উত্তরবঙ্গে এই প্রথম উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে হতে চলেছে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ কলেরা অ্যান্ড সেন্ট্রিক ডিজিসেসের (নাইসেড) ও স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস। ইতিমধ্যে জমি চিহ্নিত করা হয়ে গিয়েছে। মোট ১৬০০ বর্গফুটের এই ক্যাম্পাস হবে। রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকের পর একথা জানালেন নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান গৌতম দেব। ফলে এখন জটিল যে কোনও পরীক্ষার রিপোর্ট মিলবে সহজেই ।
উত্তরবঙ্গের আট জেলার মানুষ চিকিৎসার জন্য প্রধানত নির্ভর করে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ওপর। তাই এবার উত্তরবঙ্গের চিকিৎসা ব্যবসার উন্নয়নে আরও একধাপ এগোল রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর। উত্তরবঙ্গের মানুষকে আরও ভালো চিকিৎসা পরিষেবা দিতে এবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের ক্যাম্পাসে তৈরি হচ্ছে নাইসেড অর্থাৎ ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ কলেরা অ্যান্ড সেন্ট্রিক ডিজিসেসের এবং স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস।
ফলে এখন ভাইরাল সংক্রান্ত যে কোনও পরীক্ষার রিপোর্টের জন্য আর দক্ষিণবঙের ওপর নির্ভর করতে হবে না। এই দুটি প্রতিষ্ঠানের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস উত্তরবঙ্গে হলে কম সময়ের মধ্যে তৎক্ষণাৎ যেকোনো পরীক্ষার রিপোর্ট মিলবে এতে চিকিৎসা ব্যবস্থার গতি আরও ত্বরান্বিত হবে। এ বিষয়ে ইতিমধ্যে আলোচনা হয়ে গিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সাথে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের। শীঘ্রই উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ক্যাম্পাসেই তৈরি হবে নাইসেড ও স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে এর আগেও উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে নাইসেডের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস খোলার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল কিন্তু জমির কারণে তা আর হয়ে ওঠেনি। ফলে বেশ কয়েক বছর পিছিয়ে যায় এই প্রকল্প। তবে করোনাকালে এই দুই প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব বেড়ে যাওয়ায় অতি দ্রুততার সাথে সেই সমস্ত রকম জোট কাটিয়ে এবার উত্তরবঙ্গের আট জেলার জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিকেল ক্যাম্পাসেই তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর। জানা গেছে ইতিমধ্যে নাইসেড দ্বিতীয় ক্যাম্পাস এর জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের ক্যাম্পাসে ১৬০০ বর্গফুটের একটি জমি চিহ্নিত করা হয়েছে সেখানেই এই ক্যাম্পাস গড়ে তোলা হবে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে ইতিমধ্যে জমি হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে মেডিকেল কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে বর্তমানে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে থাকা ভাইরাল রিসার্চ এন্ড ডায়াগনস্টিক ল্যাবরেটরীকেও স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনের ধাচে গড়ে তোলে উন্নত মানের করা হচ্ছে। জানা গেছে এর ফলে ওই ল্যাবরেটরীতে অন্তত ২৪ রকমের ভাইরাল রোগের নমুনা পরীক্ষা করা যাবে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে বসেই। ইতিমধ্যে এর জন্য 15 লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য সরকার। ফলে স্বাভাবিকভাবেই এই গবেষণাগার দুটি তৈরি হলে নমুনা পরীক্ষা এবং রিপোর্টের জন্য আর দক্ষিণবঙ্গের উপর নির্ভর করতে হবে না। খুব সহজেই কম সময়ের মধ্যে যেকোনো ভাইরাল রোগের নমুনার পরীক্ষার রিপোর্ট মিলবে জলদি। এতে একদিকে যেমন উত্তরবঙ্গের চিকিৎসা ব্যবস্থায় গতি বাড়বে তেমনি দ্রুত সঠিক চিকিৎসা পাবে হাসপাতালে রোগীরা।
উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সদ্য নিযুক্ত রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান গৌতম দেব বলেন, করোনার নানান পরীক্ষার জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হয়েছে নাইসেডের বেলেঘাটার দিকে। তাই এবার আমরা এখানেই একটা নাইসেডের ক্যাম্পাস করব। এখানে পর্যাপ্ত জমিও রয়েছে। বিষয়টি আমি স্বাস্থ্য দফতরকে জানাবো। এর আগেও নাইসেডের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস গড়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল কিন্তু জমিজটে তা হয়নি। তবে এবার বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী নিজে দেখছেন। পাশাপাশি উত্তরবঙ্গ মেডিকেল এর পরীক্ষাগার কেউ স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন ধাঁচে গড়া হচ্ছে।