scorecardresearch
 

গ্রাহকই নেই, অথচ রেশন বিলি হয়ে যাচ্ছে, শিলিগুড়িতে চুপ প্রশাসন

রেশন দোকান নেই, গ্রাহক নেই। অথচ রেশন বিলি হয়ে যাচ্ছে। তার হিসেবও জমা পড়ে যাচ্ছে বছরের পর বছর। শিলিগুড়িতে রেশন নিয়ে প্রতি মাসে প্রায় তিন কোটি টাকার নয়ছয় হচ্ছে। প্রশাসনের পরোক্ষ মদতে কয়েকজন রেশন ডিস্ট্রিবিউটর চালাচ্ছেন এই কারবার বলে অভিযোগ। সরকার খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিলেও কয়েক বছরেও কোনও উদ্যোগ দেখা যায়নি। অসাধুু চক্র চলছে রমরমিয়ে।

Advertisement
প্রতীকী ছবি প্রতীকী ছবি
হাইলাইটস
  • প্রতি মাসে প্রায় ৩ কোটি টাকার নয়ছয় চলছে
  • খাদ্য সরবরাহ দফতরের একাংশের মদতে চলছে ব্যবসা
  • সবাই জানে তবু ক্ষতির ভয়ে মুখ খোলে না কেউ

দোকান নেই, কিন্তু দোকান আছে

খাতায় কলমে রেশন বিলি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু যে দোকান থেকে রেশন বিলি হচ্ছে, সে দোকানই নেই। দোকান যখন নেই, তার মানে গ্রাহকও নেই। অথচ বরাদ্দ অর্থ সমান হারে বিক্রি হয়ে গিয়েছে বলে দেখা যাচ্ছে। 

রেশন যাচ্ছে কোথায়, রহস্য় অধরা

শিলিগুড়িতে অস্তিত্বহীন দোকানের অস্তিত্বহীন গ্রাহক রেশন নিয়ে যাচ্ছেন বছরের পর বছর। দপ্তরে কর্তারা আসছেন নিজেদের বরাদ্দ সময় কাটিয়ে এর বদলী হয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু এই রেশন যাচ্ছে কোথায়, সে রহস্যের সমাধান হচ্ছে না।

পোশাক বদলেছে, দুর্নীতি বদলায়নি

বাম আমল থেকে চলে আসা এই অদ্ভুতুড়ে দুর্নীতি, আশা করা গিয়েছিল নতুন সরকারের আমলে বন্ধ হবে। কিন্তু পরিস্থিতি বদলায়নি। তছরুপের কৌশল বদলে গিয়েছে, বামফ্রন্ট আমলে বামেদের আশ্রয়ে যারা দুর্নীতি করছিলেন, তারাই পোশাক বদলে এখন তৃণমূলের ছত্রছায়ায় রয়েছেন।

থানা থেকে প্রশাসন মাসোহারা রয়েছে বলে অভিযোগ

এমনকি স্থানীয় থানা থেকে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন থানায় তাঁদের হিসাব বোঝানো আছে বলে অভিযোগ। ফলে বছরের পর বছর এসব চললেও কেউ টিকিটিও ছুঁতে পারেন না। বরং রাতবিরেতে খাদ্যপণ্যের গাড়ি সসম্মানে তাঁদের সুবিধামতো পৌঁছে দিতে সাহায্য করে প্রশাসনের একাংশ। এমনকী খাদ্য দপ্তরের সঙ্গে তাঁদের বোঝাপড়া রয়েছে বলে অভ্যন্তরের খবর।

গ্রাহকদের নব্বই শতাংশই ভুয়ো

জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ি মহকুমার বিভিন্ন রেশন ডিলারের সঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় চা শ্রমিকদের নন ওয়ার্কার খাতে ঋণ নেওয়ার কথা। কিন্তু নন ওয়ার্কার হিসেবে যে হিসেবে দেখানো আছে তার নব্বই শতাংশই অস্তিত্ব নেই।

দেড়শো ডিলার 

শিলিগুড়ি মহকুমায় প্রায় দেড়শো জন রেশন ডিলার রয়েছেন। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে চা-বাগানের শ্রমিক পরিবার এবং তাদের ওপর নির্ভরশীলদের জন্য নন ওয়ার্কার খাতে রেশন প্রকল্প চালু হয়। ভুয়া গ্রাহক তৈরি করে রেশন তুলে বিক্রি করে দেওয়া চক্র সক্রিয় আমল থেকেই। যা আরও ফুলে ফেঁপে উঠছে। সেই নয়ছয়ের পরিমাণ শুধুমাত্র শিলিগুড়ি মহকুমায় প্রায় তিন কোটি টাকা বলে জানা গিয়েছে।

Advertisement

সরকারি আশ্বাস মিললেও কাজ হয়নি

জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক খাদ্যমন্ত্রী থাকার সময়ে ঘোষণা করেছিলেন প্রতিটি বাগানে রেশন দোকান খোলা হবে। তা আজ পর্যন্ত হয়নি। আলাদা করে নন ওয়ার্কারদের জন্য রেশন দোকান খোলা হলে, নয়ছয়ের চক্র বন্ধ হয়ে যাবে বলে চাপ দিয়ে দোকানগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে। বিভিন্ন রেশন ডিলারদের জোর করে তাদের সরকারি খাতে খাদ্যপণ্য দেওয়া হয়েছে বলে সই করিয়ে নেওয়া হয়। তারা মুখ বুঝে সহ্য করেন, প্রভাবশালী গোষ্ঠীর রোষ নজরে পড়ার ভয়ে।

 

Advertisement