scorecardresearch
 

মেলায় অবাধে জুয়া খেলছেন মহিলারা, দেখছে পুলিশ, রয়েছে এই রাজ্যেই

এ রাজ্যের নজিরবিহীন এবং প্রাচীন ঐতিহ্যপূর্ণ এ মেলাকে নিয়ে বহু মানুষের কাছে নানা ধরনের গল্প শোনা যায়। তবে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রেখে চলে প্রকাশ্যে জুয়ার আসর। কোথাও তাস, কোথাও গুটি, আবার কোথাও লটারি সিস্টেমে চলে জুয়া খেলার প্রতিযোগিতা। টাকা-পয়সার লেনদেন জুয়া খেলার মাধ্যমে হয়ে থাকে। শুধু পুরুষরা নয়, এই মেলায় অংশ নেন বাড়ির মেয়ে-বউরাও৷ বাড়ির সবচেয়ে বয়স্ক আর সবচেয়ে ছোটো সদস্য একই বোর্ডে জুয়া খেলে৷

Advertisement
 জুয়াড়ি মেলা জুয়াড়ি মেলা
হাইলাইটস
  • এ এক আজব মেলা
  • নামটাও ভারি অদ্ভূত জুয়াড়ি মেলা
  • মেলায় পুরুষদের থেকে মহিলারাই বেশি ভিড় করেন জুয়া খেলতে

এ এক আজব মেলা৷ যে মেলায় ফুচকা-জিলিপি-পাঁপড়ভাজার দোকানের জায়গায় যত্রতত্র জুয়ার বোর্ড ছড়িয়ে থাকে,  তাকে আজব ছাড়া আর কীই বা বলা যায়! তার নামটাও ভারি অদ্ভূত জুয়াড়ি মেলা। এ মেলায় জুয়া খেলা হয়ে আসছে কয়েকশ বছর ধরে। এ জুয়াড়ি মেলায় জুয়া খেলেন মহিলারাও। আর তাদের নিরাপত্তা দেয় খোদ পুলিশ। মালদহে একদিনের জন্য এ মেলা বসে, চলে রাত পর্যন্ত। 

একা কুম্ভ হয়ে সাংসদ করেছিলেন ‘মেঘনাদ’ স্বামীকে,আজ আলাদা কেন ভালবাসার পথ

এ রাজ্যের নজিরবিহীন এবং প্রাচীন ঐতিহ্যপূর্ণ এ মেলাকে নিয়ে বহু মানুষের কাছে নানা ধরনের গল্প শোনা যায়। তবে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রেখে চলে প্রকাশ্যে জুয়ার আসর। কোথাও তাস, কোথাও গুটি, আবার কোথাও লটারি সিস্টেমে চলে জুয়া খেলার প্রতিযোগিতা। টাকা-পয়সার লেনদেন জুয়া খেলার মাধ্যমে হয়ে থাকে। শুধু  পুরুষরা নয়, এই মেলায় অংশ নেন বাড়ির মেয়ে-বউরাও৷ বাড়ির সবচেয়ে বয়স্ক আর সবচেয়ে ছোটো সদস্য একই বোর্ডে জুয়া খেলে৷ সেই দৃশ্যও চোখে পড়ে আকছার৷ এই জুয়াখেলায় কোনও পুলিশি নিষেধাজ্ঞা নেই৷  বড়োলোক-গরিবের ভেদাভেদও নেই৷ পুরাতন মালদার বাসিন্দারা এই মেলার সাক্ষী কয়েক প্রজন্ম ধরে৷

জুয়াড়ি মেলা
জুয়াড়ি মেলা

মূলা ষষ্ঠী উপলক্ষে পুরাতন মালদহ পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের মোকাতিপুর এলাকায় বেহুলা নদী সংলগ্ন মাঠে বসে  জুয়ার মেলা। এলাকার প্রবীণদের কথায়, মোকাতিপুর এলাকায় বিধবাদের সংখ্যা সবথেকে বেশি। বেহুলার অভিশাপে এলাকায় বিধবাদের সংখ্যা বাড়ছে। এমনই ধারণা তাদের। কথিত রয়েছে, বেহুলা যখন তার সাপের কামড়ে মৃত্যু হওয়া স্বামী লখিন্দরকে নিয়ে নদীতে কলার ভেলায় ভেসে যাচ্ছিলেন, তখন মোকাতিপুর এলাকার নদীপাড়ে কিছু বিবাহিত মহিলা তা দেখে হাসাহাসি করেছিলেন। তারই জেরে নাকি বেহুলা অভিশাপ দিয়ে বলেছিলেন, বিধবা এলাকা হবে এটি। সেই জন্যই এলাকায় বিধবার সংখ্যা সবথেকে বেশি বলে স্থানীয় মানুষদের ধারণা। তবে এর সঙ্গে জুয়া খেলার সম্পর্ক কি এমন প্রশ্নের জবাবে মোকতিপুর মেলা কমিটির সদস্যরা  বলেন, বেহুলার এ অভিশাপের সময় নদীর পারে কিছু মানুষ 'পাশা' খেলছিলেন। তারা বেহুলার এ কথাকে সমর্থন করে নদীপাড়ে থাকা ওই মহিলাদের তাড়িয়ে দেন। তাতেই বেহুলা খুশি হয়ে বলেছিলেন, বছরে একবার অন্তত মানুষ এই নদীপারে ভিড় করবে পাশা খেলার জন্য। সেই আমলের 'পাশা' খেলা এখন পরিচিত 'জুয়া' নামে। তাই প্রাচীন ঐতিহ্য মেনেই জুয়ার মেলা হয়ে আসছে এখানে।

Advertisement

করোনোকালে শুভেন্দুর খোঁজ নিয়েছিলেন দিদি, ডাহা মিথ্যে বলছে দাবি ফিরহাদের

তবে এটি কত দিনের পুরনো তা কারও জানা নেই। কেউ বলেন ৫০০ বছর, কেউ বলেন ৭০০ বছর, আবার কেউ বলেন ১ হাজার বছরের পুরনো।  ধর্ম, প্রথা, ঐতিহ্য মেনেই এ জুয়ার মেলা যুগ যুগ ধরে হয়ে আসছে। এ মেলায় পুরুষদের থেকে মহিলারাই বেশি ভিড় করেন জুয়া খেলার জন্য।এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি৷ তবে করোনার জন্য এবার মেলার সময়সীমা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ বিকেল চারটা পর্যন্তই এই মেলা চলবে৷  দূর-দূরান্ত থেকে বহু মানুষ আসেন মেলায়। এলাকার মানুষ চেষ্টা করেন- একবার হলেও জুয়া খেলায় অংশ নিতে। প্রকাশ্য মাঠে ঘটা করে চলে জুয়ার মেলা।


 

Advertisement