
এই রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় রয়েছে সতীপীঠ (Sati Pith)। তারই অন্যতম পূর্ব বর্ধমান (East Burdwan) জেলার অট্টহাস (Attahas) মন্দির। সতীর অধঃওষ্ঠ বা নিচের ঠোঁট পড়েছিল এখানে। সেই থেকেই নাম হয় অট্টহাস। দেবী এখানে চামুণ্ডা রূপে পূজিতা। বিশেষ বিশেষ তিথি এবং প্রতি অমাবস্যা তো বটেই, এছাড়াও সারাবছরই এখানে কমবেশি ভিড় থাকে ভক্তদের। তবে করোনা পরিস্থিতিতে বদলেছে ছবিটা। এক্ষেত্রে কোভিড ১৯ সংক্রমণ ঠেকাতে বেশ কিছু সতর্কতা অবলম্বন করছে মন্দির কর্তৃপক্ষও, জানালেন মন্দিরের মহারাজ মহেন্দ্র শঙ্কর গিরি।
বহু প্রাচীন এই অট্টহাস মন্দির। স্বভাবতই মন্দিরের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বহু কাহিনী,বহু ইতিহাস। মহারাজ মহেন্দ্র শঙ্কর গিরি জানাচ্ছেন, "মন্দিরর গর্ভগৃহ খুবই প্রাচীন। মন্দিরের প্রতিষ্ঠাকাল নির্দিষ্ট ভাবে জানা না গেলেও ১৩৪২-এ এই মন্দির সংস্কার করা হয়"। মহারাজ আরও জানাচ্ছেন,"মায়ের প্রধান শিলা ভূগর্ভের কয়েক হাত নিচে চলে গেছে"। এপ্রসঙ্গে তিনি জানান, হাজার বছরেরও বেশি পুরনো এক নথি পাওয়া গেছে, যেখানে আঁকা ২.৫X২X১ ফুট মাপের একটি স্কেচ থেকে এই বিষয়টির প্রমাণ পাওয়া যায়। এছাড়াও অট্টহাস মন্দির সংলগ্ন রয়েছে মা রটন্তী কালীর মন্দির। সেই মন্দিরে একসময় বাংলার ডাকাতরা পুজো করত বলেই জানাচ্ছেন মহারাজ। ওই মন্দিরে নলবলি হত বলেও শোনা যায়। তবে এখন সেই বাংলার ভয়ঙ্কর ডাকাতও নেই, সেই জমানাও নেই। তবে প্রথা মেনে মায়ের পুজো আজও হয়ে চলেছে। এছাড়াও এখানে রয়েছে পঞ্চমুণ্ডির আসন।
মন্দিরে সারাবছরই আনাগোনা লেগে থাকে ভক্তদের। প্রতি অমাবস্যায় প্রায় দু থেকে তিনশো মানুষ মায়ের ভোগপ্রসাদ পান। সামনেই দীপাবলি, তাই সেদিনও ভক্তের ঢল নামতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। কিন্তু করোনা কালে বদলেছে পরিস্থিতি। তাই নেওয়া হচ্ছে বেশকিছু সতর্কতা। মহারাজ জানাচ্ছেন,"সবাইকে সচেতন করা হচ্ছে. একইসঙ্গে সবাই যাতে মাস্ক পড়ে মন্দিরে প্রবেশ করেন সেই ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। রাখা হচ্ছে স্যানিটাইজারও।" এছাড়া এবছর ভোগ বিতরণের ক্ষেত্রেও সংখ্যাটা কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানালেন মহারাজ মহেন্দ্র শঙ্কর গিরি।