বৃষ্টি থামতেই নদী ভাঙন শুরু হয়েছে উত্তরবঙ্গে ও লাগোয়া এলাকার বিভিন্ন জায়গায়। গঙ্গা থেকে ডুয়ার্সের ছোট নদী, পার ভাঙতে শুরু করেছে। তবে গঙ্গার পার ভাঙছে মালদা-মুর্শিদাবাদের বিস্তীর্ণ এলাকায়। ইতিমধ্যেই গঙ্গায় তলিয়ে গিয়েছে বেশ কিছু পুরনো বাড়ি। মালবাজারে যদিও পরিস্থিতি অতটা খারাপ নয়, তবে পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে প্রশাসনের তরফে।
আরও পড়ুনঃ এবার গতি বাড়ছে টয়ট্রেনের, কবে থেকে?
গঙ্গা ভাঙতে শুরু করেছে মালদহ-মুর্শিদাবাদ এলাকায়। কয়েক কিলোমিটার এলাকা ধরে ভাঙছে বাঁধ। তবে এই মুহূর্তে ক্ষতি বেশি হয়েছে মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ এলাকায়। শনিবার ও রবিবার পরপর দুটি বাড়ি তলিয়ে গিয়েছে গঙ্গায়।ফাটল ধরেছে কমপক্ষে ১৮ টি বাড়িতে। এলাকাবাসীর ধারণা আরও বাড়ি তলিয়ে যেতে পারে। আতঙ্কিত এলাকার মানুষজন। এই ঘটনার পর নদীপারের বেশ কিছু পরিবার ভাঙনের ভয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। যতটা সম্ভব প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও আসবাব সরিয়ে নিচ্ছেন। যেগুলি পারছেন না, সেগুলি রেখে যাচ্ছেন ভগবান ভরসায়।এখনও পর্যন্ত এই মরশুমে ১৪-১৫টি বাড়ি তলিয়ে গেছে গঙ্গায় বলে জানা গিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, এই বাড়িগুলো ৫০-৬০ বছর আগে তৈরি। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, সে সময় গঙ্গা ধারে কাছে ছিল না। প্রায় ২ কিলোমিটারের বেশি দূরে ছিল নদী। এই কয় বছরে ভাঙতে ভাঙতে এখন এখানে চলে এসেছে।জানা গিয়েছে একসময় এই শতাধিক পরিবার বাস করলেও এখন ২০টি পরিবার রয়েছে। এই বাড়িগুলোও ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত। এগুলিও এখন তলিয়ে যাওয়ার অপেক্ষায় দিন গুণছে।
সেচ দপ্তরের তরফে সংবাদমাধ্য়মে জানানো হয়েছে, গঙ্গার জল বর্ষার পর কমে গিয়েছিল। কিন্তু শেষ কিছুদিনে ফের জল বাড়ছে। কিছু বাড়ি প্রায় ঝুলে রয়েছে বলে জানা গিয়েছেl জল বেড়ে যাওয়ার ফলে সেগুলিকে রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। জঙ্গিপুরের সাংসদ এবং তৃণমূলের জেলা সভাপতি খলিলুর রহমানও সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, "ভাঙন রোধে রাজ্যের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। এ নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গেও কথা হয়েছে রাজ্যের। কিন্তু এখনও কোনও পদক্ষেপ নেই। ভাঙ্গন রোধে কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। যদিও বিজেপির রাজ্য সহ সভাপতি রথীন বসু পাল্টা দাবি করেছেন, রাজ্য এ সমস্ত কাজে বরাদ্দ অর্থ মেলা-খেলায় খরচ করে। নিজেদের দায়িত্ব পালন করে না। তাই এই অবস্থা। জরুরি পরিস্থিতি নিয়েও তারা রাজনীতি করে।
আরও পড়ুনঃ দীপাবলি বা কালীপুজোর রাতে ভুলেও এই পোশাক পরবেন না, কেন?
অন্যদিকে মালবাজারের কুমলাই নদীতে ভাঙন শুরু হয়েছে। বৃষ্টি কমলেও নদীতে জলের পরিমাণ কমেনি। মাল ব্লকের তেশিমলা গ্রাম পঞ্চায়েতের ভাউলাধুরা গ্রামে দ্রুত পাড় ভাঙতে শুরু করেছে। মাল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রিনা বরা দ্রুত এলাকা বাঁচাতে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন। তিনি জানান, প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হয়েছে, সেচ দফতরের সঙ্গেও কথাবলা হয়েছে। তেশিমলা গ্রাম পঞ্চায়েতের দু’দিকে কুমলাই এবং মাল নদী বয়ে গিয়েছে। এখন জোড়া নদীতেই জল বেশি রয়েছে। ফলে উদ্বেগ বাড়ছে। কারণ খুব কাছেই ৩০০ মিটারের মধ্যে বিদ্যুতের খুঁটি, ঘর, বাড়ি, জনবসতি রয়েছে। দ্রুত ভাঙন আটকাতে না পারলে সামশেরঞ্জের মতো অবস্থা হতে দেরি হবে না।