শিলিগুড়িতে একটি বরফ কারখানা খোলা নিয়ে পুরনিগমের সঙ্গে বিবাদ গড়াল আদালত পর্যন্ত। সাধারণত পুর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপত্তি, বিশেষ টেঁকে না। তবু পুরনিগম লিখিত নোটিশ না দিয়ে পুলিশ পাঠাচ্ছে বলে ক্ষোভ ছড়িয়েছে এলাকায়। যদিও শিলিগুড়ির পুর কমিশনার সোনম ওয়াংদি ভুটিয়া জানিয়েছেন, দ্রুত নোটিশ দেওয়া হবে। আপাতত তা বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
অভিযোগ ঠিক কি ?
অভিযোগ, শিলিগুড়ি পুরনিগমের ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শেখর চৌধুরী ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে তাঁর বাড়িতে বরফকল তৈরি করেন। তিনি জানান, আইন অনুযায়ী শিলিগুড়ি পুরনিগম() প্রদত্ত প্রভিশনাল ট্রেড লাইসেন্স (provisional trade license ), দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ (pollution control board) এর এনওসি NOC, এবং দমকল fire এর এনওসি নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন।
পাড়ার লোকের আপত্তি
আশপাশের কিছু লোক বাড়িতে বরফকল করে ব্যবসা করায় আপত্তি জানায়। তাঁরাই রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অভিযোগ জানায় পুরনিগমে। এরপর পরে ব্যবসার লাইসেন্স এর নবীকরণ এবং বহুবার কমার্সিয়াল জলের আবেদন করেন। কিন্তু বারবার তা খারিজ হয়ে যায়। অথচ বাকি সমস্ত দফতরের অনুমোদন রয়েছে। তাহলে কেন আবেদন খারিজ হয়েছে তা নিয়ে সদুত্তর না মেলায় হাইকোর্ট High Court এর দ্বারস্থ হন।
অভিযোগকারীর দাবি
হাইকোর্ট পুরনিগমকে নথি খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নিতে বলে। অভিযোগকারী শেখরবাবুর দাবি, "নির্দেশিকায় বলা হয়, আমাকে লাইসেন্স, জলের কমার্শিয়াল লাইন দেওয়া হবে না কেন, অথবা কেন দেওয়া হল না তা লিখিত ভাবে জানাতে হবে। কিন্তু পুর কমিশনার মৌখিক আদেশে আমার কারখানা বন্ধ করে দিয়েছেন। আমি কাজ শুরু করতে গেলে আমার বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়ে আমার কারখানা বল পূর্বক বন্ধ করান। অথচ কারখানা বন্ধের লিখিত নোটিশ চাইলে তিনি তা দিতে গড়িমসি করছেন।"
অভিযোগকারীর আইনজীবীর বক্তব্য
অভিযোগকারীর আইনজীবী সঞ্জয় মজুমদারের দাবি, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের ২০১৬ সালের একটি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী বরফকল "গ্রিন জোন" ভুক্ত কারখানা। যা শহরের যে কোনও জায়গায় হতে পারে। শুধু মাত্র দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের অনুমতি দরকার। যা আমার মক্কেলের আছে। হাইকোর্ট কারখানা বন্ধের নির্দেশ না দিলেও পদাধিকারবলে তা কমিশনার বন্ধ করিয়ে রেখেছেন। অথচ বারবার কারখানা বন্ধ রাখার লিখিত নির্দেশ চাইলেন তিনি দিচ্ছেন না।
পুর কমিশনারের পাল্টা যুক্তি
লিখিত নোটিশ না দিয়ে কেন বন্ধ রাখা হয়েছে জিজ্ঞাসা করায় পুর কমিশনার সোনম ওয়াংদি ভুটিয়া বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ীই কাজ হচ্ছে। ওঁদের যদি অন্য নথিতে কোনও সমস্যা না থাকে, তাহলে ট্রেড লাইসেন্স নবিকরণ করা হবে। নইলে আইনানুযায়ী কাজ হবে। তবে সামান্য বিষয়ে এত দেরি হচ্ছে কেন, জিজ্ঞাসা করায় পুর কমিশনার বলেন, দ্রুত প্রক্রিয়া শেষ করে নোটিশ বা নির্দেশ দিয়ে দেওয়া হবে।