বাড়তি ছুটি কাজে লাগিয়ে উদ্য়ান
এমনিতে ফি বছর ১৫ জুন থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জঙ্গল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একে জন্তু জানোয়ারদের ব্রিডিং সিজন বলে। এই সময়ে জঙ্গলে কোনও রকম ঘোরাফেরা পর্যটক আগমন, সাফারি থেকে শুরু করে কোনও রকম বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকে। চলতি বছরে করোনা পরবর্তী পরিস্থিতি এবং লকডাউন পরিস্থিতি মিলিয়ে মে মাসে শুরু থেকেই জঙ্গল প্রায় বন্ধই বলা চলে। ফলে জঙ্গলের নিষিদ্ধ সময় খানিকটা এগিয়ে এসেছে এ বছর। তবে সময় যতই এগোক না কেন, প্রাকৃতিক নিয়ম তো আর বদলে যায় না! তাই বাড়তি সময়টুকু আদতে কোন কাজে লাগার কথা নয়। এই সুযোগ কাজে লাগিয়েছে লাটাগুড়ির বন বিভাগ।
কলাখাওয়া এলাকায় ভেষজ উদ্যান
এই সুযোগে তারা কলাখাওয়া নজর মিনার চত্বরে ভেষজ উদ্যান তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছেন। কলাখাওয়া নজর মিনার চত্বরে যে উদ্যান তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, তা বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। বিভিন্ন প্রজাতির ভেষজ উদ্ভিদ সংগ্রহের কাজ শুরু করে দিয়েছে বন দপ্তর। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই এই উদ্যান তৈরির প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাবে বলে তাঁরা আশা করছেন। ফলে সেপ্টেম্বরে যখন ফের পর্যটকদের জন্য বন-জঙ্গল খুলে দেওয়া হবে, তখন পর্যটকরা এসে এই উদ্যানে ভেষজ উদ্ভিদ দেখতে পাবেন বলে মনে করছেন তাঁরা।
কি থাকবেই ভেষজ উদ্যানে
এই ভেষজ উদ্যানে বিভিন্ন রকম ভেষজ উদ্ভিদ রাখা হবে। সেই সঙ্গে গাছগুলির বিজ্ঞানসম্মত নাম, উপকারিতা, সম্পর্কিত তথ্য লিখে গাছের সঙ্গে লাগিয়ে রাখা হবে। একদিকে যেমন শিক্ষামূলক ভ্রমণের ক্ষেত্রে উদ্যান কার্যকরী হবে, পাশাপাশি এই গাছগুলি চিকিতসা বা শুশ্রুষাজনিত কারণে ব্যবহার করা যাবে।
কি কি গাছ থাকবে
লাটাগুড়ি জঙ্গল বিভিন্ন গাছের বৈচিত্র্যে ভরপুর। জঙ্গলের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বাসক, সর্পগন্ধা, চিরতা,ঘৃতকুমারি, তুলসি, দন্ডকলস, পাথরকুচি সহ বিভিন্ন রকম ভেষজ উদ্ভিদ। আপাতত খান পঞ্চাশ এমন উদ্ভিদ জোগাড় করা হয়েছে। পরবর্তীতে আরও কিছু জোগাড় করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
প্রস্তুতি তুঙ্গে
পর্যটকদের আনাগোণা নেই। তাই বাড়তি সময় পাওয়া যাচ্ছে বনকর্মীদের। তাঁরাই হাত লাগিয়ে উদ্যান তৈরিতে লেগেছেন। এর আগে রামসাইতে এ রকম উদ্যান তৈরি হয়েছিল। পরে তা পরিচর্যার অভাবে নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে এটি সফল হলে আরও অন্যান্য বনেও তা করা যেতে পারে বলে বন দফতরের তরফে জানানো হয়েছে।