অশোক ভট্টাচার্য
বিধানসভা ভোটে যেদিন হেরে গিয়েছিলেন, গণনার গতিবিধি বুঝতে পেরেই কাউন্টিং ভোট ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। বহু যুদ্ধের পোড় খাওয়া নেতা প্রাক্তন প্রধান মন্ত্রী তথা বিদায়ী শিলিগুড়ির মেয়র এবং বিদায়ী বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্য। তিনি জানিয়েছিলেন, আর সক্রিয় রাজনীতিতে নয়, দলে থাকবেন তবে পরামর্শদাতা হিসেবে।
অশোক জমানা ফেরাতে চাইছে বামেরা
তাঁর প্রতিযোগিতামূলক রাজনৈতিক জীবনে তখনই দাঁড়ি পড়ে গিয়েছিল বলে অনেকেই মনে করেছিলেন। কিন্তু ওই যে কথা আছে শেষ হয়েও হইল না শেষ। আবার প্রবলভাবে শিলিগুড়ি বামেদের মধ্যে অশোক জমানা ফেরাতে চাইছে বামফ্রন্ট, বলা ভালো সিপিএম।
কাণ্ডারি হতে ডাক
বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পর একে একে দল ছাড়ছেন পুরনো সহযোদ্ধারা। ফলে এই পরিস্থিতিতে কান্ডারী হয়ে হাল ধরতে হবে সেই পুরনো অশোককেই। এমনটাই মনে করছে দলের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা। অশোকবাবুর নিজের ইচ্ছে না থাকলেও সম্ভবত তাঁকে সামনে রেখেই শিলিগুড়িতে পুরনিগমের নির্বাচনে ঘর গোছাতে নামছে সিপিএম।
দল বাঁচাতেই অশোক মুখ
নির্বাচনের আগেই দল ছেড়েছিলেন শিলিগুড়ি পুরনিগমের বিদায়ী সিপিএম মেয়র পারিষদ শংকর ঘোষ। অশোকবাবুর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে নিজের রাজনৈতিক গুরুকে পরাজিত করেছেন। তাঁর সঙ্গে যুব সম্প্রদায়ের একটা বড় অংশ বিজেপিতে যোগ দিয়েছে। সেই সঙ্গে গোড়া থেকেই সিপিএম করে আসা প্রীতিকণা বিশ্বাস, ডেপুটি মেয়র রামভজন মাহাতো, কমল আগরওয়ালরা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। আরও কিছু কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন বলেও আগাম পূর্বাভাস রয়েছে।
মনোবল বাড়াতে মেন্টর
এই পরিস্থিতিতে দলের মনোবল বাড়াতে বিকল্প আর কেউ নেই। তাই প্রকাশ্য ময়দানে নামতে হচ্ছে অশোককে। বিশেষ করে বিধানসভা নির্বাচনের ট্রেন্ড মানে বামেদের ভোট বিজেপিতে চলে গেলে তৃণমূলের প্রধান প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়াবে বিজেপি। কারণ অন্য দল কংগ্রেসের চার জনের মধ্যে দুজন কাউন্সিলর দল ছেড়ে চলে গিয়েছেন তৃণমূলে। ফলে নিজেদের ভোট ধরে রাখতে অশোক ছাড়া গতি নেই।
ওয়ার্ডভিত্তিক ভাল ফলের আশা
তবে বিধানসভা নির্বাচনে খারাপ ফল করলেও শিলিগুড়িতে ওয়ার্ডভিত্তিক নির্বাচনগুলিতে সিপিএম ভালো ফল করবে বলে মনে করছে অনেকেই। বিশেষ করে বিজেপির নিচু স্তরে তেমন সংগঠন এখনো মজবুত নয়। আর শিলিগুড়িতে তৃণমূল দলের প্রতি বেশিরভাগই আস্থাশীল নয়। তা বিগত সব কটি নির্বাচনে দেখা গিয়েছে।
খালি আসনে নতুন মুখের খোঁজ
তবে অশোকবাবুর নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থাকলেও দল যা নির্দেশ দেবে সেটাই পালন করবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন। পাশাপাশি যাঁরা দল ছেড়েছেন, তাঁদের জায়গায় নতুন কাউন্সিলর পদে কাকে দাঁড় করাবেন সে বিষয়ে খোঁজ চলছে।