বিপুল ঘাটতি ব্লাড ব্যাঙ্কে
গত তিন মাস ধরে প্রতিদিন গড়ে ৩০ ইউনিট করে রক্ত ঘাটতি থাকছে। তিন মাসে মোট ঘাটতির সংখ্যা প্রায় তিন হাজারের কাছাকাছি। এই মুহূর্তে করোনা আবহে বড় সার্জারি বন্ধ থাকায় কিছুটা রক্ষে। তবে যে কোনও দিন সমস্যা বিশাল আকার নিতে পারে।
রক্তশূণ্য ব্লাড ব্যাঙ্ক
করোনা আবহে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকে গত এক বছর ধরে প্রায় রক্ত শূন্যতায় ভুগছে। যদিও গত দুদিন থেকে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। এই পরিস্থিতিতে রক্তের সংকট মেটাতে রক্তদান শিবির গুলির উপর চেয়ে রয়েছে মেডিক্যালের ব্লাড ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
রক্ত সরবরাহে বিপুল টান
রক্তের সংকট মেটাতে সারা বছরই বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং তরফে রক্তদান শিবির করা হয়। কিন্তু গতবছরের মার্চ মাস থেকে দেশজুড়ে করোনার সংক্রমণ শুরু হতেই রক্তদান শিবির গুলি প্রায় বন্ধ রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে উত্তরবঙ্গ জুড়েই দেখা দিয়েছে রক্তের সংকট। উত্তরবঙ্গের উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের কলেজ ও হাসপাতালে ব্লাড ব্যাংক উত্তরবঙ্গে একটা বড় অংশে রক্তের যোগান দেয়। তবে এই করোনা পরিস্থিতিতে মেডিক্যালের ব্লাড ব্যাংক রক্তাল্পতায় ভুগছে । জানা গেছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ব্লাড ব্যাংকে প্রতিদিন গড়ে ১০০ ইউনিট রক্তের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু সংখ্য়াটা তলানিতে ঠেকেছে। সম্প্রতি বিধানসভা নির্বাচনের সময় কালে একেবারে রক্তশূন্য অবস্থায় ছিল উত্তরবঙ্গ মেডিকেল ব্লাড ব্যাংক।
মাত্র ১০৩ ইউনিট রক্ত রয়েছে
হাসপাতাল সূত্রে খবর উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের ব্লাড ব্যাংকের অন্তর্গত উত্তরবঙ্গে ১৯ টি ব্লাড ব্যাংক রয়েছে।এই ব্লাড ব্যাঙ্ক গুলি মিলে সারা বছরে ১ লক্ষ ৩০ হাজার ইউনিট রক্তের যোগানের প্রয়োজন হয়। কিন্তু করোনা কালে সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে অর্ধেকেরও কম। এই মুহূর্তে মেডিক্যালের ব্লাড ব্যাংকে মোট ১০৩ ইউনিট রক্ত রয়েছে। ফলে এই পরিস্থিতি লাগাতার চলতে থাকলে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে উত্তরবঙ্গ জুড়ে রক্তের হাহাকার পড়তে পারে।তাই এই মুহূর্তে রক্তদানের দিকেই তাকিয়ে মেডিক্যালের ব্লাড ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
শিবির থেকে রক্ত চাইছে ব্লাড ব্য়াঙ্ক
রিজিওনাল ব্লাড ট্রান্সফিউশন কাউন্সিলের ডিরেক্টর ডঃ মৃদুময় দাস বলেন, গত এক বছর থেকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের ব্লাড ব্যাংক রক্ত শূন্যতায় ভুগছেন। তবে সম্প্রতি দুদিন আগে একটি রক্তদান শিবির হওয়ায় আজ পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আগামী দিনে রক্তদান শিবির না হলে পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হতে পারে। একইসাথে এদিন তিনি রক্তদান শিবির গুলির জন্য সর্বস্তরের মানুষ এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গুলিকে আবেদন জানিয়েছেন।
ডিনের উদ্বেগ
অন্যদিকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের ব্লাড ব্যাংকে রক্তের সংকটের কথা স্বীকার করেন উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডিন ডাক্তার সন্দীপ সেনগুপ্ত। তিনি বলেন, রক্তের সংকট রয়েছে কারণ রক্তের প্রয়োজনীয়তা মানুষের কমেনি এবং জরুরী অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রেই রক্তের প্রয়োজন হয়। এছাড়াও যাদের অ্যানিমিয়ার জন্য রক্তের লাগে তাদের প্রয়োজন রয়েছেই। তবে লকডাউনের কারনে রক্তদান শিবির গুলি না হওয়ায় এই রক্তের সংকট বাড়ছে।