দার্জিলিংয়ে ঘুরতে যাবেন আর বিখ্যাত গ্লেনারিজ বেকারিতে যাবেন না, তাই কখনও হয়? গ্লেনারিজের ধোঁয়া ওঠা গরম সিজলার কিংবা কন্টিনেন্টাল ব্রেকফাস্টের সঙ্গে ধোঁয়া ওঠা এক কাপ গরম দার্জিলিং চা। আর কী চাই? কিন্তু ধরুন পুজোয় দার্জিলিং গেলেন, কিংবা তারপরে। গ্লেনারিজে আর সেই চা পেলেন না। বলা হলো আমরা আর চা বিক্রি করি না।তাহলে কেমন হবে ব্যাপারটা? হকচকিয়ে গেলেও কিছু করার নেই, কারণ গ্লেনারিজ কর্তৃপক্ষ আপাতত তাঁদের সব আউটলেটেই দার্জিলিং চা বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন। হ্যাঁ ঠিকই শুনছেন, গ্লেনারিজে মিলছে না দার্জিলিং চা।
আরও পড়ুনঃ পুজোর মুখে বড় সুখবর, চালু হচ্ছে ট্রয় ট্রেন, কবে থেকে?
কিন্তু কেন মিলছে না দার্জিলিং চা?
আসলে গ্লেনারিজের যিনি কর্ণধার অজয় এডওয়ার্ড, তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁর আরেকটা পরিচয় অনেকেই হয়তো জানেন। তিনি বর্তমানে দার্জিলিং পুরসভার চেয়ারম্যান। তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁর বিখ্যাত বেকারি ও ফুড স্টোরে দার্জিলিং চা বিক্রি করবেন না।
কিন্তু কেন এই সিদ্ধান্ত?
দার্জিলিংয়ের চা-শ্রমিকদের পুজোর বোনাস নিয়ে অনেক দিন ধরেই সমস্যা চলছে। চা-বাগানের মালিকদের সঙ্গে ট্রেড ইউনিয়নগুলির বৈঠকে বোনাস দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হলেও, বোনাসের পুরো অঙ্ক নিয়ে সমস্যা মেটেনি। চা শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াতে প্রতিবাদ হিসেবে নিজের রেস্তোরাঁয় ‘দার্জিলিং চা’ বিক্রি বন্ধের কথা ঘোষণা করে দিয়েছেন চেয়ারম্যান তথা হামরো পার্টির সভাপতি অজয় এডওয়ার্ড। তিনি ফেসবুকে পোস্ট করে তাঁর সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেছেন। যতদিন না একবারে ২০ শতাংশ বোনাস পাবেন শ্রমিকরা, ততদিন চা বিক্রি বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
চলতি মাসে একাধিকবার চা-বাগান মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছে ট্রেড ইউনিয়নগুলি। তাতে ২০ শতাংশ বোনাস দিতে রাজি হয়েছেন বাগান মালিকেরা। কিন্তু তাঁদের একাংশের দাবি, তাঁরা বোনাসের টাকা দেবেন কিন্তু দুর্গাপুজোর আগে ১৫ শতাংশ আর কালীপুজোর আগে বাকি ৫ শতাংশ। যা নিয়ে আবার বিবাদ শুরু হয়েছে দু’পক্ষের মধ্যে। ট্রেড ইউনিয়নগুলির দাবি, অতীতে বাগান মালিকদের অনেক দায়িত্ব ছিল। রেশন, চিকিৎসা সবটাই মালিকের দায়িত্বের মধ্যে পড়ত। কিন্তু এখন তা রাজ্য সরকারের দায়িত্ব। তাই এখন একসঙ্গে ২০ শতাংশ বোনাস দিতে হবে।
আরও পড়ুনঃ চোখ বুজে এই ফল খেয়ে যান, বাড়বে আয়ু, ওজন কমবে, হার্ট থাকবে সুস্থ
কী বলছেন অজয়?
অজয় ফেসবুকে লেখেন, বোনাসের সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তাঁর রেস্তোরাঁয় দার্জিলিং চা বিক্রি ও পরিবেশন বন্ধ থাকবে। অজয়ের বক্তব্য, ‘‘আমি কোনও হুমকি দিচ্ছি না। সকলের কাছে আবেদন করেছি মাত্র। বিশ্বের বড় বড় রেস্তরাঁতে দার্জিলিং চা বিক্রি হয়। কিন্তু তাতে চা শ্রমিকেরা কী পাচ্ছেন? প্রতি বছরই বাগান মালিকদের এই এক নাটক দেখা যায়। শ্রমিকদের সঙ্গে অন্যায় হচ্ছে। তাঁরা বছরে একবার মাত্র বোনাস পান। তা নিয়ে সমস্যা! শ্রমিকেরা তাঁদের প্রাপ্য টাকা পাচ্ছেন না। ২০ শতাংশ বোনাস একবারেই দিতে হবে।’