মাছে কিসের ভয়!
মাছে কিসের ভয়! এ মাছ তো চাষের। বক্তা শিলিগুড়ি রেগুলেটেড মার্কেটের হোলসেল ফিশ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা। উত্তরবঙ্গে গঙ্গায় লাশ ভাসার খবরে মালদায় ভীতি ছড়ায় প্রথম। তা থেকে গোটা উত্তরবঙ্গেই মাছে ভয় ঢুুকে যায় বাসিন্দাদের। ফলে মুখ থুবড়ে পড়ে ব্যবসা। কিন্তু কেন এই ভয় ভেবে চিন্তে কূল পাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা।
করোনাতে এমনিতেই বেচা কেনা কম, তায় গুজবে জেরবার
করোনাতে এমনিতেই বেচা কেনা কম, তায় গুজবে জেরবার গোটা মাছ ব্যবসা। করোনা আবহে মুখ থুবড়ে পড়েছে ব্যবসা। তার ওপর গোদের ওপর বিষফোঁড়া, লাশ ছুঁয়ে আসছে মাছ। এই গুজবে মাছ প্রিয় বাঙালি মুখ ফিরিয়েছে মাছ খাওয়া থেকে।তার ফলে চরম বিপাকে মাছ ব্যবসায়ীরারা।
ক্রেতাদের আস্থা ফেরাতে বৈঠক
গঙ্গা মৃতদেহ ভেসে আসার খবরের পর থেকে মুখ থুবড়ে পড়েছে মাছ বিক্রি। প্রায় শূন্য মাছ বাজারগুলো। ক্রেতারা আতঙ্কিত হয়ে মাছ খাওয়ার বন্ধ করে দেওয়াতে চরম আর্থিক ক্ষতি মুখে শিলিগুড়ি সহ গোটা উত্তরবঙ্গের পাইকারি ও খুচরো মাছ বিক্রেতারা। সোমবার উত্তরবঙ্গের বৃহত্তম পাইকারি মাছ বিক্রির বাজার শিলিগুড়ি রেগুলেটেড মার্কেটের মাছ বেচা নিয়ে একটি বৈঠক ডাকা হয়েছিল। তাতে কীভাবে মাছ খাওয়াতে আস্থা ফেরানো যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়।
সংগঠনের সদস্যদের দাবি
এদিন হোলসেল ফিস মার্কটের পক্ষ থেকে বাপি চৌধুরী জানান, উত্তরবঙ্গ ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ চাষ করা মাছ বাজারে আমদানি করা হয়। তার ফলে শিলিগুড়ি তথা উত্তরবঙ্গের মানুষকে ভয় পাওয়ার প্রয়োজন নেই। পাশাপাশি তিনি এও দাবি করেন, এখনও পর্যন্ত মাছ খেয়ে কোনও অসুস্থ হওয়ার কোনও খবর নেই।
গঙ্গা কোথায়! এতো পুকুরের মাছ
গঙ্গায় এখনও এ রাজ্যে একটিও লাশ ভেসে আসেনি। আর বিহার কিংবা উত্তরপ্রদেশ থেকে গত ১ মাসে কোনও মাছের গাড়ি আসছে না। যা আসছে সমস্তটাই স্থানীয় পুকুর কিংবা ছোট নদীর মাছ। যাদের দূর দূরান্ত পর্যন্ত গঙ্গার সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই। তবু লোকে ভয় পাচ্ছে। যার কোনও ভিত্তি নেই।
উত্তরে ব্যবসা বন্ধ, ভরসা শুধু শিলিগুড়ি
শিলিগুড়ি রেগুলেটেড মার্কেট থেকে অসম, বিহার, সিকিম, নেপাল সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় মাছ সরবরাহ করা হয়। স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতিদিন এই মার্কেটে গড়ে দেড় কোটি টাকার ব্যবসা হয়। বিভিন্ন রাজ্য তেকে শতাধিক ট্রাক মাছ খালাস করে। যা একেবারেই বন্ধ। যা ব্যবসা হচ্ছে শিলিগুড়ির গ্রামাঞ্চলে চাষ করা ছোট রুই, কাতলা, বোরোলি, চিংড়ি, বাটা, চারাপোনা। যা একেবারেই স্থানীয় মাছ। ফলে ব্যবসা নেমে এসেছে মাত্র ১৫ থেকে ২০ লক্ষ টাকায়। তাও কদিন ধরে গুজবে তলানিতে ঠেকেছে। মাঝে মাছ বাজার বন্ধ রাখার কথা ভাবা হয়েছিল। তবে প্রশাসনিক অনুরোধে তাঁরা বাজার বন্ধ করেননি।
বিক্রির সময় সীমা বাড়ানোর দাবি
পাশাপাশি তিনি এদিন সরকার ও প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানান, বর্তমানে বাজার খোলা রাখার যে সময় সীমা দেওয়া হয়েছে, তাতে বেচা কেনার অসুবিধার মুখে পড়তে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। সময় সীমা নিয়ে প্রশাসনিক মহলে বিবেচনার অনুরোধ জানান বাপি চৌধুরী। সময় অন্তত এক ঘন্টা বাড়ালে কিছুটা ব্যবসা করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন তাঁরা।