভাস মেনেই রাত গড়াতেই ঝেঁপে নামলো বৃষ্টি। আর বৃষ্টি নামতেই গুমোট ভাব উধাও। বাতাসের জলীয় বাষ্প যা অস্বস্তির কারণ ছিল, তা শিরশিরে ঠাণ্ডায় বদলে গেল।
মুহূর্তে ফ্যান বন্ধ। গায়ে চাদর। রাতভর সুখনিদ্রায় গেলেন উত্তরবঙ্গবাসী। তবে ঝড়-বৃষ্টি হলেও কোথাও ক্ষয়ক্ষতির খবর নেই। ফলে শুক্রবার সকালে বেশ কিছু জায়গায় ঝকঝকে আকাশ ছিল।
মালদা সহ দক্ষিণ দিনাজপুরের বিস্তীর্ণ এলাকায় এদিন সকালেও বৃষ্টি হয়েছে। তবে গোটা উত্তরবঙ্গেই এদিন সকাল থেকে আকাশ মেঘলাই ছিল। শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি সহ একাধিক জায়গায় বৃষ্টি হয়েছে। তবে কোথাও ভারী বৃষ্টি হয়নি।
তবে পাহাড়ে বিশেষ সতর্কতা এদিনও জারি রয়েছে। পর্যটনের ভরা মরশুমে ঝুঁকি নিতে চান না প্রশাসনিক কর্তারা। পাহাড়ে প্রচুর পর্যটক রয়েছেন। তাঁরা হালকা বৃষ্টিতে পাহাড়ের পর্যটনস্থল, চা বাগান, দর্শনীয় স্থানগুলিতে ভিড় ছিল নজরকাড়া।
পাহাড় ধুয়ে দেওয়া বৃষ্টির ছাঁট গায়ে মেখে ঘুরে বেড়িয়েছেন পর্যটকরা। ভিড় ছিল কালিম্পং, ডেলো, কার্শিয়ং, সিটং, মিরিক, অহলদাঁড়া, দার্জিলিং, গ্যাংটক, পেলিং, রাবাংলা, নামচি, মানেভঞ্জন সহ নানা জায়গায়।
পর্যটকের ঢলে খুশি পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত সকলেই। গাড়িচালক থেকে হোটেল ব্যবসায়ী, টুর অপারেটর থেকে স্থানীয় ফেরিওয়ালা। মনোরম পরিবেশের সঙ্গে দুর্দান্ত আবহাওয়ায় দার্জিলিংয়ের ম্যালে দাঁড়িয়ে রোডসাইড কফি কিংবা চায়ের কাপে চুমুক দেওয়ার অনুভব যাঁরা এদিন উপভোগ করছেন, তাঁদের কাছে ফিলিংস অনেকটা, "মনে হয় যেন স্বর্গে আছি।"
ব্যারাকপুর থেকে ঘোষ দম্পতি কিংবা বারুইপুরের মোস্তাক আলিরা পাহাড়ে রয়েছেন কয়েক দিন ধরেই। এ কদিন তাঁরা প্রতিদিন আলাদা আবহাওয়া পেয়েছেন। ফলে খুশির ঠিকানা নেই তাঁদের। জানিয়েছেন একদিন ঝলমলে রোদে পাহা়ড়ের সৌন্দর্য, টাইগার হিলের সূর্যোদয় দেখেছি। তা ছাড়া সব দিনই নানা জায়গা থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়া দেখা গিয়েছে।
আবার একদিন মেঘলা আবহাওয়ায় মনে হচ্ছিল বিদেশে রয়েছি। আবার এদিন বৃষ্টিতে নতুন ছাতা কিনেছি। ছাতা মাথায় পাহাড় ধুয়ে দেওয়ার দৃশ্য মন ভাল করে দিয়েছে। ফলে মে মাসও এখন হিল ট্রাভেলারদের কাছে আনন্দের মাস। ডুয়ার্সেও একই চিত্র। লাটাগুড়ি, গরুমারা, জলদাপাড়াতে তিলঠাঁই নেই। জঙ্গলে বর্ষার সুযোগ পেয়ে ধন্য পর্যটকরা।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে কী বলা হয়েছে?
দার্জিলিং এবং জলপাইগুড়ি জেলার কিছু অংশে শুক্রবারও বিক্ষিপ্তভাবে বজ্রবিদ্যুৎ এবং হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। বজ্রপাতের সময় লোকজনকে নিরাপদ স্থানে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে কোচবিহার, মালদা ও দুই দিনাজপুর ও জলপাইগুড়িতে বজ্রপাতের সতর্কতা রয়েছে।