অযত্নের শিকার নার্সারি শিল্প। করোনা সংক্রমণের জেরে ডুয়ার্সে চা, এবং পর্যটন শিল্পের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত পুস্প,ফল, চারা গাছ শিল্প।
লকডাউনের জেরে দেখা নেই প্রতিবেশী দেশ ভুটান এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের একাধিক রাজ্যের পাইকারি ক্রেতাদের। ফলে সমস্যা বাড়ছে।
আলিপুরদুয়ার এক ব্লকের বাইরিগুড়ি নার্সারির জন্য বিখ্যাত। সেখানে এখন মন খারাপের ছাপ। গেলেই দেখা যাবে ফুলের বাগান গুলিতে বাহারি রং-বেরং এর ফুল ফুটে থাকলেও ক্রেতার দেখা নেই।
ফলের বাগানগুলোতেও একই চিত্র৷ গাছে গাছে হরেক রকমের ফল ঝুলে থাকলেও বিক্রি করার মতো খদ্দের নেই চাষিদের। বাগানের চারা গাছগুলোর একই দশা। বিভিন্ন প্রজাতির চারা গাছ ধিরে ধিরে বড় হয়ে উঠছে। অথচ ক্রেতার দেখা নেই।
আলিপুরদুয়ার শহর লাগোয়া এই বাইরিগুড়ি গ্রামের প্রায় ১০০ টি পরিবারের রুজিরোজগার নির্ভর করে এই ফুল,ফল, চারা গাছ চাষ করে। স্থানীয় চাষিরা দীর্ঘদিনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এই ফুল ও ফলের চাষকে একটি পূর্নাঙ্গ শিল্প রুপে গড়ে তুলেছেন।
তবে গত প্রায় দেড় বছর ধরে করোনার জেরে এই শিল্প পরিকাঠামো ধ্বংসের মুখে। ফি-বছর এই এলাকার ফুল চাষিদের থেকে প্রতিবেশী দেশ ভুটান এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের মেঘালয় আসাম, মণিপুর, নাগাল্যান্ডে দুই থেকে তিন কোটি টাকার ফুল রপ্তানি করা হতো।
তবে চিত্রটা পাল্টে গেছে করোনা সংক্রমণের পর থেকেই। ২০২০ সালে মাত্র ১০ লাখ টাকার ফুল, ফল, চারা গাছ কিনেছে ভুটান। অন্যদিকে উত্তর-পূর্ব ভারতে বড়জোর ৫ লাখ টাকার ফুল রপ্তানি করা হয়েছে।
ফুল চাষিদের দাবি মহাজনের থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। ফুলের বাগান গুলোতে ফুল ফুটে থাকলেও ক্রেতা আসছেন না ফুল কিনতে।
বাগানগুলোতে চারদিকে ফুটে রয়েছে জারবেরা, রজনীগন্ধা, চন্দ্রমল্লিকা, গাঁদা ফুল, সহ অন্যান্য নানা রকমের ফুল। খদ্দেরের অভাবে সমস্ত ফুল নষ্ট হচ্ছে বাগানেই।
স্থানীয় ফুল চাষি অর্জুন সরকার বলেন ভুটান এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের একাধিক রাজ্যের পাইকারি ক্রেতারা আমাদের থেকে ফুল আমদানি করে নিয়ে যেত। কিন্তু লকডাউনের জেরে এখন আমাদের এই শিল্প ধ্বংসের মুখে।
আরেক ফুলচাষি গৌরাঙ্গ দাস বলেন, আমরা সরকারের দ্বারস্থ হব। সরকারি ভাবে আমাদের ঋণ না দিলে আমাদের আত্মহত্যা করা ছাড়া অন্য কোন পথ নেই।