শীতের মরশুম (Winter Season) পড়ে গেছে। আর শীত মানেই, নলেন গুড়ে তৈরি পিঠে পুলি পায়েসের মন মাতানো গন্ধ। শুধু তাই নয়, শীতের নলেন বা পাটালি গুড় দিয়ে আরও নানা ধরনের খাবার তৈরি করে থাকেন খাদ্যরসিকরা। যে কারণে শীতকাল পড়া মাত্রই চাহিদা তৈরি হয় খেঁজুর গুড়ের। যার জেরে কার্যত শীত পড়ার আগে থেকেই ব্যস্ততা শুরু হয়ে যায় মাজদিয়া, হাঁসখালি, চাপড়া, কৃষ্ণনগর, রানাঘাট, নাকাশিপাড়া, শান্তিপুর, চাকদহ সহ নদিয়ার (Nadia) বিস্তীর্ণ অঞ্চলের গুড় ব্যবসায়ীদের। কিন্তু এই বছর পরিস্থিতি অন্য। করোনা (Corona) ও আবহাওয়ার কারণে সমস্যা দেখা দিয়েছে গুড় তৈরিতে। ফলে মুনাফা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ব্যবসায়ীরা।
মূলত কার্তিক মাস থেকেই খেঁজুর গাছ কেটে রস বের করার প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। কিন্তু ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, এই বছর করোনার কারণে নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শুরু করা যায়নি। এছাড়া দীর্ঘ লকডাউনের কারণে পরিবহণ জনিত সমস্যারও সম্মুখীন হতে হয়েছে। পাশাপাশি শীত অনুভূত হলেও এখনও জাঁকিয়ে ঠাণ্ডা না পড়ায় গাছে রসও তেমন তৈরি হচ্ছে না। কারণ শীত যত পড়বে ততই গাছে বাড়বে রসের পরিমান। সেক্ষেত্রে অন্যবারের মতো তৈরি করা যাচ্ছে না গুড়।
রয়েছে অন্যান্য সমস্যাও। গুড় প্রস্তুতকারক মজিদ শেখ জানাচ্ছেন, লকডাউনের ফলে মানুষের হাতে টাকাও তেমন নেই। রয়েছে পরিবহণের সমস্যাও। ফলে মাজদিয়ার বিখ্যাত গুড়ের হাট সহ জেলার অন্যান্য বাজারগুলিতেও সেভাবে ক্রেতা বা মহাজনদের দেখা মিলছে না। আর যেটুকু বা চাহিদা রয়েছে তাও পূরণ করা যাচ্ছে মূলত রসের ঘাটতির জন্য। সেদিক থেকে দেখতে গেলে এই বছর রীতিমতো বিপাকে পড়েছেন নদিয়ার গুড় ব্যবসায়ীরা। এক্ষেত্রে গুড় প্রস্তুতকারক ও ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, করোনাজনিত সমস্যার তো দ্রুত সমাধান হওয়া সম্ভব নয়, এটা একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া, কিন্তু ঠাণ্ডার পরিমানটা যদি বাড়ে তাহলে কিছুটা হলেও সামাল দেওয়া যায় পরিস্থিতি। তাই এখন শুধু হাড় কাঁপানো শীতের অপেক্ষাতেই বসে রয়েছেন তাঁরা।