গতকালই বিষ্ণুপুর বিজেপির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়েছিলেন সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। তারপর থেকেই জল্পনা শুরু হয়, তিনি কি তাহলে বিজেপি ছেড়ে ফের পুরোনো দল তৃণমূলেই ফিরবেন। এই জল্পনা আজ ফের উস্কে দিল সৌমিত্র খাঁয়ের আজকের একটি পদক্ষেপ। আজই তিনি বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের সঙ্গে দেখা করেন। সারেন রাজনৈতিক বৈঠকও। দেখেশুনে অনেকেই বলতে শুরু করেছেন, 'খুব সম্ভবত দলবদল নিয়েই মুকুলের সঙ্গে শলা-পরামর্শ করে এলেন সৌমিত্র।'
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একথা বলার নেপথ্যে রয়েছে সৌমিত্রেরই মন্তব্য। আজ মুকুল রায়ের সল্টলেকের বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে সৌমিত্র বলেন, 'এখানে আসার আমার দুটো কারণ। প্রথম কারণ হল মুকুলদার স্ত্রীর শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেওয়া। অন্য কারণ হল রাজনৈতিক আলোচনা।' তবে তিনি কী নিয়ে আলোচনা করেছেন, সে প্রসঙ্গে খোলসা করে কিছু বলেননি। এতেই জল্পনা আরও বেড়েছে। রাজনৈতিক মহলের অনেকের প্রশ্ন, 'তাহলে কি দুজনেই বিজেপি ছাড়তে চলেছেন? সেই আলোচনায় হয়েছে আজকের বৈঠকে?' এই নিয়ে সৌমিত্র খাঁকে একাধিকবার ফোন করলেও তার তরফ থেকে কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন : স্বজনপোষণ নিয়ে 'আঙ্কলজি' রাজ্যপালকে বিঁধলেন মহুয়া! দিলেন তালিকা
প্রসঙ্গত, বিধানসভা ভোটে ভরাডুবির পর মুকুল রায়ের সঙ্গে বিজেপির দূরত্ব বেড়েছে বলেই দলের অন্দরের খবর। বিশেষ করে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে মুকুলের সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে বলেও দাবি করছে কেউ কেউ। মুকুল রায়ের স্ত্রী এখন হাসপাতালে ভর্তি। তাঁকে দেখতে গিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর হাসপাতালে যান বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও। তবে দিলীপের হাসপাতাল যাওয়া খুব একটা ভালো চেখে দেখেননি মুকুল। তিনি তো বলেই দেন, 'উনি আমাকে বা অন্য কাউকে বলে তো হাসপাতালে যাননি। কাকে দেখতে গিয়েছিলেন তা-ও জানি না।'
এর ঠিক কয়েকদিন আগে আবার মুকুলপুত্র শুভ্রাংশু ফেসবুকে বিজেপির সমালোচনা করেন। তখনও অনেকে বলতে শুরু করেন, তৃণমূলে ফেরার প্রক্রিয়া শুরু করে দিলেন বীজপুরের প্রাক্তন বিধায়ক।
একুশের ভোটের প্রচারের সময় একটি সভা থেকে মুকুলের প্রশংসা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে। তারপর থেকেই কানাঘুষো শুরু হয় মুকুলের বিজেপি-তে থাকা নিয়ে। যদিও বিজেপির টিকিটে ভোটে জেতার পর মুকুল জানান, তিনি বিজেপিরই সৈনিক। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, মুকুল মুখে যাই বলুন না কেন, আজ তাঁর সঙ্গে সৌমিত্রের বৈঠক বেশ ইঙ্গিতপূর্ণ।