বিগত এক দশকে শিলিগুড়ি এবং শিলিগুড়িকে কেন্দ্র করে যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত মন্থর হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন শিলিগুড়িতে আসেন উত্তরবঙ্গ ও সিকিম-বিহার-নেপাল-বাংলাদেশের প্রচুর মানুষ। ক্রমবর্ধমান যানজট এবং রাস্তার অভাব, সড়কপথে যাতায়াত দূর্বিষহ করে তুলেছে। শহরের মধ্যে এক কিলোমিটার রাস্তা যেতে সময় লাগে ১৫ থেকে ২০ মিনিট। তেমনভাবে রাস্তা সম্প্রসারণের জায়গা না থাকায়, দু-একটি বিকল্প উড়ালপুল বা সেতু করার পরিকল্পনা হয়েছে কেন্দ্র সরকার এবং রাজ্য সরকারের তরফে। কিন্তু তাতেও সমাধান কতটা হবে তা নিশ্চিত নন কেউই। তাই এবার রেলের তরফে বিকল্প ব্যবস্থা চালু করার জন্য পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই পরিকল্পনার মধ্যে সর্বাগ্রে রয়েছে দক্ষিণবঙ্গের মতো লোকাল ট্রেন নেটওয়ার্ক তৈরি করা, যা উত্তরবঙ্গে আজ পর্যন্ত তৈরি হয়নি। নেটওয়ার্কে জুড়তে চলেছে বিহারও।
আরও পড়ুনঃ দার্জিলিং-সিকিম-ডুয়ার্সে দুর্যোগ কবে থামবে? আবহাওয়ার পূর্বাভাস
লক্ষ্য ২০২৪
ইতিমধ্যে এ বিষয়ে বৈঠক হয়েছে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের সদর কার্যালয়ে। অসমের মালিগাঁওতে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের সদর দফতরে এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের জেনারেল ম্যানেজার অংশুল গুপ্তা, জলপাইগুড়ির সাংসদ জয়ন্ত রায়, শিলিগুড়ির বিধায়ক শংকর ঘোষ ও রেলের কর্তারা। সেখানে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনকে আন্তর্জাতিক মানে করে গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই স্টেশনকে কেন্দ্র করে শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর বন্দোবস্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বৈঠকে।
দশটি রুটে আপাতত চালানোর প্রস্তুতি নেওয়া হবে
প্রাথমিক পর্যায়ে দশটি রুটে লোকাল ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা নিয়েছে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল। সম্ভাব্য রুট গুলির একটা খসড়াও পেশ করা হয়েছে। তার মধ্যে শিলিগুড়ি টাউন-ঠাকুরগঞ্জ-এনজেপি-জলপাইগুড়ি টাউন আপ এব ডাউন, এনজেপি-বাগডোগরা, শিলিগুড়ি টাউন-নকশালবাড়ি সহ আরও কয়েকটি রুটের কথা বলা হয়েছে। সেগুলিও দ্রুত চালু করে দেওয়া হবে। আপাতত এই রুটগুলিতে ট্রেন চালু করার পর যাত্রী চাহিদা এবং গুরুত্ব বুঝে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো বা কমানো হতে পারে।
একাধিক বাড়তি স্টপেজ কিছু স্টেশনে
পাশাপাশি একাধিক এক্সপ্রেসের স্টপেজও বাড়ানো হচ্ছে উত্তরবঙ্গের গুরুত্বপূর্ণ কিছু স্টেশনে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় যেখানে এতদিন ট্রেন দাঁড়াতো না, এবার থেকে সেখানে হল্ট চালু করতে চলেছে রেল। যেমন ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের চ্যাংরাবান্ধা স্টেশনে পদাতিক এক্সপ্রেসের স্টপেজ থাকবে। সরাইঘাট এক্সপ্রেসের স্টপেজ থাকছে জলপাইগুড়ি রোড স্টেশনে। এতে অনেক বেশি সংখ্যক যাত্রী উপকৃত হবে। তাদের সকলে ছুটে এনজেপি আসতে হবে না।
আরও পড়ুনঃ দীপাবলিতে এভাবে লক্ষ্মীপুজো করলে আসে বৈভব-ধন-সম্পত্তি, জানুন নিয়ম
আগরতলা পর্যন্ত ট্রেন শীঘ্রই, চালু হবে বন্দেভারতও
শুধু তাই নয়, পরিকল্পনা চলছে শিলিগুড়ি বা এনজেপি থেকে উত্তরবঙ্গ হয়ে ত্রিপুরার আগরতলা থেকে কলকাতা পর্যন্ত নতুন ট্রেন চালানোর। বুধবার দিন আগরতলা থেকে আর প্রতি শুক্রবার দিন কলকাতা থেকে এই ট্রেন ছাড়বে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। তাছাড়া শিলিগুড়ি ও নিউ জলপাইগুড়ি থেকেও একাধিক লোকাল ট্রেন চালানো হবে। বহুচর্চিত বন্দে-ভারত এক্সপ্রেসও চালানো হতে পারে নিউ জলপাইগুড়ি এবং গুয়াহাটির মধ্যে বলে রেল সূত্রে জানা গিয়েছে।
দ্রুত চালু হবে এই দুটি ট্রেন
আপাতত পাওয়া খবর অনুযায়ী এনজেপি থেকে বাগডোগরা, শিলিগুড়ি থেকে ঠাকুরগঞ্জ এবং এনজেপি থেকে জলপাইগুড়ি টাউন পর্যন্ত লোকাল ট্রেন পরিষেবা শুরু হবে শীঘ্রই। আর এই সমস্ত রুটে লোকাল ট্রেন পরিষেবা শুরু হওয়ার পর থেকে চাপ কমবে উত্তরের জেলাগুলোর। সাথে যানজটও কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসবে।