Jalpaiguri Bikunthapur Rajbari: জলপাইগুড়ির বৈকুণ্ঠপুর রাজবাড়ির কোন অংশটুকু ‘হেরিটেজ’ তা নির্ধারণ করতে সমীক্ষা শুরু করতে চলেছে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন। যদিও জলপাইগুড়ি রাজবাড়িকে ‘হেরিটেজ’ ঘোষণার কোনও গেজেট বিজ্ঞপ্তি এখনও প্রকাশ হয়নি। তবে কমিশন সূত্রের খবর, ২০০৭ সালে রাজবাড়ি পরিদর্শন করা হয় এবং তারপরে রাজবাড়ি ভবনকে হেরিটেজ ঘোষণা করা হয়। হেরিটেজ কমিশনের ওয়েবসাইটের তালিকাতেও জলপাইগুড়ির বৈকুণ্ঠপুরের রাজবাড়ির ছবি রয়েছে।
এবার হাইকোর্টের নির্দেশের পরে আগামী সপ্তাহেই জলপাইগুড়ির বৈকুণ্ঠপুর রাজবাড়ির হেরিটেজ অংশের সমীক্ষা করতে চলেছে প্রশাসন। সমীক্ষায় উপস্থিত থাকবেন রাজ্য হেরিটেজ কমিশনের সচিবও। বুধবার জলপাইগুড়ির জেলাশাসক মৌমিতা গোদারাবসু, জেলা পুলিশ সুপার বিশ্বজিৎ মাহাতো, জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারপার্সন পাপিয়া পাল, ভাইস চেয়ারম্যান সৈকত চট্টোপাধ্যায় সহ পুর আধিকারিকদের উপস্থিতিতে বিষয়টি নিয়ে বৈঠক হয়।
সম্প্রতি হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চে রাজবংশের উত্তরাধিকার দাবি করে মামলা দায়ের করা হয়। হেরিটেজ সম্পত্তির উপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণেরও আর্জি জানানো হয় বলে জানা গিয়েছে। সেই মামলার ভিত্তিতে হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, ৬ সপ্তাহের মধ্যে প্রশাসন-পুরসভা যৌথ ভাবে সমীক্ষা করে হেরিটেজ চত্বরের সীমানা নির্ধারণ করুক। তার প্রেক্ষিতেই এ দিনের বৈঠক হয়।রাজ্য হেরিটেজ কমিশনের সচিবও ভার্চুয়াল মাধ্য়মে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। আগামী সপ্তাহে সমীক্ষায় সরাসরি তাঁরও থাকার কথা। সেদিন মামলাকারী এবং রাজবাড়ির বর্তমান উত্তরাধিকারীদের ডাকা হবে বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক মৌমিতা গোদারাবসু সংবাদমাধ্যমকে জানান, হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ হচ্ছে।
জলপাইগুড়ির বৈকুণ্ঠপুর রাজবাড়ির মূল ভবন, পুকুর, রাস্তা, মন্দির হেরিটেজের তালিকায় রয়েছে বলে দাবি। রাজপরিবারের দুর্গাপুজোর বয়স পাঁচশো পেরিয়েছে। ভবনের বয়স তারও বেশি হওয়ার সম্ভাবনা। হেরিটেজের সীমানা নির্ধারণের পরে রক্ষণাবেক্ষণ কাজ নিয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত হবে।
মন্দির বেষ্টিত রাজবাড়ি এই বৈকুন্ঠপুর রাজবাড়ি। মূলত বৈকুন্ঠনাথ অর্থাৎ শ্রীকৃষ্ণের বিগ্রহ পূজিত হয় বলেই এই রাজবাড়ির নাম বৈকুন্ঠপুর রাজবাড়ি। জন্মাষ্টমীর দিন বৈকুণ্ঠনাথের পুজো হয়। বৈকুন্ঠপুর রাজবাড়িতে প্রতীকি হিসেবে নিশুতি রাতে সন্ধিপুজোয় হাড়িকাঠে বলি দেওয়া হয় মাটি-ধান দিয়ে তৈরি নরমুণ্ড। এখন রাজাও নেই, রাজসিক ব্যাপার-স্যাপারও নেই ফলে আর সে জৌলুসও নেই। তবে শতাব্দী প্রাচীন কিছু ঐতিহ্য আজও টিকে রয়েছে।