একটি বেসরকারি হোমে বাচ্চা কেনাবেচার অভিযোগে উত্তাল হয়ে উঠল হাওড়ার মালিপঞ্চঘরা থানা এলাকা। ওই হোম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বাচ্চাদের ২-৩ লক্ষ টাকার বিনিময়ে কেনাবেচার অভিযোগ জমা পড়েছে থানায়। তার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ হাওড়া ও কলকাতার বিভিন্ন এলাকা থেকে ১০ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তাঁদের আদালতে পেশ করা হলে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পুলিশের মুখে কুলুপ
এই হোমটি হাওড়ার এক প্রাক্তন ডেপুটি মেয়রের পুত্রবধূ চালান বলে বিজেপি ও স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ। ফলে ঘটনাটি আলাদা মাত্রা পেয়েছে। ওই ডেপুটি মেয়র তৃণমূল নেতা বলেই হোক, কিংবা অন্য় কোনও কারণেই হোক, নিজেদের প্রক্রিয়া চালালেও এখনও পর্যন্ত পুলিশের তরফ থেকে কোনও সরকারি বিবৃতি পাওয়া যায়নি।
বাচ্চাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, মারধর করার অভিযোগ
শুধু বাচ্চা বিক্রিই নয়, বাচ্চাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, মারধর করার অভিযোগও রয়েছে হোম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।এই বিষয়ে হাওড়া সিটি পুলিশের মহিলা থানা লিখিত অভিযোগ জানানোর পর হাওড়া সিটি পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিক ও হাওড়া সিটি পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ তদন্তে নামে। প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে, গতকাল রাতে উত্তরা শ্রীরাম রোড এলাকায় পুলিশ হানা দেয় ও বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে যদিও এই ঘটনায় কোনও রকম পুলিশের সঙ্গে সম্পর্ক করলে তারা কোনও কথা বলতে চাইছেন না। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
তল্লাশি শুরু হয়
শনিবার সকাল থেকে বিভিন্ন জায়গা ঘুরে ঘুরে হাওড়া সিটি পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ ও আধিকারিকরা তাদের তল্লাশি শুরু করে। তারপরই শিশুদের ওপর শারীরিক অত্যাচারের অভিযোগে হোমের মালিকসহ গ্রেফতার ১০। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে সালকিয়ার শ্রীরাম ঢং রোডের একটি সরকার অনুমোদিত হোমে। ধৃতদের মধ্যে আছেন একজন ডব্লুবিসিএস অফিসারও। ধৃতদের আজ হাওড়া আদালতে তোলা হয়।
করুণা পশ্চিমবঙ্গ উইমেন অ্যান্ড চিলড্রেন ওয়েলফেয়ার
হাওড়া পুরসভার তৃণমূল পরিচালিত বোর্ডের প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র মিনতি অধিকারীর পুত্রবধূ সালকিয়ার শ্রী রাম ঢং রোডে গত পাঁচ বছর ধরে একটি বেসরকারি হোম চালান। ওই হোমে বিভিন্ন জায়গা থেকে শিশুদের এনে রাখা হত। জানা গেছে করুণা পশ্চিমবঙ্গ উইমেন অ্যান্ড চিলড্রেন ওয়েলফেয়ার সোসাইটি নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অধীনে ওই হোমটি পরিচালনা করতেন প্রাক্তন ডেপুটি মেয়রের পুত্রবধূ গীতশ্রী অধিকারী। ওই হোমে ক্রেডেল বেবি রিসেপশন সেন্টার তৈরি করা হয়েছিল যার মাধ্যমে শিশু দত্তক দেওয়া হত।
স্থানীয়রা মুখ খুলেছেন, মুখে কুলুপ তৃণমূলের
সূত্রের খবর কিছুদিন আগে নবান্নতে এক মহিলা অভিযোগ করেন যে ওখানে শিশুদের ওপর শারীরিক নিগ্রহ করা হয়। এই অভিযোগ পাওয়ার পর নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। গতকাল হাওড়া সিটি পুলিশের কমিশনারের নির্দেশে মহিলা থানা হোমে রেড করে। মালিকসহ আরও ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়। শিশুগুলিকে নিরাপদে জায়গা সরিয়ে নিয়ে যাওয়া পর হোমে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে মহিলা থানার পুলিশ। মিনতি অধিকারীর বাড়িতে গেলে দেখা যায় বাড়ি তালা বন্ধ। বাড়িতে কেউ নেই। ফোনে তিনি এ ব্যাপারে কিছু বলতে চাননি।