প্রশাসক হিসেবে এলেন গৌতম
শিলিগুড়ি পুরনিগমের প্রশাসক পদে বসানো হল পরাজিত বিধায়ক গৌতম দেবকে। এর আগে অশোক ভট্টাচার্যকে প্রশাসক করা হয়েছিল। কিন্তু তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় ফিরতেই বিরোধীদের ছেঁটে ফেলা শুরু হয়েছে। এ নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন অশোকবাবু নিজে। প্রতিবাদ জানিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষও। যদিও গত ১০ বছরে অশোকবাবুকে ধর্তব্যের মধ্যে না রাখা গৌতমবাবু অবশ্য হেরে বিনয়ী হবেন বলেছিলেন। তার প্রমাণ দিয়ে প্রাক্তনীর মতামত নিয়ে চলার কথাই বলেছেন।
প্রশাসকমণ্ডলীতে এলেন তৃণমূলের দলীয় নেতারা
শিলিগুড়ি পুরনিগমের প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান করা হল গৌতম দেবকে। বৃহস্পতিবার রাজ্যের পুর ও নগর উন্নয়ন দপ্তর থেকে এমনই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হল। কমিটিতে গৌতম দেব ছাড়াও রাখা হয়েছে অলক চক্রবর্তী, বিবেক বৈদ ও রঞ্জন সরকার। রাজ্যে অন্যান্য পৌর সভাগুলির মত শিলিগুড়িতেও একই নিয়ম হওয়া উচিত ছিল বলে দাবি করেছেন বিদায়ী মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। অন্যদিকে গৌতম দেবের দাবি, গত বছর শিলিগুড়ি পুরনিগমে মেয়ের এবং প্রশাসক অশোক ভট্টাচার্য ছিলেন। তাই করোনা মোকাবিলায় অশোক ভট্টাচার্যের সঙ্গে পরামর্শ করেই কাজ করব।
বিরোধীদের ছাঁটাই
রাজ্যের বেশকিছু পৌরসভা এবং পৌরনিগমের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রশাসক বসিয়ে পৌরসভা পৌরনিগমগুলিকে চালানো হচ্ছে। তবে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন ঘোষণার হয়ে যাবার পর নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে পৌরসভা এবং পৌরনিগম গুলিতে যে সমস্ত জনপ্রতিনিধি দেয়া ছিল তাদেরকে সরিয়ে প্রশাসনিক আধিকারিকদের বসানো হয়। কিন্তু ফের তৃতীয় বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শপথ গ্রহণ করার পরের দিনই রাজ্যের যে সমস্ত পৌরসভা এবং পৌরনিগমের গুলিতে প্রশাসক ছিল সেখানে আবারও জনপ্রতিনিধিদের বসানো হয়। এই ক্ষেত্রে কলকাতা পৌর নিগমে আবারও পৌর প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান করা হয় ফিরহাদ হাকিমকে। কিন্তু শিলিগুড়িতে অশোক ভট্টাচার্য থাকলেও অশোক ভট্টাচার্যকে আর ফিরিয়ে আনা হয়নি। এবার শিলিগুড়ি পুরনিগমের প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান করা হয় সদ্য নির্বাচনে পরাজিত হওয়া গৌতম দেবকে। একই সঙ্গে বোর্ডে রয়েছেন আরও তিনজন সদস্য। এরা হলেন দার্জিলিং জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা ২০ নং ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর রঞ্জন সরকার, তৃণমূল নেতা অলক চক্রবর্তী এবং ব্যবসায়ী বিবেক বৈদকে।
প্রশাসক হিসেবে প্রথম মুখোমুখি গৌতম
এদিন সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সদ্য শিলিগুড়ি পৌর প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনীত হয়ে গৌতম দেব বলেন,কোভিডের এই পরিস্থিতিতে প্রথম কাজ হবে মানুষের পাশে থেকে তাদের সাপোর্ট দেওয়া। মানুষকে নাগরিক পরিষেবা দেওয়া এবং বর্তমানে করোনা পরিস্থিতিতে পাড়ায় পাড়ায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন , ক্লাব এবং গণ সংগঠনগুলিকে নিয়ে কীভাবে কাজ করা যায় এবং কীভাবে সচেতনতা বৃদ্ধি করা যায় তা নিয়ে কাজ করব। একই সঙ্গে এদিন গৌতম দেব আরও বলেন, গত ৬ বছর শিলিগুড়ি পুর নিগম চালিয়েছেন অশোকবাবু। তাই কোভিড এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় অশোক ভট্টাচার্যের কাছ থেকে পরামর্শ নেব। এছাড়াও এর আগে যারা কো-অর্ডিনেটর ছিল তাঁদের সাথেও বৈঠক করব। তাঁদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করে কাজ করব।
অশোকের প্রতিক্রিয়া
অন্যদিকে এই প্রসঙ্গে প্রাক্তন শিলিগুড়ি পুরনিগমের প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান অশোক ভট্টাচার্য বলেন, রাজ্যের সমস্ত জায়গাতে যেখানে যারা আগে ছিলেন তাদেরকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে, সেখানে শিলিগুড়ির ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। তবে এটা সম্পূর্ণটাই রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত। এতে আমি কিছু বলব না। তবে আমি আগেই বলেছিলাম আমি কোন দায়িত্বভার নেব না। কিন্তু আমার কাছে রাজ্য সরকারের জানতে চাওয়া উচিত ছিল।
শঙ্কর ঘোষের প্রতিক্রিয়া
বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ নিজে বিদায়ী পুরবোর্ডে মেয়র পারিষদ ছিলেন। এমনকী প্রশাসনিক বোর্ডেও তিনি ছিলেন সদস্য হিসেবে। তাঁকেও রাখা হয়নি বোর্ডে। তিনি অবশ্য এর পিছনে প্রশাসনিক নয়, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য দেখছেন। তিনি একটি ভিডিও বার্তায় রাজ্যের এই উদ্যোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মন্তব্য করেছেন। সদ্য ঘোষিত তুন প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্যদের দেখে অবশ্য তাঁর অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।