করোনার (Corona) মাঝেই রাজ্যে অজানা জ্বরে প্রায় রোজই শিশুমৃত্যুর অভিযোগ উঠছে। তাছাড়া কোনও কোনও জায়গা থেকে শিশুদেরও করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। এরই মধ্যে আবার দোরগোড়ায় উৎসবের মরশুম (Festiv Season)। এই পরিস্থিতিতে শিশুদের স্বাস্থ্য নিয়ে রীতিমতো উদ্বিগ্ন বাবা-মায়েরা। ভাইরাস ও অন্যান্য রোগজীবাণু থেকে কীভাবে সন্তানদের রক্ষা করবেন তা নিয়ে ক্রমেই দুশ্চিন্তা বাড়ছে অভিভাবকদের। যদিও শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা অবশ্য এক্ষেত্রে বাবা-মায়েদের বেশি করে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন।
এই প্রসঙ্গে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ জয়দেব রায় জানাচ্ছেন, 'এগুলো অজানা জ্বর নয়, এখনও পর্যন্ত কারণ জানা যাচ্ছে না বলেই আজানা বলা হচ্ছ। তবে এগুলির মধ্যে বেশিরভাগই ভাইরাল ফিভার। আবহাওয়ার পরিবর্তনের ফলে প্রতিবছরের মতো এবছরেও হয়েছে। তবে এবার সেই মাত্রাটা বেশি। এর মধ্যে বেশি পাওয়া যাচ্ছে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস ও আরএস ভাইরাস। তাছাড়া কোথাও কোথাও ডেঙ্গি (Dengue), ম্যালেরিয়া (Malaria), স্ক্রাব টাইফাস (Scrub Typhus), জাপানি এনসেফেলাইটিস ও টাইফয়েডের মতো রোগও হচ্ছে। তাই যতক্ষণ না কারণ জানা যাচ্ছে ততক্ষণ অজানা জ্বর বলা হচ্ছে।' এছাড়া এই সমস্ত টেস্টের সময় করোনার পরীক্ষাও করা হচ্ছে। আর কয়েকজনের ক্ষেত্রে সেই পরীক্ষার রিপোর্ট পজেটিভ আসছে বলেও জানান জয়দেববাবু।
বড়দের বিশেষ বার্তা
এর থেকে রক্ষা পেতে বাড়ির বড়দের বেশি করে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন জয়দেব রায়। তিনি বলেন, 'বাড়িতে থেকেও অনেক বাচ্চা করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। কারণ বড়রা বাইরে গিয়েছেন, আর তঁদের থেকেই ছোটদের মধ্যে সংক্রমিত হয়েছে।' তাই তাঁর মতে এর থেকে বাঁচার উপায় হল, অবশ্যই মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা এবং হাইজিন বা পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা। এতে করোনা ও ভাইরাল ফিভার, দুটিকেই প্রতিরোধ করা যাবে বলে জানাচ্ছেন তিনি। একইসঙ্গে বাড়ির বড়দের উদ্দেশ্যে তাঁর আরও পরামর্শ, জ্বর হলে তাঁরা যেন কোনওভাবেই ছোটদের কাছে না যান। এছাড়া সামনেই যেহেতু উৎসবের মরশুম তাই, ছোট-বড় সবাইকেই ভিড় এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শও দিচ্ছেন তিনি। একইসঙ্গে টাইফয়েডের (Typhoid) মতো জলবাহিত রোগ থেকে বাঁচার জন্য যত্রতত্র জল না কথাও বলেন জয়দববাবু।
ভ্যাকসিন নেওয়ার পরামর্শ
অন্যদিকে ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে এই শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ, 'ইনফ্লুয়েঞ্জা, টাইফয়েড, জাপানি এনসেফেলাইটিসের (Japanese Encephalitis) মতো যে সমস্ত রোগের টিকা বাজারে রয়েছে, সেগুলি অবশ্যই নিয়ে নেওয়া উচিত।' একইসঙ্গে শিশুদের করোনার টিকা চালু হলে সেটিও নিয়ে নেওয়ার পক্ষেই মত দিলেন তিনি।
আরও পড়ুন - 'আমি ঝরা মুকুল নই, TMC-তে যাব না', বলছেন অশোক