
'তুমি একটু দেখে দিও।' ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রামের বিজেপি নেতাকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফোন কল ও তার রেকর্ডিং ভাইরাল হওয়ার ঘটনা মনে আছে? সেই বিজেপি নেতা প্রলয় পাল এবার রাজনীতি থেকেই সন্ন্যাস নেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন ফেসবুক পোস্টে। লিখলেন, 'ভাল থেকো রাজনীতি। আর নয়। দাও বিদায়।'
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফোনের কল রেকর্ডিং ফাঁস করেই ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটের সময় শিরোনামে এসেছিলেন প্রলয়। নন্দীগ্রামের স্থানীয় বিজেপি নেতা প্রলয় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত ছিলেন। নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীকে জেতাতে কোনও চেষ্টার কসুর করেননি তিনি। খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফোন কলের রেকর্ডিং ফাঁস করে দিয়েছিলেন। তাহলে কী ঘটল, যে একেবারে রাজনীতি ছাড়ার পথে?
সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত ভোটে নন্দীগ্রামে ভাল ফল হয়নি বিজেপির। নন্দীগ্রামে দীর্ঘ দিন ধরে বিজেপি দল করছেন প্রলয়। শুভেন্দু অধিকারী যখন তৃণমূল কংগ্রেসে ছিলেন, তখন প্রলয় বিরোধিতা করেছেন। প্রলয় এখন সাংগঠনিক জেলা সভাপতি হলেও বেশ কোণঠাসা। শুভেন্দু অধিকারী জেতার পরেও জেলায় প্রলয়ের বিশেষ গুরুত্ব বেড়েছে, তাও নয়। তাই প্রলয়ের এই অভিমানী ফেসবুক পোস্ট শুভেন্দু অধিকারীকেই বার্তা বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
প্রলয় পাল বলছেন, তিনি জেলা সভাপতির কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দেবেন। দলও ছাড়ছেন। জীবনের প্রথম পর্বে তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় নেতা হিসেবে কাজ করেছেন প্রলয় পাল। ২০১৩ সালে তৃণমূল ছেড়ে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। বৃহস্পতিবার বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার নতুন জেলা কমিটি গঠিত হয়েছে। ৯১ জন সদস্য বিশিষ্ট জেলা কমিটিতে পদাধিকারী রয়েছেন ২৩ জন। সেই ২৩ জনের মধ্যে ৮ জন সহ-সভাপতি, ৪ জন সাধারণ সম্পাদক ও ১০ জন সম্পাদক রয়েছেন। তালিকায় ক্রম অনুযায়ী ৫ নম্বরে প্রলয় পালের নাম রয়েছে। তাঁর ঠিক পরেই রয়েছে পবিত্র করের নাম। মূলত আদি বিজেপি বনাম নব্য বিজেপি-র দ্বন্দ্বেই প্রলয় পালের এই পদক্ষেপ বলে জানা যাচ্ছে।