ফুটফুটে সাত মাসের শিশুকন্যা। নাম মৌপ্রিয়া দাস। এক ছেলের পর ঘরে লক্ষ্মী আসায় খুশি ছিলেন বাবা-মা। মেয়ের মুখেভাতের জোগাড় প্রায় সারা। আগামী সোমবার ঠিক ছিল মুখেভাতের তারিখ। তার আগেই মর্মান্তিক ঘটনায় চিরতরে চলে গেল শিশুটি। মুখেভাতের জোগাড় পড়ে রইল যেমনকার তেমন। পরিবারে এখন শুধুই কান্না। ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ির ফালাকাটায়। ঘটনায় স্তম্ভিত শিশুর পরিবার।
সোমবার রাতে অন্নপ্রাশনের জন্যই মামাবাড়িতে নেমন্তন্ন করে সারাদিন কাটিয়ে ফিরছিল মৌপ্রিয়া। বাবা-মায়ের সঙ্গে বাইকে চেপে। বাবা,মায়ের সঙ্গে ছিল দাদাও। ফালাকাটার চরতোর্ষা নদীর পারের রাস্তায় কাজ চলায়, ডাইভারশন করে গাড়ি-বাইকগুলিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সেগুলি নদীর খুব কাছ দিয়ে যাতাযাত করছে। এদিনও যানজট ছিল। শ্বশুরবাড়ি থেকে বাইকে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন সাহেবপোঁতার বাসিন্দা উত্তম দাস। বাইকের ছিল পাঁচ বছরের ছেলে উৎকর্ষ দাস। তাঁর পিছনে সাত মাসের মৌপ্রিয়া দাসকে কোলে নিয়ে বসেছিলেন স্ত্রী পূর্ণিমা দাস।
ডাইভারশনের জন্য নদীর পার দিয়ে যাওয়ার সময়, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাইক থেকে নদীতে পড়ে যান স্বামী, স্ত্রী দু’জনই। আর জলে পড়ে কিছুটা ভেসে যেতেই মায়ের কোল থেকে ছিটকে পড়ে যায় সাত মাসের ওই শিশুকন্যা। ছেলে কোনওভাবে বাইকেই আটকে থাকে। বাইকটি অবশ্য জলে পড়েনি। এরপর খবর ছড়িয়ে পড়তেই নদীতে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। রাত সাড়ে ১০টা-১১টা নাগাদ ডাইভারশন থেকে প্রায় ২ কিমি দক্ষিণে শিশুটির মৃতদেহ উদ্ধার করেন স্থানীয় লোকজন। মা-বাবাও রাতের অন্ধকারে খুঁজে পায়নি শিশুটিকে। এদিকে রাতে খবর পেয়ে এলাকায় ফালাকাটা থানার পুলিশ ও দমকল কেন্দ্রের একটি ইঞ্জিন পৌঁছোলে স্থানীয়রা বিক্ষোভ দেখান। কাজে ঢিলেমি হচ্ছে বলে রাজনৈতিক তরজাও শুরু হয়। তৃণমূলের তরফে অবরোধও করা হয়। ঘন্টাখানেক ফের যানজটে নাকাল হয় ফালাকাটাবাসী।